বিএনএ ডেস্ক: হেলেঞ্চো, হেলেঞ্চা বা হিঞ্চা এক প্রকার জলজ শাক। পানির ওপরে লতিয়ে চলে। বাংলাদেশের খালবিলে, নদনদী, পুকুরে সর্বত্র জন্মে। তবে নোনাপানিতে হেলেঞ্চা হয় না। অনেকে পুকুরে হেলেঞ্চা ও কলমি লতা জš§াতে দেয়। কারণ যে পুকুরে হেলেঞ্চা বা কলমি লতা থাকে, সে পুকুরের পানি সর্বদা পরিস্কার বা স্বচ্ছ থাকে। হেলেঞ্চার লতায় এক প্রকার আঁশ জšে§, এগুলো মাছের প্রিয় খাদ্য। এই হেলেঞ্চার পাতা শাক হিসেবে ব্যবহƒত হয়। শাক স্বাদে তিক্ত এবং কষায়। তবে হেলেঞ্চা শাক উপকারী। শীতের প্রথমেই ফুল ফোটে, ফুলের রং সাদা। পাতা ১ থেকে ৩ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। হেলেঞ্চা শাকের কিছু বিস্ময়কর উপকারিতা রয়েছে।
খোস পাচড়া ও চুলকানি :
শীত এবং বর্ষাকালে এ দুটি রোগ মানুষের খুবই কষ্ট দেয়। হেলেঞ্চা শাকের ৩/৪ চামচ রস সকালে একবার করে খেলে উপকার পাওয়া যাবে। তবে কয়েক দিন নিয়মিত খাওয়া দরকার।
ঘামাচি ও ফুসকুড়ি:
গায়ে কাঁটা বা ঘামাচিÑ প্রথমটি শীতে এবং দ্বিতীয়টি গরমকালে। এ উভয়বিধ রোগের জন্য হেলেঞ্চা পাতা সামান্য পানি দিয়ে বেটে তার রস সারা শরীরে মাখলে খুব দ্রূত উপকার পাওয়া যায়।
বসন্ত রোগের সংক্রমণে:
শরীরে দু’একটি গুটি দেখা দেয়া মাত্রই অর্থাৎ রোগের প্রথম অবস্থায় শ্বেতচন্দন গুঁড়ো দেড় থেকে দুই গ্রাম এবং হেলেঞ্চা শাকের রস আধা কাপÑ এ দুটি ভালভাবে মিশিয়ে খেলে শিগগিরই গুটি বের হয়ে যায়।
যকৃৎ দুর্বল হলে:
যকৃৎ অর্থাৎ লিভার দুর্বল হলে শরীরে নানা ধরনের রোগ দেয়া দেয়। ১০০ গ্রাম হেলেঞ্চা শাক ছোট ছোট করে কেটে, ১৫০ মিলিলিটার পানিতে পরিমাণ মতো লবণ মিশিয়ে সিদ্ধ করতে হবে। পানি ফুটে এক কাপ পরিমাণ হলে পাত্রটি আচ থেকে নামিয়ে ফেলতে হবে। ঠাণ্ডা হলে ভাত খাওয়ার আগে ৪/৬ ফোঁটা সরষে তেল মিশিয়ে খেলে যকৃৎ সবল হয়। অবস্থা বুঝে ২ থেকে ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত নিয়মিত খাওয়া দরকার।
পিত্ত বাড়লে:
হেলেঞ্চার পাতা বেটে তার ৩০ মিলিলিটার রস এবং গরু কিংবা ছাগলের দুধ (অবশ্যই গরম করে এবং ঠাণ্ডা অবস্থায়) ৫০ মিলিলিটারÑ এ দুটি একসঙ্গে মিশিয়ে রোজ খেলে শরীরে পিত্তের পরিমাণ স্বাভাবিক হবে। গনোরিয়া রোগের জন্য একই পদ্ধতি এবং পরিমাণ মতো খেলে উপকার পাওয়া যায়।
কোমরের যন্ত্রণা:
কোমরের ঠিক নিচে ব্যথা বা যন্ত্রণা, পায়ের পেশিতে রাতের দিকে টান ধরে, এসব ক্ষেত্রে ৩ চামচ হেলেঞ্চার শাকের রস, হাল্কা গরম করে সকালের দিকে খালিপেটে খেলে ভাল হয়ে যায়। নিয়মিত বেশ কিছুদিন খেলে আরো ভাল।
রক্ত দূষিত হলে:
২০ মিলিলিটার হেলেঞ্চার শাকের পাতা ও ডাঁটা বাটা রস, এক চামচ চিনির সঙ্গে মিশিয়ে সকালে একবার করে খেলে দূষিত রক্ত পরিষ্কার হয়ে যায়।
অনেকের জিহবায় মোটা সাদা প্রলেপ পড়ে। ফলে অরুচি হয়। তারা কয়েকদিন হেলেঞ্চার রস গরম করে খান, অরুচি চলে যাবে। যারা নি¤œ রক্তচাপে ভুগছেন, তারা হেলেঞ্চার পাতার রস দুই চামচ, কলমি পাতার রস দুই চামচ, দুই চামচ মধুর সঙ্গে মিশিয়ে এক মাস রোজ সকালে খান, নি¤œ রক্তচাপ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।