31 C
আবহাওয়া
১১:১৩ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ২৭, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » তাহের হত্যা মামলার দুই আসামির ফাঁসি চলতি মাসেই

তাহের হত্যা মামলার দুই আসামির ফাঁসি চলতি মাসেই

তাহের

আদালত প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলার দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর হতে পারে চলতি জুলাই মাসেই। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করলে তা নাকচ করে দেওয়া হয়। ফলে ফাঁসি কার্যকরে আর কোনো বাধা নেই।

এরই মধ্যে সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। জেল কোড অনুযায়ী চিঠি হাতে পাওয়ার ২১ থেকে ২৮ দিনের দিনের মধ্যে যেকোনো দিন ফাঁসি কার্যকর করা হবে। রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষার আবেদন নাকচের চিঠি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে পৌঁছানোর পর এর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

বর্তমানে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে বন্দি আছেন রাবির ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মো. মহিউদ্দিন এবং নিহত ড. এস তাহেরের বাসার তত্ত্বাবধায়ক জাহাঙ্গীর আলম। ২০০৮ সালে নিম্ন আদালতে মামলার রায় ঘোষণার পর থেকেই রাবি শিক্ষক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় ফাঁসির দু’আসামি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।

রায় ও উচ্চাদলত থেকে সর্বশেষ আদেশের পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এ দু’আসামি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছিলেন। ঈদের আগেই রাষ্ট্রপতি এই প্রাণ ভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দেন। তার কাগজপত্র গত বুধবার (৫ জুলাই) রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে পৌঁছায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এই দুই আসামির ফাঁসি কার্যকরে আর কোনো আইনি বাধা নেই। রাজশাহী কারা কর্তৃপক্ষ এই দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর করতে পারবেন।

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের উপ-মহাপরিদশক (ডিআইজি প্রিজন) কামাল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ায় ফাঁসি কার্যকরে আর কোনো আইনি বাধা নেই। এখন জেল কোড অনুযায়ী ফাঁসি কার্যকরের ধাপগুলো এক এক করে বাস্তবায়ন করা হবে। জেল কোডে আদেশপ্রাপ্তির ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিধান রয়েছে। এর আগে দণ্ডপ্রাপ্তদের শেষ স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও তাদের সাথে পরিবার এবং স্বজনদের শেষ দেখা করার সুযোগ দেয়ারও বিধান আছে।’

গত ২ মার্চ ড. এস তাহের হত্যা মামলায় এই দু’জনের ফাঁসি এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত। নিম্ন আদালতে দু’জনের মৃত্যুদণ্ডের যে রায় এসেছিল তাই বহাল থাকে আপিল বিভাগে, খারিজ হয় রিভিউ আবেদনও। এজন্য প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা ছিল না তাদের কাছে। তবে এরপরও রাবি ড. এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় দণ্ডিত এই দু’জনের ফাঁসি কার্যকর স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে গত ৭ মে ফের রিট আবেদন করেন তাদের স্বজনরা। কিন্তু উত্থাপিত হয়নি মর্মে পরবর্তীতে সেই আবেদনও খারিজ করে দেন বিচারপতি মো: জাফর আহমেদ ও মো: বশির উল্ল্যার হাইকোর্ট বেঞ্চ। মূলত এর পরই কারাবিধি অনুযায়ী ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি রাষ্ট্রপতির কাছে এই ঘটনায় দোষ স্বীকার করে নিজেদের প্রাণ ভিক্ষার আবেদন জানান।

২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাবির কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয় অধ্যাপক তাহেরের লাশ। ৩ ফেব্রুয়ারি নিহতের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে নগরীর মতিহার থানায় হত্যা মামলা করেন।

২০০৭ সালের ১৭ মার্চ বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাবি শাখার তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। এ হত্যা মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক চারজনকে ফাঁসির আদেশ ও দু’জনকে খালাস দেন।

দণ্ডিতরা হলেন মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, অধ্যাপক তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলম, তার ভাই নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের স্ত্রীর ভাই (সমন্ধি) আব্দুস সালাম। তবে বিচারে খালাস পান বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাবি শাখার তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী ও আজিমুদ্দিন মুন্সী।

পরবর্তীতে দণ্ডপ্রাপ্তরা উচ্চ আদালতে আপিল করেন। আপিল বিভাগ মিয়া মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমের রায় বহাল রাখলেও আসামি নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের স্ত্রী ভাই (সমন্ধি) আব্দুস সালামের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করেন। তবে আপিলে সাজা কমে যাবজ্জীবন হওয়া দুই আসামির দণ্ড বৃদ্ধি চেয়ে আপিল করেন রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি শেষে ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের রায়ই বহাল রাখেন।

বিএনএনিউজ২৪/ সহিদুল/ এমএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ