বিএনএ স্পোর্টস ডেস্ক: আইপিএলে এসেই বাজিমাত করলো গুজরাট টাইটানস। রাজস্থান রয়্যালসকে সাত ইউকেটে হারিয়ে ১৫ তম আসরের চ্যাম্পিয়ন নবাগত দলটি।
আইপিএল ফাইনালের ইতিহাসে ১৩০ রানের কম সম্বল নিয়ে জয়ের রেকর্ড ছিল একটিই। ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন হয় মুম্বাই ইন্ডিয়ানস। তবে এবার তা করে দেখাতে পারেনি রাজাস্থান রয়্যালস।
রোববার (২৯মে) রাতে গুজরাটের নরেদ্র মোদি স্টেডিয়ামে ১ লাখের ও বেশি দর্শকের উপস্থিতি। মাঠে ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদিসহ সরকারের হেভিওয়েট মন্ত্রীরা।
টসে জিতে ব্যাট করতে নামে রাজস্থান রয়্যালস। দলীয় ৩১ রানের মাথায় পড়ে প্রথম ইউকেট। ১৬ বলে ২২ রান করে আউট হন যশবি জাসওয়াল। দলের ৬০ রানের মাথায় সানজু স্যামসন আউট হন ১৪ রানে। ৭৯ রানের মাথায় পড়ে পর পর দুই ইউকেট। দেবদূত পাডিক্কাল আউট হন ২ রানে আর অধিনায় জস বাটলার ৩৫ বল মোকাবিলা করে আউট হন ৩৯ রানে। এরপর দলের ৯৪ রানের মাথায় ১১ রানে করে আউট হন শিমরন হেটমায়ার। রবিচন্দ্রন অশ্বিন ৬ রানে আউট হন দলীয় ৯৮ রানের মাথায়। ১১২ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ১১ রানে আউট হন ট্রেন্ট বোল্ট। ১৩০ রানের মাথায় গিয়ে পড়ে আরও দুই ইউকেট, ওবেদ ম্যাকয় ৮ রানে আর রিয়ান পরাগও আউট হন ১৫ রানে।
রাজস্থানের ইনিংস ধসিয়ে দেন গুজরাটের অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। ৪ ওভারে ১৭ রান দিয়ে তুলে নেন ৩ ইউকেট; আর ২ ওভারে ২০ রান দিয়ে ২ ইউকেট তুলে নেন সাই কিশোর; এছাড়া রশিদ খান ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে তুলে নেন ১ উইকেট; মোহাম্মদ সামী ৪ ওভারে ৩৩ রানে ১ ইউকেট; ৩ ওভারে ১৮ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন ইয়াশ দয়াল; লকি ফার্গুসন ৩ ওভারে দেন ২২ রান।
১৩১ রানের ছোট টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে হোচট খায় গুজরাট। দলীয় ৯ রানের মাথায় ৭ বলে ৫ রান করে ফিরে যান ঋদ্ধিমান সাহা। এরপর ২৩ রানের মাথায় ৮ রান করে ফিরে যান ম্যাথু ওয়েড। তবে ব্যাটিংয়ে নেমেও লা জাবাব সেই অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া, ৩০ বলে করেন ৩৪ রান, তখন দলের রান ৮৬। এরপর আর কোন ইউকেট হারাতে হয়নি রাজরাটকে। ডেভিড মিলারের ১৯ বলে ৩২ আর ৪৩ বলে ৪৫ করে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেয় শুবমান গিল।
ব্যাটারদের মত রাজস্থানের রোলাররাও তেমন একটা সুবিধা করতে পারেন নি। ট্রেন্ট বোল্ট ৪ ওভারে ১৪; প্রাসিধ কৃষ্ণা ৪ ওভারে ৪০ আর ইয়ুজভেন্দ্র চাহাল ৪ ওভারে ২০ রান দিনে নেন একটি করে উইকেট। এছাড়া রবিচন্দ্রন অশ্বিন ৩ ওভারে ৩২, ওবেদ ম্যাকয় ৩.১ ওভারে ২৬ রান দিয়ে কোন উইকেট শিকার করতে পারেন নি।
ব্যাট হাতে ৩৪ আর বল হাতে তিন উইকেট শিকার করায় ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন গুজরাটের ত্রাতা হার্দিক পান্ডিয়া।
দল চ্যাম্পিয়ন না হলেও এবারের আইপিএলে সর্বোচ্চ রান করেছেন রাজস্থানের জশ বাটলার। ১৭ ম্যাচে ৮৬৩ রান করেছেন তিনি। গড় ছিল ৫৭.৫৩ ও স্ট্রাইক রেট ১৪৯.০৫। স্বপ্নের মত মৌসুমে বাটলারের ব্যাট থেকে এসেছে ৪টি সেঞ্চুরি ও ৪টি ফিফটি।
১৫ তম আসরে সবচেয়ে বেশি উইকেট পেয়েছেন আবার তারই সতীর্থ যুজবেন্দ্র চাহাল। ‘পারপেল ক্যাপ’ পাওয়া চাহাল ১৭ ম্যাচে শিকার করেছেন ২৭ উইকেট। এ মৌসুমে চাহালের ইকোনমি ৭.৭৫ এবং গড় ১৯.৫১।
এছাড়া এবারের আসরে সবচেয়ে বেশি ছক্কা মেরেছেন বাটলার। ১৭ ম্যাচে বাটলারের ছক্কা ৪৫টি। শুধু ছক্কাই না, চারেও সেরা বাটলার। ৮৩টি চার মেরে এবারের আইপিএল মাতিয়েছেন এই ইংলিশ ব্যাটার।
তবে সবচেয়ে বেশি অর্ধশতক করেছেন দিল্লির অজি ব্যাটার ডেভিড ওয়ার্নার। আসরে ৫টি ফিফটি করেছেন তিনি। দ্রুততম ফিফটি করেছেন কলকাতার প্যাট কামিন্স। ১৪ বলে ফিফটি করেছিলেন অস্ট্রেলিয়া টেস্ট দলের এ অধিনায়ক।
এছাড়া ৪৯ বলে শতক হাঁকিয়ে আসরের সবচেয়ে দ্রুততম শতকে নাম লিখিয়েছেন রজত পাতিদার। আর এবারের আইপিএলে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোরার কুইন্টন ডি কক। কলকাতার বিপক্ষে ৭০ বলে অপরাজিত ১৪০ রান করেছিলেন তিনি।
বিএনএ/ এ আর