বিএনএ ডেস্ক: নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে ১৩ দফা দাবি নিয়ে রাজধানী শাহবাগ থেকে শুক্রবার (৩০ আগস্ট) রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে সংসদ ভবন অভিমুখে ‘শেকল ভাঙার পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করেছেন একদল নারী। সংসদ ভবনে পৌঁছে তারা সেখানে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন।
এর আগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ফেস্টুন এবং মশাল জ্বালিয়ে পদযাত্রাটি শুরু হয়। এরপর সায়েন্সল্যাব মোড় ঘুরে তারা সংসদ ভবনে গমন করেন। ২০২০ সালের ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন থেকে ‘শেকল ভাঙার পদযাত্রা’টি এবারের চতুর্থতম বার পালিত হয়েছে।
তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে, সারাদেশে ধর্ষণ-যৌন সহিংসতায় যুক্তদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে দৃষ্টান্তমূলক ও ন্যায্য শাস্তি নিশ্চিত করা; শিল্পপতি-ধনকুবেরদের নারী নিপীড়নমূলক অপরাধ বিচারের আওতায় এনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাস্তি নিশ্চিত করা এবং অন্যায্যভাবে খারিজ হয়ে যাওয়া মামলা পুনঃতদন্ত করা।
*ধর্ষণ মামলার ক্ষেত্রে সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২ (সংশোধিত) এর ১৪৬ (৩) ধারা পুনঃসংস্কার করার মাধ্যমে আইনের দিকসহ জাতি-ধর্ম-বর্ণ-বয়স-লৈঙ্গিক পরিচয় নির্বিশেষে যৌন সহিংসতার ক্ষেত্রে যেকোনোভাবেই ‘ভিক্টিম ব্লেমিং’ (দোষারোপ করা/নিন্দা জানানো) বন্ধ করা; আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের সঙ্গে মিল রেখে আইনি ও সামাজিকভাবে ধর্ষণের সংজ্ঞায়ন করা। মামলার ডিএনএ আইনকে সাক্ষ্য প্রমাণের ক্ষেত্রে কার্যকর করা।
*শিশু ও নারীদের ওপর সকল প্রকার যৌন এবং সামাজিক নিপীড়ন বন্ধ করা; হাইকোর্টের নির্দেশানুযায়ী সকল প্রতিষ্ঠানে যৌন নির্যাতনবিরোধী সেল কার্যকর করা এবং সিডো সনদে বাংলাদেশের স্বাক্ষর ও বাস্তবায়ন করা।
*গ্রামীণ সালিশ/পঞ্চায়েতের মাধ্যমে ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা; প্রাথমিক লেভেলে পাঠ্যপুস্তকে যৌন শিক্ষা (গুড টাচ-ব্যাড টাচের শিক্ষা, সম্মতি, প্রাইভেট পার্টস সম্পর্কে অবহিত করা) যোগ করা।
*শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হলে ৯০ দিনের মাঝে দ্রুততম ট্রাইব্যুনালে অভিযোগের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা; নারী নিপীড়নের শিকার হলে অভিযোগ জানাতে গেলে থানা ও আদালতে পুলিশি ও অন্যান্য হয়রানি বন্ধ করা; গণপরিবহনে নারীদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা; নারী অবমাননাকর বক্তব্য প্রচার বন্ধ করার ব্যবস্থা করা।
কর্মসূচির আয়োজক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রাপ্তি তাপসী বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে নারীরা নিরাপদবোধ করেন না। নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সকল ধর্ষণের বিচার করার মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে প্রমাণ করতে হবে তারা জনবান্ধব নারীবান্ধব সরকার। না হলে আমরা তাদের ওপর বিশ্বাস রাখতে পারব না।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ