24 C
আবহাওয়া
২:৪৪ অপরাহ্ণ - ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » সুন্দরের আধার প্রিয়নবী (স.)

সুন্দরের আধার প্রিয়নবী (স.)


ধর্ম ডেস্ক: মহানবী (স.) আল্লাহ তায়ালার আদেশ পেয়ে ৬২২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর মক্কা থেকে মদিনার উদ্দেশে হিজরত শুরু করেন। ২৩ সেপ্টেম্বর ৬২২ সাল মোতাবেক ৮ রবিউল আওয়াল মদিনার পার্শ্ববর্তী কোবায় পৌঁছান তিনি। যাত্রাপথে একাধিক ঘটনার মধ্যে একটি হলো- খোজাআহ গোত্রের উম্মে মাবাদের তাঁবুতে অবস্থান ও অলৌকিক ঘটনা প্রকাশ।

খোজাআহ গোত্রের বিখ্যাত অতিথিপরায়ণ মহিলা উম্মে মাবাদের তাঁবুর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় রাসুলুল্লাহ (স.) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, পানাহারের কিছু আছে কি-না? ওই মহিলার অভ্যাস ছিল তিনি তাঁবুর বাইরে বসে থাকতেন মেহমানের অপেক্ষায়। মেহমান পেলে তাকে কিছু খাওয়াতেন। কিন্তু সেদিন এমন হয়েছিল যে, বাড়িতে পানাহারের মতো কিছুই ছিল না। তখন দুর্ভিক্ষের সময় চলছিল। বকরিগুলো সব মাঠে নিয়ে গেছে স্বামী আবু মাবাদ। একটি বকরি বেশি দুর্বল হওয়ার কারণে মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়নি। সেটি তাঁবুর এক কোণে বাঁধা ছিল। রাসুলুল্লাহ (স.) সেটি থেকে দুধ দোহন করার অনুমতি চাইলেন। উম্মে মাবাদ বললেন, ওর ওলানে কিছু থাকলে আমিই আপনাদের দোহন করে দিতাম। অতঃপর রাসুলুল্লাহ (স.) অনুমতি পেয়ে বকরিটির ওলানে ‘বিসমিল্লাহ’বলে হাত রাখলেন ও বরকতের দোয়া করলেন। সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহর ইচ্ছায় বকরিটির ওলান দুধে পূর্ণ হয়ে গেল। তারপর তিনি দোহন করতে থাকলেন। তাতে দ্রুত পাত্র পূর্ণ হয়ে গেল। প্রথমে বাড়িওয়ালী উম্মে মাবাদকে পান করালেন। তারপর সঙ্গীদের এবং সবশেষে রাসুলুল্লাহ (স.) নিজে পান করলেন। এরপরে এক পাত্র পূর্ণ করে উম্মে মাবাদের কাছে রেখে তাঁরা পুনরায় যাত্রা করলেন। অল্পক্ষণ পরেই আবু মাবাদ বাড়িতে ফিরে সব ঘটনা শুনে অবাক হয়ে গেলেন।

সেসময় উম্মে মাবাদ তাঁর স্বামীকে নবীজি দেখতে কেমন এবং তাঁর কাফেলা সম্পর্কে বর্ণনা দিয়েছিলেন। বেদুঈন নারী সহজভাবে মহানবী (স.) সম্পর্কে যে বর্ণনাটি দিয়েছেন, তা এখানে তুলে ধরা হলো।

‘তাঁর উজ্জ্বল বদনকান্তি, প্রফুল্ল মুখশ্রী, অতি ভদ্র ও নম্র ব্যবহার। তাঁর উদরে স্ফীতি নেই, মস্তকে খালিত্য নেই। সুন্দর, সুদর্শন। সুবিস্তৃত কৃষ্ণবর্ণ নয়নযুগল, কেশ দীর্ঘ ঘনসন্নিবেশিত। তাঁর স্বর গম্ভীর। গ্রিবা উচ্চ। নয়নযুগলে যেন প্রকৃতি নিজেই কাজল দিয়ে রেখেছে। চোখের পুতুলি দুটি সদা উজ্জ্বল, ঢল ঢল। ভ্রূযুগল নাতিসূক্ষ্ম, পরস্পর সংযোজিত। স্বতঃকুঞ্চিত ঘন কেশদাম। মৌনাবলম্বন করলে তাঁর বদনমণ্ডল থেকে গুরুগম্ভীর ভাবের অভিব্যক্তি হতে থাকে।

আবার কথা বললে মনপ্রাণ মোহিত হয়ে যায়। দূর থেকে দেখলে কেমন মোহন কেমন মনোমুগ্ধকর সে রূপরাশি, নিকটে এলে কত মধুর কত সুন্দর তাঁর প্রকৃতি। ভাষা অতি মিষ্ট ও প্রাঞ্জল, তাতে ত্রুটি নেই, অতিরিক্ততা নেই, বাক্যগুলো যেন মুক্তার হার। তাঁর দেহ এত খর্ব নহে যা দর্শনে ক্ষুদ্রত্বের ভাব মনে আসে বা এমন দীর্ঘ নহে যা দেখতে বিরক্তি বোধ করে, তিনি নাতিদীর্ঘ নাতিখর্ব। পুষ্টি ও পুলকে সে দেহ যেন কুসুমিত নববিটপীর সদ্য পল্লবিত নবীন প্রশাখা। সে মুখশ্রী বড়ই সুন্দর, বড়ই সুদর্শন ও সুমহান। তাঁর সঙ্গীরা সর্বদাই তাঁকে বেষ্টন করে থাকেন। তাঁরা তাঁর কথা আগ্রহ সহকারে শ্রবণ করেন এবং তাঁর আদেশ উৎফুল্ল চিত্তে পালন করেন।’

স্ত্রীর মুখে এই বর্ণনা শুনে আবু মাবাদ উত্তেজিত স্বরে বলে উঠলেন ‘আল্লাহর কসম! ইনিই কুরায়েশদের সেই মহান ব্যক্তি, যার সম্পর্কে লোকেরা নানা কথা বলে থাকে..। আমার দৃঢ় ইচ্ছা আমি তাঁর সাহচর্য লাভ করি এবং সুযোগ পেলে আমি তা অবশ্যই করব।’

বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ