25 C
আবহাওয়া
১১:২৩ পূর্বাহ্ণ - অক্টোবর ৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » কারখানার বর্জ্য -দখলদারদের সিন্ডিকেটে বিপন্ন তুরাগ নদী !

কারখানার বর্জ্য -দখলদারদের সিন্ডিকেটে বিপন্ন তুরাগ নদী !

কারখানার বর্জ্য -দখলদারদের সিন্ডিকেটে বিপন্ন তুরাগ নদী !

বিএনএ, গাজীপুর : গাজীপুরের শিল্প সমিদ্ধ নগরী টঙ্গী এবং এর আশে-পাশের এলাকায় বিভিন্ন প্রকার নামি-দামি মিল কারখানা গড়ে উঠেছে। এ সব কারখানার মধ্যে, এমন কিছু কারখানা রয়েছে, যাদের নিজস্ব ভাবে বর্জ্য পদার্থ অপসারণের কোনো ব্যবস্থা নেই। আবার এমন কিছু সংখ্যক কারখানা রয়েছে, যাদের ওয়াশিং এবং ডায়ইং করার বিষাক্ত কালো পানি প্রতিশোধের কোনো ব্যবস্থা নেই। যার কারণে, এই বিষাক্ত পানি যদি কোন উন্মুক্ত স্থানে ফেলা হয়। যেমন, ফসলি জমি অথবা কোনো নদী, খাল বিল, ডােবা, জলাশয়। তাহলে ওই সব স্থান, তার নিজস্বতার গতিপথ হারিয়ে ফেলবে এবং একটা সময় দেখা যাবে যে, বিপন্ন হয়ে যাচ্ছে।” টঙ্গীর তুরাগ নদী “এ রকম এক পরিস্থিতির শীকার হয়েছে। নদীর আশে-পাশের এলাকার। বিভিন্ন কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য ও দুষিত পানি নদীতে আসায়। তুরাগ নদী তার অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে ।

অপর দিকে আবার মরার উপরে “খাড়ার গাঁ ” জাতীয় নদী র ক্ষা কমিশন ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক সমীক্ষা সূত্রের তথ্যে পাওয়া গেছে, ৪৮৯ জন চিহ্নিত দখলদারের কবলে পড়ে,টঙ্গীর তুরাগ নদী এখন। দিন- দিন ভরাট হয়ে যাচ্ছে, মনে হয় দেখার যেনো কেউ নেই। যার কারণে, নিরবে তুরাগ নদী বিপন্ন হয়ে যাচ্ছে।

সরকারি এক সমীক্ষা তথ্যে পাওয়া গেছে, গাজীপুর জেলায় তুরাগ নদীতে প্রায় ৪৮৯টি দখল দেখা গেছে। এই সব দখলের মধ্যে রয়েছে, আধাপাকা/টিনসেড স্থাপনা ৪১২টি, ইটভাটা ১৬টি, পার্ক/রিসোর্ট একটি, শিল্পকারখানা/ফ্যাক্টরি ছয়টি। পাকা স্থাপনা রয়েছে ৫০টি। জবর দখল করে রাখা প্রতিষ্ঠানগুোলোর মধ্যে সামিট গ্রুপের পাওয়ার প্লান্ট, ইসলাম গার্মেন্টস, অনুভব ডেইরি ফার্ম, ডিবিএলগুরুপ, এননটেক্স, নিট বাজার ফেব্রিক্স এবং ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠান।

সরেজমিনে, তুরাগ নদীর তীরে ইসলামপুর ভাঙ্গাব্রিজ এলাকা গুরে দেখা গেছে, ভয়াবহ এক দৃষ্ট। রাস্তার পাশে নির্মিত ড্রেন দিয়ে কারখানার বিশাক্ত পানি বের হয়ে সরাসরি নদীর পানিতে পড়ছে। পানি নদীতে পড়ার কারণে, ভয়ানক কালো বর্ণ ধারণ করছে। পানি চলার প্রভাহ না থাকায় এক স্থানেই থেকে পুরো এলাকা কালো শহরে পরিনত করছে। আশে-পাশের খাল-বিলের জেলেরা মাছ ধরছেন, মাছ দেখলে মনে হয় এ যেনো এক দেশের মাছ।

স্থানীয় জেলে আমিনুল ইসলাম জানান, তাদের এই এলাকায়। একটা সময় বিলের দিকে তাকালে মনে হতো, সবুজে মোড়ানো এক শহর। এক পাশে ছিল রবি ফসল অন্য পাশে ছিলো নিভে’জাল পানি। বিভিন্ন প্রকার মাছ ধরতেন। নিজের পরিবারের চাহিদা মিটানোর পর বাজারে বিক্রি করে পারিবারের অথে’র যোগান দিতেন।

তিনি বলেন, এখন যে মাছ ধরছেন নিজেদের পরিবারের কেউ এই কালো পানির খেতে চায়না। আল্লাহর উপরে ভরসা করে অভাবের তাড়নায় পড়ে খেতে হচ্ছে। বাজারে জিনিস প্রত্রের দাম আকাশ চুমকি।

তুরাগ নীদর পাড়ে বসবাসকারী বাসিন্দারা জানান,পরিবেশ এবং নদী দূষণের বিশেষ কারণ হচ্ছে, ইটিপি বিহীন বিভিন্ন শিল্প কারখানা পরিচালনা করায়। তবে,ইটিবি বিহিন যে সমস্ত কারখানা রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে অভিযান পরিচালনা করেও নদীর দূষণ রোধ করা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও নদী গবেষক মোহাম্মদ মনির হোসেন জানান, শিল্প মালিকরা রাজনৈতিক সুবিধা নিয়ে, শিল্প বিল্পবের দোহায় দিয়ে টঙ্গীর তুরাগ নদীর বারটা বাজিয়ে দিয়েছে। এখন সরকারের উচিত হবে
চাটুকার মালিকদের কথা না শুনে, মোবাইলকোর্টের মাধ্যমে অবৈদ নদী দখল কারীদের উচ্ছেদ করা এবং যারা তুরাগের পানি বিষাক্ত করেছেন তাদের কে জরিমানার আওতায় আনা। তাছাড়া এ নদী রক্ষা করা যাবে না।

গাজীপুর জেলা (অংশের)পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুস সালাম জানান, পূর্বে অনেক কারখানা ছিল। যে গুলোতে বর্জ্য পরিশোধনের ব্যবস্থা ছিল না। বত’মানে এ রকম নেই। তিনি বলেন, কারখানাগুলো যাতে বর্জ্য পরিশোধন করে সেটি তারা তদারকি করছেন। এখন ইটিপি ছাড়া কোনো কারখানাকে অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না।
বিএনএনিউজ/রুকন,জেবি

Loading


শিরোনাম বিএনএ