বিএনএ ডেস্ক: ২০২৪ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা আজ রোববার থেকে শুরু হচ্ছে । গত ২ এপ্রিল এ পরীক্ষার সময়সূচি (রুটিন) ঘোষণা করেছে শিক্ষাবোর্ডগুলো। রুটিন অনুযায়ী, তত্ত্বীয় পরীক্ষা আজ থেকে শুরু হয়ে আগামী ১১ আগস্ট শেষ হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১২ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে ২১ আগস্ট। কিন্তু কারিগরি বোর্ডে তত্ত্বীয় পরীক্ষা ১৮ জুলাই শেষ হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৯ জুলাই থেকে শুরু হয়ে ৪ আগস্ট শেষ হবে।
শিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা গেছে, পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, পুনর্বিন্যাসকৃত (সংক্ষিপ্ত) পাঠ্যসূচিতে অনুষ্ঠিত হবে এই পরীক্ষা।
এদিকে শিক্ষাবোর্ডগুলো চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে। সেগুলো হলো—
১. পরীক্ষা শুরুর ৩০ (ত্রিশ) মিনিট পূর্বে অবশ্যই পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে;
২. প্রথমে বহুনির্বাচনি ও পরে সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে;
৩. ৩০ নম্বররের বহুনির্বাচনি (MCQ) পরীক্ষার ক্ষেত্রে সময় ৩০ মিনিট এবং ৭০ নম্বরের সৃজনশীল (CQ) পরীক্ষার ক্ষেত্রে সময় ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট; ব্যবহারিক বিষয় সম্বলিত পরীক্ষার ক্ষেত্রে ২৫ নম্বরের বহুনির্বাচনি (MCQ) পরীক্ষার ক্ষেত্রে সময় ২৫ মিনিট এবং ৫০ নম্বরের সৃজনশীল (CQ) পরীক্ষার ক্ষেত্রে সময় ২ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট;
পরীক্ষা বিরতিহীনভাবে প্রশ্নপত্রে উল্লেখিত সময় পর্যন্ত চলবে। MCQ এবং CQ উভয় অংশের পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি থাকবে না;
(ক) সকাল ১০টা থেকে অনুষ্ঠেয় পরীক্ষার ক্ষেত্রে
সকাল ৯.৩০ মি. অলিখিত উত্তরপত্র ও বহুনির্বাচনি OMR শিট বিতরণ;
সকাল ১০টা বহুনির্বাচনি প্রশ্নপত্র বিতরণ;
সকাল ১০.৩০ মিনিটে বহুনির্বাচনি উত্তরপত্র (OMR শিট) সংগ্রহ ও সৃজনশীল প্রশ্নপত্র বিতরণ; (২৫ নম্বরের বহুনির্বাচনি পরীক্ষার ক্ষেত্রে এ সময় ১০.২৫ মিনিট)।
(খ) বেলা ২টা থেকে অনুষ্ঠেয় পরীক্ষার ক্ষেত্রে
বেলা ১.৩০ মিনিটে অলিখিত উত্তরপত্র ও বহুনির্বাচনি OMR শিট বিতরণ;
দুপুর ২টা বহুনির্বাচনি প্রশ্নপত্র বিতরণ;
বেলা ২.৩০ মি. বহুনির্বাচনি উত্তরপত্র (OMR শিট) সংগ্রহ ও সৃজনশীল প্রশ্নপত্র বিতরণ, (২৫ নম্বরের বহুনির্বাচনি পরীক্ষার ক্ষেত্রে এ সময় ২.২৫ মিনিট);
৪. প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত সময় অনুযায়ী পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে;
৫. পরীক্ষার্থীরা তাঁদের প্রবেশপত্র নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান প্রধানের নিকট হতে সংগ্রহ করবেন;
৬. প্রত্যেক পরীক্ষার্থী সরবরাহকৃত উত্তরপত্রে তাঁর পরীক্ষার রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড ইত্যাদি ওএমআর ফরমে যথাযথভাবে লিখে বৃত্ত ভরাট করবেন। কোনো অবস্থাতেই মার্জিনের মধ্যে লেখা কিংবা অন্য কোন প্রয়োজনে উত্তরপত্র ভাঁজ করা যাবে না;
৭. পরীক্ষার্থীকে তত্ত্বীয়, বহুনির্বাচনি ও ব্যবহারিক অংশে (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) পৃথকভাবে পাস করতে হবে;
৮. প্রত্যেক পরীক্ষার্থী কেবল রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্রে উল্লিখিত বিষয়/বিষয়সমূহের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন; কোনো অবস্থাতেই অন্য বিষয়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না;
৯. কোনো পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নিজ কলেজ/প্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত হবে না, পরীক্ষার্থী স্থানান্তরের মাধ্যমে আসন বিন্যাস করতে হবে;
১০. পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর (Non programmable) ব্যবহার করতে পারবেন। প্রোগ্রামিং ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে না;
১১. পরীক্ষাকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না এবং কোনো পরীক্ষার্থী পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন আনতে পারবেন না।
চলতি বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি/আলিম/এইচএসসি (বিএম/বিএমটি), এইচএসসি (ভোকেশনাল)/ডিপ্লোমা ইন কমার্স পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ১৪ লাখ ৫০ হাজার। মোট কেন্দ্র ২ হাজার ৭২৫টি। গত বছরের তুলনায় এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ৯১ হাজার।
এ বছর মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ৫০ হাজার এবং ছাত্রী সংখ্যা ৭ লাখ। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১১ লাখ ২৮ হাজার। এর মধ্যে ছাত্র ৫ লাখ ৩৩ হাজার এবং ছাত্রী সংখ্যা ৫ লাখ ৯৪ হাজার। আলিম পরীক্ষায় ৮৮ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ৪৭ হাজার এবং ছাত্রী সংখ্যা ৪০ হাজার।
কারিগরি বোর্ডে এইচএসসি (বিএম/বিএমটি), এইচএসসি (ভোকেশনাল)/ডিপ্লোমা ইন কমার্সে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২ লাখ ৩৪ হাজার। এর মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৬৯ হাজার এবং ছাত্রী ৬৫ হাজার।
দেশের বাইরে এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা মোট ২৮১টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। এসব কেন্দ্রের মধ্যে জেদ্দায় ৪৭টি, রিয়াদে ৪৩টি, ত্রিপোলিতে দুটি, দোহায় ৬৩টি, আবুধাবিতে ৪৪টি, দুবাইয়ে ২২টি, বাহরাইনে ৩৪টি এবং ওমানে ২৬টি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা
পরীক্ষা শুরুর অন্তত ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই হলে প্রবেশ করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থীকে নির্ধারিত সময়ের পরে প্রবেশ করতে দিলে তার নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, বিলম্বের কারণ একটি রেজিস্টারে লিখে ওই দিনই সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে প্রতিবেদন দিতে হবে।
পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে এসএমএসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রশ্নপত্রের সেট কোড জানিয়ে দেওয়া হবে।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন/ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না।
পরীক্ষা-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, যেমন– পরীক্ষার্থী, কক্ষ পর্যবেক্ষক (ইনভিজিলেটর), মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্র পরিদর্শন টিম, বোর্ডের কেন্দ্র পরিদর্শন টিম, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের পরিদর্শন টিম, নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য ছাড়া অন্য কেউ কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না।
অন্যদিকে, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী, সেরিব্রালপালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী শ্রুতিলেখক সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। এ ধরনের পরীক্ষার্থীর জন্য অতিরিক্ত ৩০ মিনিট পাবেন।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ