40 C
আবহাওয়া
৪:১৪ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ২৮, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » খাদ্য মজুতের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড

খাদ্য মজুতের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড

মজুুদ

বিএনএ ডেস্ক: সরকারের বেঁধে দেয়া পরিমাণের চেয়ে বেশি খাদ্যশস্য মজুত করে সুবিধাজনক সময়ে বেশি দামে বিক্রি করেন ব্যবসায়ীরা। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে চালের দাম বাড়ানোর অভিযোগও দীর্ঘদিনের। এসব বন্ধে নতুন আইন করতে যাচ্ছে সরকার। এই আইন পাস হলে সরকারনির্ধারিত পরিমাণের থেকে বেশি চাল, ধান, গম, আটা, ভুট্টা মজুত করলে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হবে।

এ ছাড়া কোন খাদ্যশস্য কোন জাত থেকে উৎপাদন করা হয়েছে, বস্তার গায়ে তা লিখতে হবে। ফলে মিনিকেট নামে বাস্তবে ধানের কোনো জাত না থাকায় চালের বস্তায় এই নামটি আর দেখা যাবে না। খাদ্যদ্রব্যসংক্রান্ত অপরাধগুলোকে চিহ্নিত করে সেসবের বিচারে কঠোর সাজার প্রস্তাব করা হয়েছে। সাধারণ আদালতের বাইরেও এসব অপরাধের বিচার করতে খাদ্যদ্রব্য বিশেষ আদালত গঠন করা হবে। জামিনযোগ্য অপরাধগুলোর বিচার করা হবে ভ্রাম্যমাণ আদালতে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের মন্ত্রিসভা কক্ষে মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনুমোদনের জন্য ‘খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন’ নীতিগত অনুমোদনের জন্য ওঠার কথা রয়েছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

খসড়ায় বলা হয়েছে, খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ, বিপণনসহ খাদ্যদ্রব্য নিয়ে অপরাধমূলক কাজ প্রতিরোধ করতে নতুন এই আইন করতে যাচ্ছে সরকার।

কোনো ব্যক্তি সরকারনির্ধারিত পরিমাণের থেকে বেশি মজুত করলে বা মজুতসংক্রান্ত সরকারের কোনো নির্দেশনা অমান্য করলে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড দেয়া হবে। তবে এই অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি প্রমাণ করতে পারেন তিনি আর্থিক বা অন্য কোনো প্রকার লাভের উদ্দেশ্য ছাড়াই মজুত করেছিলেন, তবে তিনি তিন মাস কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। মজুতসংক্রান্ত অপরাধের মামলা জামিন অযোগ্য হবে।

কোনো ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন-সম্পর্কিত কোনো মিথ্যা তথ্য বা বিবৃতি তৈরি, ‍মুদ্রণ, প্রকাশ বা বিতরণ করলে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা ১৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেয়া হবে। এটিও জামিন অযোগ্য অপরাধ।

সরকার ২০১১ সালে গেজেটের মাধ্যমে চাল, গম ও গমজাতীয় দ্রব্য ছাড়াও ভোজ্যতেল (সয়াবিন ও পাম অয়েল), চিনি এবং ডালকে খাদ্যসামগ্রী হিসেবে ঘোষণা করে এবং মজুতের অনুমোদিত পরিমাণ নির্ধারণ করে দেয়। গেজেট অনুযায়ী, লাইসেন্স ছাড়া কোনো ব্যবসায়ী এক টনের বেশি খাদ্যশস্য বা খাদ্যসামগ্রী মজুত রাখতে পারবেন না।

খসড়ায় বলা হয়েছে, কোনো অনুমোদিত জাতের খাদ্যশস্য থেকে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যকে উক্তরূপ জাতের উপজাত পণ্য হিসেবে উল্লেখ না করে ভিন্ন বা কাল্পনিক নামে বিপণন করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ জন্য দুই বছরের কারাদণ্ড, ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেয়া হবে। নতুন আইন কার্যকর হলে চাল যে ধান থেকে উৎপন্ন করা হবে, বস্তার গায়ে ধানের সেই জাতের নাম লিখতে হবে।

খাদ্যদ্রব্যের মধ্য থেকে কোনো স্বাভাবিক উপাদানকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে অপসারণ বা পরিবর্তন করে উৎপাদন বা বিপণন করলে; খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কৃত্রিম উৎপাদন মিশ্রণ করে উৎপাদন বা বিপণন করলে এবং খাদ্য অধিদপ্তর ইস্যুকৃত খাদ্যশস্য ব্যবসার লাইসেন্স ছাড়া বা মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্স দিয়ে কোনো ব্যবসা পরিচালনা বা লাইসেন্সে উল্লিখিত পরিমাণের বেশি খাদ্যশস্য বিপণন করলে দুই বছরের কারাদণ্ড, ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেয়া হবে।

এ ছাড়া পুরোনো খাদ্যদ্রব্য পলিশিং বা অন্য কোনো খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে মেশালে, সরকার খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহকালে সরকারি গুদামে রাখা খাদ্যদ্রব্য বৈধ বা অবৈধভাবে সংগ্রহ করলে, দেশে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যের পরিবর্তে আমদানীকৃত খাদ্যদ্রব্য মজুত করলে; সরকারি গুদামে পুরোনো বা বিতরণকৃত সিল বা বিতরণ করা হয়েছে এমন চিহ্নযুক্ত খাদ্যদ্রব্যভর্তি বস্তা বা ব্যাগ; আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে খাদ্যদ্রব্যের পরিমাণগত বা গুণগত পরিবর্তন করে বা অন্য কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে সরকারি গুদামে সরবরাহ করলে দুই বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেয়া হবে।

খাদ্য পরিদর্শক যেকোনো সময় কোনো গুদাম, মিল, কারখানা বা অন্য কোনো স্থানে প্রবেশ ও পরিদর্শন করতে পারবেন জানিয়ে খসড়ায় বলা হয়েছে, এই আইনের অধীনে কোনো অপরাধ হয়েছে বা অপরাধ হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে খাদ্য পরিদর্শক সংশ্লিষ্ট, গুদাম, মিল, নৌযান, যানবাহন, কোস্টার, লাইটার, ঘর, কারখানা বা মজুত করার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত যেকোনো স্থান সিলগালা করে অপরাধসংশ্লিষ্ট খাদ্যদ্রব্য ও অপরাধ সংঘটনে ব্যবহৃত সরঞ্জাম জব্দ করতে পারবেন।

বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ