দেশে গুমের সুনির্দিষ্ট কোনো আইন না থাকায় ভুক্তভোগীদের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা কিংবা গুম প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাচ্ছে না। অপরাধ আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, অপহরণ আইনে বর্তমানে বিচার হলেও ৭ থেকে ৮ বছর গুম করে রাখার অপরাধ মৃত্যুর যন্ত্রনার চেয়েও বেশি। এজন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে দ্রুত আইন করার তাগিদ তাঁদের।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের হিসাবে গত ১৬ বছরে দেশে গুমের সংখ্যা ৬৫০-এর মতো। এর মধ্যে ৭৮ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। এখনো নিখোঁজ প্রায় ৪০০। কোনো আইন না থাকায় এসব গুমের ঘটনা আসছে না বিচারের আওতায়। আয়নাঘর কিংবা ভয়ঙ্কর জীবন থেকে ফিরে আসা ভুক্তভোগীরা বলছেন, গুম প্রতিরোধে আইন করা জরুরি।
এ প্রসঙ্গে ভুক্তভোগী সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী সোহেল রানা বলেন, ‘ছয় মাস তিন দিন র্যাব কর্তৃক আমাকে গুম করে রাখা হয়। প্রতিটা সেকেন্ড আমি মৃত্যু আতঙ্কে ছিলাম। এই যন্ত্রণা আপনি কোনো কিছুর সাথে মিলাতে পারবেন না। এটি খুন করার থেকেও অপরাধ।’
ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বছরের পর বছর কাউকে অন্ধকার কক্ষে আটকে রাখা হত্যার চেয়ে বড় অপরাধ। এজন্য সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান করে আইন করার সুপারিশ তাঁদের।
সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, ‘শুধু আইন করলেই হবে না আইন কার্যকরও করতে হবে। এর শাস্তি হওয়া উচিত মৃত্যুদণ্ড।’
রাষ্ট্রের আইন কর্মকতাদের অভিমত, অপহরণ আইনে বিচার নয়, প্রতিটি গুমের সঠিক বিচারে এখনই আলাদা আইন জরুরি।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনিক আর হক বলেন, পার্লামেন্ট যেহেতু নেই তাই এখন অর্ডিন্যান্স করা যাবে। অর্ডিন্যান্স করা হলে সংবিধান অনুযায়ী, নতুন পার্লামেন্টের ৩০ দিনের মধ্যে এটি পাস করানো যাবে।
গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে স্বাক্ষরের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন থেকে কয়েক দফায় চিঠি দেয়া হলেও কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে বৃহস্পতিবার ৭৬ তম দেশ হিসেবে এতে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ ।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ