বিএনএ, রাঙামাটি: রাঙামাটি সদরের ভেদভেদী বায়তুশ সালাম কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের দোকান ঘর নিমার্ণ নিয়ে মসজিদের টাকা আত্মসাতের করার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভেদভেদী বায়তুশ সালাম কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক এইচ এম আলাউদ্দীন ও মুসল্লিরা।
মঙ্গলবার (৩০ মে) দুপুরে রাঙামাটি শহরের একটি রেস্টুরেন্টে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এইচ এম আলাউদ্দীন লিখিত বক্তব্যে বলেন, ভেদভেদি মুসলিম পাড়ায় তারুণ্য ক্লাব নামে একটি সামাজিক ও ক্রীড়া সংগঠন আছে। যে সংগঠন ২০১৯ সালে ক্লাবের নামে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড হতে ১৬ লক্ষ টাকার একটি ক্লাব ঘর বিল্ডিং নির্মাণের জন্য বরাদ্দ পায়। কিন্তু তারুণ্য ক্লাবের নিজস্ব কোন জায়গা না থাকায় ক্লাবের সকলে মিলে মুসলিম পাড়া টিএন্ডটি মসজিদের বিপরীতে একটি জায়গা দখল করে। যা পরবর্তীতে ম্যাজিস্ট্রেট এসে ভেঙ্গে অবৈধ দখল মুক্ত করেন। এতে বিপাকে পড়ে তারুণ্য ক্লাবের সংশ্লিষ্টরা। যদি জায়গা দিতে না পারে তাহলে বিল্ডিং বরাদ্দ ফেরত চলে যাবে। তাই তারা একটা নতুন পন্থা তৈরি করে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে উক্ত বিল্ডিংটি অন্য কোন স্থানে স্থানান্তর করার প্রসঙ্গ ঠিকঠাক করে এবং তা পার্শবর্তী বায়তুশ সালাম কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের নামে দোকান ঘর নির্মাণের জন্য সিদ্ধান্ত নেয় তারা। একেতো ক্লাবের জায়গা নেই তাও তারা ভিন্ন জায়গা দেখিয়ে প্রকল্প আনে তারপর অবৈধ জায়গা দখলের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে পরে তা ৪ লক্ষ টাকা দিয়ে বায়তুল সালাম জামে মসজিদের কাছে বিক্রি করে। এখানে এ প্রকল্প আনার পিছনে মূল ভূমিকা ছিলো সাবেক সংরক্ষিত আসনের মহিলা এমপি ফিরোজা বেগম চিনু। তিনি তারুণ্য ক্লাবে প্রধান উপদেষ্টা এবং একই সাথে তিনি বায়তুল সালাম কেন্দ্রীয় জামে মসজিদেরও উপদেষ্টা। তার সাথে বায়তুল সালাম জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক, যিনি আবার ঐ ক্লাবেও একজন। তারা সকলে এ আত্মসাতের পিছনে ভূমিকা রাখে। প্রকল্পের আওতায় পরবর্তীতে দোকান ঘর নির্মাণ করা হলে তা ভাড়া দিয়ে সালামি নেয় মসজিদ কমিটি।
তিনি আরও বলেন, আমি বিষয়টি জানতে পারি যে মসজিদের দোকান ঘর বাবদ চার লক্ষ টাকা তারুণ্য ক্লাবকে নাকি দিতে হয়েছে। আমি বর্তমান মসজিদ কমিটিতে আসার পরে মসজিদের অনেক সমস্যা দেখতে পেলাম। পরে পূর্বের কমিটির সাথে কথা বলে জানতে পারি এ টাকা প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে দেওয়া হয়েছে। যার কারণে মসজিদ ফান্ডে এখন কোন টাকা নেই। তারা সরকারি প্রকল্প যেমন প্রতারণা করে নিয়েছে ঠিক তেমনি আবার মসজিদের থেকেও টাকা আত্মসাত করেছে। বর্তমানে দোকান ছেড়ে দিয়ে যে ভাড়াটিয়ারা চলে যেতে চাইছে তারা তাদেরকেও সালামির টাকা ফেরত দিতে পারছে না। এভাবে তারা প্রথমে সরকারের সাথে প্রতারণা করে প্রকল্প নেয়, তা অন্যায়ভাবে বিক্রি করে সেখান থেকেও টাকা আত্মসাত করে আবার সাধারণ মানুষের থেকে দোকান দিয়ে সালামি (অগ্রিম জামানত) নিয়েও সে টাকার হদিস দিচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই মসজিদের যে টাকা আত্মসাত করেছে সে টাকা ফিরিয়ে দেয়া হোক এবং এটার সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
দোকানের ভাড়াটিয়া সাইদুল ইসলাম মুন্না বলেন, আমি ৮০ হাজার টাকা সালামি দিয়ে দোকান নেই। আমার ব্যবসা খারাপ যাওয়ায় আমি দোকান ছেড়ে দিলে তারা বকেয়া ভাড়া বাবদ ৩০ হাজার টাকা কেটে নেয়, পরবর্তী বাকি টাকা দিবে দিবে বলে এখনো দেয়নি। টাকা চাইলে আমাকে নানান ভাবে বকাঝকা দেয়। আমি আমার টাকা ফেরত চাই।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মসজিদের মুসল্লি আব্দুল গফুর, সাইদুল ইসলাম মুন্না ও সুমন।
বিএনএনিউজ/কাইমুল ইসলাম ছোটন,বিএম