বিএনএ, ঢাকা: ছাগলকান্ডে সমালোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মতিউর রহমানকে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অবশেষে তাঁকে অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। বুধবার(৩১ জুলাই) অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
আইআরডির উপসচিব মকিমা বেগম স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছে, চাকরিকাল ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় তাঁর আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ধারা ৩৩ (১) ও ধারা ৫১ অনুসারে আগামী ২৯ আগস্ট থেকে সরকারি চাকরি থেকে অবসর প্রদান করা হলো। তবে অবসরজনিত আর্থিক সুবিধা (অবসর উত্তর ছুটি, ল্যাম্প গ্র্যান্ট, পেনশন) পাবেন না মতিউর।
আইআরডির একটি সূত্রে জানা গেছে, দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা চলছে। ছাগলকান্ডের পর মতিউর রহমানের অবৈধ সম্পদ অর্জনের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর জুলাই মাস থেকেই তিনি আত্মগোপনে চলে যান। আত্মগোপনে (পলাতক) থাকা অবস্থায় তিনি অবসরের আবেদন করেন।
উল্লেখ্য,কোরবানির জন্য সাদিক অ্যাগ্রো নামের একটি খামার থেকে মতিউর রহমানের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর ছেলে মুশফিকুর রহমান ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কেনার পাশাপাশি ঢাকার বিভিন্ন খামার থেকে ৭০ লাখ টাকার গরু কিনেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। এনবিআরের এই শীর্ষ কর্মকর্তা মতিউর রহমান কোরবানির ঈদের আগে আলোচনায় আসেন তাঁর ছেলের কারণে। এরপর ওই ছেলের বাবার পরিচয় ও অর্থের উৎস নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য প্রকাশিত হয়। এ নিয়ে মানুষের ক্ষোভ, কৌতূহল তৈরি হলে মতিউর রহমান প্রথমে মুশফিককে ছেলে হিসেবে অস্বীকার করলেও পরবর্তীকালে নিশ্চিত হওয়া যায়, মুশফিক তাঁরই ছেলে।
এর আগে ২৩ জুন মতিউর রহমানকে এনবিআর থেকে সরিয়ে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে (এনবিআর) সংযুক্ত করা হয়। এনবিআর সদস্য পদে থাকলেও মতিউর রহমান কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এনবিআর অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) অধীন একটি প্রতিষ্ঠান।
ছাগল কাণ্ডের পর থেকে মতিউরের বিপুল পরিমাণ সম্পদের কথা গণমাধ্যমসহ সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত হতে থাকে। মতিউর রহমানের ছেলের দামি ব্র্যান্ডের ঘড়ি, গাড়ি, আলিশান জীবনযাপন এবং মতিউর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে রিসোর্ট, শুটিং স্পট, বাংলোবাড়ি, জমিসহ নামে-বেনামে সম্পত্তি থাকা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
২০০৭-০৮ সালের দিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে যুগ্ম কমিশনারের দায়িত্ব পালনকালে ধীরে ধীরে ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠেন মতিউর। প্রভাবশালীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আমলেও তিনি প্রভাবশালী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
বিএনএ নিউজ/রেহানা/এইচ.এম/ হাসনা