বিএনএ, ঢাকা: পুলিশ সদস্য আমিরুল ইসলাম পারভেজকে হত্যার ঘটনায় ২ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।রোববার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন শামীম রেজা এবং মো. সুলতান। শামীম গাইবান্ধার পলাশবাড়ি উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক। তাকে গাইবান্ধা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সুলতানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ঢাকার ডেমরা থেকে।
এর আগে সরকার পতন ও নির্দলীয় তত্ত্বাধায়ক সরকারের দাবিতে রাজধানীতে শনিবার (২৮ অক্টোবর) বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পুলিশের এক সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। নিহত পুলিশ সদস্যের নাম মো. আমিরুল ইসলাম পারভেজ (৩২)। তিনি কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন।
এ ঘটনায় আজ রোববার (২৯ অক্টোবর) পল্টন থানায় একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ বাদী হয়ে মামলাটি করেছে।
গতকাল বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষকালে ফকিরাপুলের বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় আমিরুল মাথায় আঘাত পেয়ে রাস্তায় পড়ে যান। তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে অন্তত ৬টি এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষে জড়ান দলটির নেতাকর্মীরা। এই সংঘর্ষে পুলিশের সদস্য আমিরুল ছাড়াও যুবদলের ওয়ার্ড পর্যায়ের এক নেতা নিহত হয়েছেন। তার নাম শামীম মিয়া। তিনি রাজধানীর মুগদা এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।
গতকালের সংঘর্ষে আহত হয়েছেন পুলিশের ৪১ ও আনসারের ২৫ সদস্য এবং কমপক্ষে ২০ জন সাংবাদিক। অপর দিকে সংঘর্ষে হাজারের বেশি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি বিএনপির।
পুলিশ সদস্য আমিরুল ইসলাম পারভেজের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন
রাজধানীতে সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহত পুলিশ সদস্য আমিরুল ইসলাম পারভেজের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে ঢামেক হাসপাতালের মর্গে। রোববার (২৯অক্টোবর) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।
ময়নাতদন্ত করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. তৌহিদা বেগম। নিহত পুলিশ সদস্যের মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট সম্পন্ন করেন পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ পারভেজ ভুইয়া।
তিনি সুরতহাল রিপোর্টে উল্লেখ করেন, মৃত পুলিশের মাথার পেছনে দুইটি কাটা জখম, কপালের বাম পাশে কাটা জখম, নাকে জখম, পিঠে, দুই হাতে নীলা ফোলা জখম রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে উল্লেখ করেন, পল্টন থানাধীন বক্স কার্লভাট রোডে ডিউটি করাকালীন বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা আক্রমণ করে।এ সময় তারা ইট,পাটকেল নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে ভিকটিমকে লাঠি, রড, ইট দিয়ে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে।এক পর্যায়ে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মারা যান।
নিহত পারভেজের চাচাতো ভাই আতোয়ার রহমান জানান, তাদের বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলার চারকাটারি গ্রামে। বর্তমানে স্ত্রী রুমা আক্তার ও এক মেয়ে তানহা ইসলামকে নিয়ে শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনিতে থাকতেন।তিনি আরও জানান, ২০১১ সালে বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেন। তারা দুই ভাই ও এক বোন। বাবার নাম মুক্তিযোদ্ধা সেকেন্দার মোল্লা।
বাদ জোহর আমিরুল ইসলাম পারভেজের রাজারবাগ পুলিশ লাইনে জানাজা হয়। এরপর গ্রামের বাড়ি দৌলতপুরে আরেকবার জানাজা শেষে দাফন করা হবে বলে তিনি জানান।
এদিকে ময়নাতদন্তকারী প্রভাষক ডা. তৌহিদা বেগম উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, নিহত পুলিশ সদস্যের মাথা সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।তবে মাথার আঘাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয় ।
বিএনএ নিউজ/এমএফ/, এসজিএন, এইচ এ মুন্নী