২৯ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর কালশী ফ্লাইওভারের নিচে আসলাম সেরনিয়াবাতের গাড়ি থামিয়ে অপহরণ করা হয়েছে। এরপর একটি গাড়িতে উঠিয়ে আসলামকে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাক পরা ও সিভিল পোশাকে ছিলেন কয়েকজন ব্যক্তি।
শুক্রবার আসলাম সেরনিয়াবাত অপহরণের ঘটনায় রাজধানীর পল্লবী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন তার ভায়রা লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক হোসেন ভুঁইয়া। তিনি অপহৃত আসলাম সেরনিয়াবাতের ভায়রা ভাই।
থানায় দায়ের করা অভিযোগে তারেক হোসেন ভুঁইয়া উল্লেখ করেছেন, ২৯ আগস্ট রাত সাড়ে নয়টার দিকে আসলাম সেরনিয়াবাত তার বারিধারার অফিস শেষ করে একজন আইনজীবীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য মিরপুরে যান। আইনজীবীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা করেন আসলাম।
বাসায় ফেরার পথে রাত সাড়ে ১১টার দিকে কালশী ফ্লাইওভারের নিচে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাক পরা কয়েকজন ব্যক্তি আসলামের গাড়ি থামার জন্য ইশারা দেয়। এ সময় গাড়িচালক গাড়ি থামালে গাড়িতে আসলাম আছে কিনা জানতে চান তারা এবং আসলামকে গাড়ি থেকে নামতে বলেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, এ সময় আসলাম গাড়ি থেকে নামলে তাদের সঙ্গে থাকা একজন সিভিল পোশাকে ব্যক্তি আসলামের হাতে থাকা দুইটি মোবাইল ফোন নিয়ে নেয়। এরপর আসলামকে একটি গাড়িতে উঠিয়ে দ্রুত নিয়ে যায় তারা।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক হোসেন ভুঁইয়া বলেন, থানা পুলিশ ও র্যাব-৪ কার্যালয়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আমরা দ্রুত আসলাম সেরনিয়াবাতকে সুস্থভাবে ফিরে পেতে চাই।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আসলাম সেরনিয়াবাত এফবিসিসিআই’র সাবেক পরিচালক। তিনি একজন সিআইপি। আসলাম সেরনিয়াবাত ঢাকার গাড়ী আমদানী ও বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ‘কার সিলেকশনের’ স্বত্তাধিকারী। তার বাড়ী পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নের ধুলিয়ারী গ্রামে।
প্রশ্ন উঠেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন করে কারা গুম ও অপহরণের মতো ঘটনায় যুক্ত হচ্ছেন। আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ সনদে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। আর ওই দিনই গুমের শিকার হলেন ব্যবসায়ি আসলাম সেরনিয়াবাত। গত ৩ দিনও তার খোঁজ নেই। আয়না ঘরেই কী তার ঠাঁই হয়েছে? এমন প্রশ্ন আসলাম সেরনিয়াবাতের স্বজনদের।
প্রসঙ্গত, আসলাম সেরনিয়াবাত অপহরণের আগের দিন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি তাজউদ্দিন আহমেদের সন্তান সোহেল তাজকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়। তিনি বিষয়টি আঁচ করতে পেরে সেনা নিবাসে প্রবেশ করায় এই যাত্রায় বেঁচে যান। পরদিন সচিবালয়ে গিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে তার জীবনের নিরাপত্তা দাবি করেন।
বিএনএনিউজ, শামীমা চৌধুরী শাম্মী/এইচমুন্নী