বিএনএ, ঢাকা : অগ্নিদুর্ঘটনায় বাড়ছে ক্ষতির পরিমাণ। ভস্মীভূত হচ্ছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী গত এক বছরে সারাদেশে ২১ হাজার ৭৩টি অগ্নিকান্ড ঘটেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে ২৪৬ কোটি টাকা ৬৫ লাখ ৯৫ হাজার ৪৪টাকা। উদ্ধার হয়েছে ১ হাজার ৪২৬ কোটি ১৮ লাখ ৪০ হাজার ৯০০ টাকার মালামাল। এসব অগ্নিকান্ডে নিহত হয়েছেন ১৫৪ জন নারী-পুরুষ। ফায়ারফাইটারসহ আহত হয়েছেন ৩৮৬ জন।
এ অবস্থা থেকে বের হতে নীতিনির্ধারণী ও মাঠপর্যায়ে প্রশিক্ষণ, সমন্বয় ও পর্যবেক্ষণ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সাধারণের সচেতনতার ওপরও গুরুত্বারোপ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাষ্ট্রের অবকাঠামোগত উন্নয়নের সঙ্গে এ ধরনের দুর্ঘটনা হ্রাসে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে সময়োপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে।
ফায়ার সার্ভিসের তথ্যমতে, গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইলেক্ট্রিক, গ্যাস ও মাটির চুলা থেকে ৩ হাজার ৫৬৪টি অগ্নিকান্ড ঘটেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে ৩০ কোটি ৯৫ লাখ ৫৬ হাজার ৮৫০ টাকা। বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে সৃষ্ট ৭ হাজার ৭২৯টি অগ্নিকান্ডে ক্ষতি হয়েছে ১০১ কোটি ২৩ লাখ ৯৩ হাজার ১০৮ টাকা। বিড়ি-সিগারেটের জ¦লন্ত টুকরা থেকে সৃষ্ট ৩ হাজার ৪৬৫টি অগ্নিকান্ডে ১৪ কোটি ২০ লাখ ৯ হাজার ৬২৬ টাকার ক্ষতি হয়েছে। খোল বাতির ব্যবহার, উত্তপ্ত ছাই বা জ্বালানি, ছোটদের আগুন নিয়ে খেলাধুলা ও যন্ত্রাংশের ঘর্ষণ থেকে সৃষ্ট ১ হাজার ৭৭৫টি অগ্নিকান্ডে ৩৭ কোটি ৩ লাখ ১৭ হাজার ৭৯৮ টাকার ক্ষতি হয়েছে। শত্রুতামূলক ও উচ্ছৃঙ্খল জনতার দ্বারা ১৮০টি অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এতে ২১ কোটি ৭৪ লাখ ৫ হাজার ১১৩ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বজ্রপাতসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ৯৮টি অগ্নিকান্ডে ক্ষতি হয়েছে ৬৫ লাখ ৩৩ হাজার ৩৫৮ টাকা।
এছাড়া বাজি পোড়ানো, মাত্রাতিরিক্ত তাপ বা উচ্চতাপ, মেশিনের মিস ফায়ার, স্বতঃস্ফুর্ত প্রজ্জ্বলন, চিমনির স্পুলিঙ্গ, স্থির বিদ্যুৎ, রাসায়নিক বিক্রিয়া, সিলিন্ডার ও বয়লার বিস্ফোরণ, গ্যাস সরবহারের লাইন, যানবাহনের দুর্ঘটনা এবং অন্যান্য কারণে ৪ হাজার ২৬২টি অগ্নিকান্ড ঘটেছে। এসব আগুনে ক্ষতি হয়েছে ৪০ কোটি ৮৩ লাখ ৭৯ হাজার ১৯১ টাকা।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (অপারেশন্স) মো. আব্দুল হালিম বলেন, অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে জনসচেতনতা বেশি জরুরি। সাধারণ মানুষ যত বেশি সচেতন হবেন, দুর্ঘটনাও তত কমবে। সেই সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসকেও যুগোপযোগী হতে হবে। সেদিকে খেয়াল রেখে সব ধরনের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। অধিদপ্তরের জনবল বাড়ানোর পাশাপাশি অগ্নিনির্বাপণে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি আনা হয়েছে। ফলে বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ থেকে স্বল্প সময়ে অগ্নিনির্বাপণে আমরা সক্ষম হচ্ছি।
বিএনএনিউজ/এসকেকে, জেবি