অযোগ্য নেতৃত্ব, নীতিহীন নেতা ও কাপুরুষ রাজনীতিবিদদের সাথে কোনোদিন একসাথে হয়ে দেশের কোনো কাজে নামতে নেই। তাতে দেশসেবার চেয়ে দেশের ও জনগণের সর্বনাশই বেশি হয়।
আজ প্রকাশিত হলো পর্ব : ৩৩০
এই দিন থেকেই বাঙালিদের দুঃখের দিন শুরু হল। অযোগ্য নেতৃত্ব, নীতিহীন নেতা ও কাপুরুষ রাজনীতিবিদদের সাথে কোনোদিন একসাথে হয়ে দেশের কোনো কাজে নামতে নেই। তাতে দেশসেবার চেয়ে দেশের ও জনগণের সর্বনাশই বেশি হয়। ঠিক মনে নাই, তবে দুই-তিন দিন পরে আমাকে আবার নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করা হল। নিরাপত্তা আইনে বন্দিদের বিনা বিচারে কারাগারে আটক থাকতে হয়।
সরকার ভাবল, যে মামলায় আমাকে গ্রেফতার করেছে, তাতে জামিন হলেও হয়ে যেতে পারে; তাই নিরাপত্তা আইনে তাদের পক্ষে সুবিধা হবে আমাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আটক রাখা। কি মামলায় আসামি করেছে আমার তা মনে নাই। আমি নাকি কাউকে হত্যা করতে চেষ্টা করেছি বা লুটপাট করতে উসকানি দিয়েছি। খবর নিয়ে জানলাম, জেলগেটে একটা গোলমাল হয়েছিল-আমি মন্ত্রী হওয়ার সামান্য কিছুদিন পূর্বে, সেই ঘটনার সাথে আমাকে জড়িয়ে এই মামলা দিয়েছে।
একদিন আমি আওয়ামী লীগ অফিসে ইফতার করছিলাম। ঢাকায় রোজার সময় জেলের বাইরে থাকলে আমি আওয়ামী লীগ অফিসেই কর্মীদের নিয়ে ইফতার করে থাকতাম। হঠাৎ টেলিফোন পেলাম, চকবাজারে জেল সিপাহিদের সাথে জনসাধারণের সামান্য কথা কাটাকাটি হওয়ায় জেল সিপাহিরা গুলি করেছে। একজন লোক মারা গিয়েছে এবং অনেকে জখম হয়েছে। ঢাকা কারাগার চকবাজারের পাশেই। হক সাহেব মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন, আমি তখনও মন্ত্রী হই নাই। আমি আতাউর রহমান সাহেবকে টেলিফোন করলাম। তাঁর বাসা চকবাজারের কাছে। তিনিও খবর পেয়েছেন, আমাকে তাঁর বাসায় যেতে বললেন। দরকার হলে একসাথে চকবাজার ও জেলখানায় যাওয়া যাবে।
পরিকল্পনা : ইয়াসীন হীরা
গ্রন্থনা : সৈয়দ গোলাম নবী
সম্পাদনায় : মনির ফয়সাল
সূত্র: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী, প্রকাশনা- দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড, পৃষ্টা নম্বর:২৭৩-২৭৫।
আগের পর্ব পড়ুন : বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পর্ব : ৩২৯