বিএনএ, রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সিকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৮তম বিসিএসের নন-ক্যাডার ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগ নেতাসহ মোট ৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে দায়ের করা মামলায় তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
বুধবার (৩১ মে) বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার বিজয় বসাক।
আটককৃত বিসিএস কর্মকর্তার নাম আব্দুল হালিম শেখ। তার বাড়ি ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলা। তিনি বর্তমানে বরিশাল জেলার গোঁড়নদী সহকারি উপজেলার সমাজসেবা অফিসার হিসেবে কর্মরত। অপরদিকে আটক ছাত্রলীগ নেতা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী হাকিবুল ইসলাম শান্ত। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক। তিনি নাটোর জেলা সদরের কালিকাপুর এলাকার আলি আহম্মদের ছেলে বলে জানা গেছে।
এসময় রাজশাহী পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, প্রক্সি কাণ্ডের সাথে জড়িত ১৬ জনকে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও আরও অনেকেই অজ্ঞাত রয়েছে। ১৬ জনের মধ্যে ৯জনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন ৩৮তম বিসিএসের নন-ক্যাডারও রয়েছে। তাকে আটক করার পর থেকে আমরা বিভিন্নভাবে তার পরিচয় জানার চেষ্টা করি। কিন্তু সে তার পরিচয় পোগন করতে থাকে। পরে তার ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে আমরা পরিচয় বের করি। তিনি বরিশাল জেলার গোঁড়নদী সহকারি উপজেলার সমাজসেবা অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন।
পুলিশ কমিশনার প্রক্সি কাণ্ডে জড়িতদেরকে চার স্তরের এক তথ্য চিত্রে প্রদর্শন করেন। সেখানে তিনি দেখান, প্রক্সি কাণ্ড করা হয়েছে ৭ জনের। মিডওয়ে কালেক্টর ৩জন। দ্বিতীয় সারিতে ২জন ও মূল হোতা ১জন রয়েছে এ চক্রে। তাদের মধ্যে ৯জনকে আটক করা হয়েছে এবং অন্যদেরকে আটকের চেষ্টা চলছে। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের তথ্য মতে দ্বিতীয় সারিতে রয়েছেন রাবি ছাত্রলীগ নেতা হাসিবুল ইসলাম শান্ত। তাকে কাটাখালি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, হাসিবুল ইসলাম শান্ত প্রক্সিদাতাদের সঙ্গে ৫০-৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে অন্যের হয়ে পরীক্ষা দেওয়ার চুক্তি করেন। মঙ্গলবার আটক প্রক্সিদাতাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা এ তথ্য জানান।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এদিন পরীক্ষায় জালিয়াতি ও অন্যের হয়ে প্রক্সি দেওয়ার অভিযোগে ৭ জনকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বুধবার (৩১ মে) সকালে ছাত্রলীগ নেতা শান্তসহ ১৬ জন ও আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নগরীর মতিহার ও চন্দ্রিমা থানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে মামলাগুলো দায়ের করেন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালাম।
ছাত্রলীগ নেতা আটকের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, আমরা আপনাদের মাধ্যমে জেনেছি যে শান্ত গ্রেপ্তার হয়েছে। কোনো ব্যক্তির দায় সংগঠন নেবে না। অভিযোগের প্রমাণ সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে প্রক্সিকাণ্ডে মূল হোতা ছিলেন রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক মুশফিক তাহমিদ তন্ময়। তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হলেও পরে তার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করা হয়।
বিএনএ/সাকিব, এমএফ