31 C
আবহাওয়া
১২:১৩ অপরাহ্ণ - সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » সিলেটের ৭ উপজেলার মানুষ পানিবন্দি

সিলেটের ৭ উপজেলার মানুষ পানিবন্দি

বন্যা

বিএনএ ডেস্ক: টানা কয়েক দিনের বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায়। বিশেষ করে সিলেটের সীমান্তবর্তী জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, জকিগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জের অনেক এলাকা এখন বন্যাকবলিত। বন্যায় এসব উপজেলার অধিকাংশ গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাট উপজেলা শহরেও প্রবেশ করেছে পানি। সুরমা নদীর বেশ কিছু এলাকায় পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড।

কুশিয়ারা নদীর ১০ স্থানে বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে বিয়ানীবাজারের গ্রামের পর গ্রাম। এ ছাড়া সারি ও বড়গাঁও নদী উপচে পানি ঢুকতে শুরু করেছে লোকালয়ে। এরই মধ্যে বন্যায় সিলেটের অন্তত ছয় উপজেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৫ লাখ মানুষ। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার (৩০ মে) পর্যন্ত দুর্গতদের জন্য খোলা হয়েছে ৪৭০টি আশ্রয়কেন্দ্র।

বৃহস্পতিবার সকালে পানিবন্দি এলাকাগুলো পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজা আক্তার সিমুল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালিক রুমাইয়া, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাতেমা তুজ জোহরা সানিয়া, ওসি তাজুল ইসলাম।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট উপজেলা পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৬৬ সেন্টিমিটার ওপরে এবং কুশিয়ারার পানি জকিগঞ্জের অমলসীদ পয়েন্টে ২০২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এ ছাড়া জৈন্তাপুরে সারি নদীর পানি বিপৎসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং গোয়াইনঘাটে সারিগোয়াইন নদীর পানি ৬৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

বুধবার রাতে গোয়াইনঘাটের জাফলংয়ে ৩৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। একই সময়ে জৈন্তাপুরের লালাখালে রেকর্ড হয়েছে ১৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত। ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতে ৬৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টিপাত এবং ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলেই সিলেটের নদনদীর পানি দ্রুত বেড়ে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা।

জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী বলেন, উঁচু এলাকা ছাড়া সব প্লাবিত হয়েছে। কোথাও কোথাও ঘরের চাল পর্যন্ত পানি উঠেছে। বুধবার রাতে প্রবল স্রোতে উদ্ধারাভিযান ভালোভাবে পরিচালনা করা না গেলেও বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই পুরোদমে অভিযান চলে।

জেলা প্রশাসন জানায়, মোট খোলা ৪৭০টি আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে গোয়াইনঘাটে ৫৬, জৈন্তাপুরে ৪৮, কানাইঘাটে ১৮, কোম্পানীগঞ্জে ৩৫ ও জকিগঞ্জে ৫৮টি। কিছু আশ্রয়কেন্দ্রে এরই মধ্যে লোকজন উঠেছে। ত্রাণ পর্যাপ্ত রয়েছে। বন্যার কারণে ইতোমধ্যে ১ হাজার ৬৬০ হেক্টর আবাদি জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বন্যাদুর্গত পরিবারের সংখ্যা ৪২ হাজার ৯০০টি এবং মানুষের সংখ্যা ২ লাখ ৪৫ হাজার ৯৫০। যদিও বন্যাকবলিত মানুষ ৫ লাখ হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলার জনপ্রতিনিধিরা।

জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান জানান, বন্যার্তদের জন্য আপাতত হাজার বস্তা শুকনো খাবার, ৭৫ টন চাল ও আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ত্রাণের সমস্যা হবে না।

বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ