26 C
আবহাওয়া
১২:২০ পূর্বাহ্ণ - এপ্রিল ১৭, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » সুপারফুড ‘সাউ কিনোয়া-১’

সুপারফুড ‘সাউ কিনোয়া-১’


বিএনএ, ডেস্ক : প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজে ভরপুর সুপারফুড সাউ কিনোয়া-১ জাত উদ্ভাবন করেছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাস। কিনোয়া দানা পুষ্টি সমৃদ্ধতার কারণে অন্যতম সুপার ফুড হিসেবে স্বীকৃত। কিনোয়া খরাপ্রবণ ও লবণাক্ত অঞ্চলে ফলানো যায়। এতে রয়েছে সকল প্রকার প্রয়োজনীয় এমাইনো এসিড।

জানা যায়, ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক খাদ্য ও কৃষি সংস্থা ২০১৩ সালকে আন্তর্জাতিক কিনোয়া বছর হিসেবে ঘোষণা করেছে। এরপর ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাস ২০১৬ সাল থেকে গবেষণা শুরু করেন। এ পর্যন্ত ৬ জন শিক্ষার্থী স্নাতকোত্তরে কিনোয়া নিয়ে থিসিস করেছেন। লালমনিরহাট, কুয়াকাটা, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এর মাঠ পরীক্ষণ চলছে। কিনোয়া একটি সিউডোসিরিয়াল ফসল। এর বৈজ্ঞানিক নাম ঈযরহড়ঢ়ড়ফরঁস য়ঁরহড়ধ। জাতীয় বীজ বোর্ড (এনএসবি) অনিয়ন্ত্রিত ফসলের জাত নিবন্ধনের আওতায় উদ্ভাবিত এ জাতটি নিবন্ধন দিয়েছে। সাউ কিনোয়া-১ (ঝঅট-ছঁরহড়ধ-১) নামে নতুন এ জাতটি নিবন্ধিত হয়। জাতটির নিবন্ধন নম্বর ০৫(৪৬)-০১/২০২০। বর্তমানে কিনোয়ার বাজারমূল্য প্রতি কেজি ১৬০০ টাকা। ইনকা সভ্যতায় গম, যবের মতো এটি ছিল স্ট্যাপল ফুড। পুষ্টি সমৃদ্ধতার কারণে একে বলা হতো ‘মাদার অব অল গ্রেনস’। একে পবিত্র মনে করা হতো তাই প্রতি বছর রাজা নিজে সোনার তৈরি সরঞ্জাম দিয়ে বীজ রোপণ করত। কালের আবর্তনে ফসলটি হারিয়ে যেতে থাকে। তবে বর্তমানে উত্তর আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, সুইডেন, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, চীন, থাইল্যান্ড, ভারতসহ ১০০টিরও অধিক দেশে কিনোয়া চাষাবাদ হচ্ছে।
কিনোয়ার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে অধ্যাপক ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাস বলেন, মানুষ এখন স্বাস্থ্য সচেতন হচ্ছে। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ খাবার। এতে প্রোটিনের পরিমাণ ১৪-১৮%। এতে রয়েছে সবগুলো এসেনশিয়াল এমাইনো এসিড। যা খুব কম ফসলে পাওয়া যায়। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ফসল কারণ এতে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম। তাছাড়া এতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, ভিটামিন, মিনারেলস পাওয়া যায়। মিনারেলসের মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিংক, কপার, ফসফরাস, পটাশিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ। কিনোয়ার সালাদ থেকে শুরু করে বিরিয়ানি, রুটি, পিজ্জাও তৈরি করে খাওয়া যায়।
ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাস জানান, খরা ও লবণাক্ত অঞ্চলসহ সারা দেশে রবি মৌসুমে এ ফসলটি চাষ করা সম্ভব। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ দেশসমূহের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। সেক্ষেত্রে খরা ও লবণাক্ততা সহনশীল ফসল হিসেবে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠতে পারে নতুন ফসল সাউ কিনোয়া-১। ফসলের চাষ সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি অযত্নে ফলা ফসল। এ জন্য বাড়তি যত্নের প্রয়োজন পড়ে না, তাই উৎপাদন খরচও তেমন একটা নেই। ভালো ফলনের জন্য ম্যানেজমেন্ট করা যেতে পারে। ফসলটির অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে তিনি বলেন, এখন আমাদের বাজারে যে সকল কিনোয়া পাওয়া যায়, সেগুলো ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলো থেকে আনা হয়। কিনোয়ার বাজারমূল্য প্রতি কেজি ১৬০০ টাকা। যদি দেশে চাষ করা যায় এর বাজার মূল্য অর্ধেকে নেমে আসবে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, এর উৎপাদন আরো বাড়ানোর জন্য পরীক্ষা অব্যাহত রয়েছে। তাছাড়া কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। যদিও সুপারশপ অথবা কোনো কোম্পানি আমাদের সঙ্গে কাজ করে তাহলে বাংলাদেশ হবে কিনোয়ার নতুন সম্ভাবনা।

Loading


শিরোনাম বিএনএ