বিএনএ, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে শেষ দিনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা। আচরণবিধিতে মিছিল-শোডাউন নিষিদ্ধ থাকলেও প্রার্থীদের অনেকেই সেটা মানেননি।বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল থেকে জেলা প্রশাসন ও বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন প্রার্থীরা।
চট্টগ্রামের ১৬ আসনের মধ্যে মহানগরী ও সংশ্লিষ্ট ছয়টিতে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিভাগীয় কমিশনার। জেলার ১০টি আসনে দায়িত্বে আছেন জেলা প্রশাসক।
বেলা ১১টার দিকে সবার আগে চট্টগ্রাম জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহফুজুর রহমান মিতা। এর পর মনোনোয়নপত্র জমা দেন চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে খাদিজাতুল আনোয়ার সনি।
বেলা ১২টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালি-চান্দগাঁও) আসনে নোমান আল মাহমুদ ও চট্টগ্রাম -১০ (পাহাড়তলী, হালিশহর, ডবলমুরিং) আসনে মহিউদ্দিন বাচ্চু। তাদের সঙ্গে ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, সহ সভাপতি ইব্রাহিম চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ চৌধুরী বাচ্চু ও সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান মাহমুদ হাসনী আওয়ামীলীগের নেতারা।
দুপুর আড়াইটার দিকে চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনে মনোনোয়ন ফরম জমা দিতে আসেন সাবেক যুবলীগ নেতা আরশেদুল আলম বাচ্চু।
বিপুল নেতাকর্মী পরিবেষ্টিত হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান বাঁশখালী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মোস্তাফিজুর রহমান। রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়েও তাকে পাঁচজনের বেশি লোক নিয়ে ঢুকতে দেখা গেছে। এ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন। এ ঘটনায় তাকে তলব করেছে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি। শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) বিকেল তিনটার মধ্যে সশরীরে অথবা প্রতিনিধির মাধ্যমে কমিটির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে হাজির হয়ে ব্যাখা দিতে বলা হয়েছে তাকে।
চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এম এ সালাম দুপুর ১টায় মনোনোয়ন ফরম জমা দেন বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে। চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনোয়ন ফরম জমা দেন আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন। চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) আসনে ফরম জমা দেন চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার চৌধুরী।
এরপর চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুজিবুর রহমান সিআইপি।
পুলিশ প্রটোকল ও জাতীয় পতাকাবাহী গাড়ি নিয়ে এসে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী। বৃহস্পতিবার দুপুরে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জাতীয় পতাকাবাহী একটি গাড়িতে আসেন সংসদ সদস্য প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরী। এ সময় পুলিশের প্রটোকলে তিনি গাড়ি থেকে নামেন।
সামশুল হক চৌধুরী চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। আওয়ামী লীগের বর্তমান এ সংসদ সদস্য এবার দলের মনোনয়ন পাননি।
চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-হালিশহর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সাবেক সিটি মেয়র মোহাম্মদ মনজুর আলম।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) প্রার্থী মনজুর আলমের পক্ষে বিভাগীয় কমিশনার দপ্তরে মনোনয়নপত্র জমা দেন তাঁর ছেলে মোহাম্মদ নিজামুল আলম, মোহাম্মদ সরোয়ার আলম, মোহাম্মদ ফারুক আজম, মোহাম্মদ সাইফুল আলম, মোহাম্মদ সাহিদুল আলম।
এদিকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন চট্টগ্রাম-১ (মীরসরাই) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহবুব রহমান রুহেল। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিনের কাছে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ সময় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, মীরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জেকে চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক একেএম জাহাঙ্গীর ভুঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার হাতে মনোনয়নপত্র জমা দেন বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) এর চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী মাইজভান্ডারী।
বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে মনোনোয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দল বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন। দলের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর ওই আসনের বর্তমান এমপি।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ফটিকছড়ি আসন হতে মোট ৬ প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন। তন্মোধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, স্বতন্ত্র প্রার্থী হোসাইন মোহাম্মদ আবু তৈয়ব ও গোলাম নওশের আলী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে মনোনয়ন জমা দেন।
অন্যদিকে,তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দিন মাইজভান্ডারী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ শাহজাহান মনোনয়ন পত্র জমা দেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে।
এর আগে মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী।
এ সময় রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, রাউজানের পৌর মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ, রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওহাব ও সাধারণ সম্পাদক কফিল উদ্দিন সঙ্গে ছিলেন।