বিএনএ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) আকবরশাহ থানার অভিযানে মোটরসাইকেল চোর চক্রের ৫ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসময় ৩টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
শনিবার (২৯ জুন) রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) পশ্চিম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার নিহাদ আদনান তাইয়ান।
গ্রেপ্তার আসামীরা হলেন- কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট থানার ফকিরহাট জমিদার মন্নান সাহেবের বাড়ীর হান্নানের ছেলে ১। মেহেদী হাসান মুন্না (২২), চট্টগ্রামের আকবরশাহ থানার বাহির ফিরোজশাহের মৃত মো. রুহুল আমিনের ছেলে ২। মো. রিয়াদ হোসেন (২০), কুমিল্লার নাঙ্গলকোট থানার ময়ুরা গোমকোর্টের মো. মোবারকের ছেলে ৩। মো: মামুন খন্দকার (৩০), নাঙ্গলকোট থানার ঢালুয়া ইউনিয়নের উরকুটি এলাকার পেয়ার আহমেদ মজুমদারের ছেলে ৪। জিহাদ হোসেন (১৯) এবং একই ইউনিয়নের বদরপুর এলাকার সাহাব উদ্দিন ভূইয়ার ছেলে ৫। শাহিনুল ইসলাম শুভ (১৯)।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, চলতি বছরের ৩০ মার্চ সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের আকবরশাহ থানার পূর্ব ফিরোজশাহ কলোনী আনুর বাড়ীর সামনে হতে মো. আজিমের ১টি মোটর সাইকেল, ৩ মে দুপুরে আকবর শাহ্ মোড়স্থ আকবর শাহ্ জামে মসজিদের সামনে হতে মো. নুর উদ্দিনের ১টি, ৩০ মে সন্ধ্যায় পূর্ব ফিরোজশাহ কলোনী ট্রান্সমিটার মোড় সংলগ্ন ডি লেইনস্থ জনৈক ছকিনার বাসার সামনে হতে এনজিও কর্মী কল্যাণ মিত্র দাসের ১টি, ১৪ জুন দুপুরে ফয়’সলেক আব্দুল হামিদ সড়কস্থ লুৎফর রহমানের বাড়ীর নিচ তলায় পার্কিংস্থল হতে ইঞ্জিনিয়ার ইমদাদুল হকের ১টি এবং ১৯ জুন সকালে নতুন মনছুরাবাদস্থ তাহের মঞ্জিলের বাড়ীর নিচ তলায় পার্কিং হতে মো. লোকমান হোসেন স্বপনের পুরাতন মোটর সাইকেল চুরি হয়। চুরির ঘটনায় মামলা দায়ের হয়।
পুলিশ মামলার ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, গুপ্তচরের দেয়া সংবাদ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মোটরসাইকেল চুরির মূল হোতা মেহেদী হাসান মুন্না (২২) ও তার সহযোগী মো. রিয়াদ হোসেনতে (২০) সনাক্ত করে ২৮ জুন অভিযান পরিচালনা করে আকবরশাহ থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তাদের চুরির ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখানো হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামীরা ভিডিও ফুটেজে নিজেদের সনাক্ত পূর্বক মামলার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে উল্লিখিত মামলার চোরাই মোটরসাইকেলগুলো কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট থানার মো. মামুন খন্দকার (৩০), সাখাওয়াত হোসেন (২২) ও জিহাদ হোসেন (১৯) দের নিকট বিক্রি করেছে বলে স্বীকার করে। এসময় গ্রেপ্তার আসামীদের সঙ্গে নিয়া কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোর্ট থানার ঢালুয়া এলাকায় নাঙ্গলকোট থানা পুলিশের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী মো. মামুন খন্দকার (৩০) ও জিহাদ হোসেনকে (১৯) গ্রেপ্তার করলেও অপর আসামী শাখাওয়াত হোসেন (২২) কৌশলে পালিয়ে যায়।
গ্রেপ্তার পরবর্তী আসামী মো. মামুন খন্দকারের হেফাজত হতে ১টি HERO X PRO PASSION মোটরসাইকেল উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়। ধৃত আসামী মো. মামুন খন্দকার (৩০) ও জিহাদ হোসেনকে (১৯) আরো চোরাই মোটরসাইকেল সংক্রান্তে জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, অপর ১টি চোরাই মোটরসাইকেলটি মেহেদী হাসান মুন্না ও রিয়াদ হোসেনের নিকট হতে কিনে অপর আসামী শাহিনুল ইসলাম শুভ (১৯) এর নিকট বিক্রি করেছে।
পরবর্তীতে ধৃত আসামী মো. মামুন খন্দকার (৩০) ও জিহাদ হোসেন (১৯) দ্বয়ের প্রদত্ত তথ্য মতে আসামী শাহিনুল ইসলাম শুভকে (১৯) কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোর্ট থানার ঢালুয়া বাজারস্থ মেসার্স হক এন্ড সন্স ফিলিং স্টেশনের সামনে রাস্তার উপর হতে গ্রেপ্তারপূর্বক তাহার হেফাজত হতে চুরি যাওয়া ১টি Suzuki Gixxer পুরাতন মোটরসাইকেল উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়। অপর মামলা সমূহের চোরাই যাওয়া মোটরসাইকেলগুলো পালিয়ে যাওয়া আসামী সাখাওয়াত হোসেনের (২২) নিকট রয়েছে মর্মে জানায়। পালিয়ে যাওয়া আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। গ্রেপ্তার আসামিদের বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানা যায়, গ্রেপ্তার আসামীগণ পেশাদার মোটরসাইকেল চোর চক্রের সদস্য। আসামীগণ চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন স্থান হতে ১০-২০ সেকেন্ডের মধ্যে মোটরসাইকেল চুরি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্রয়-বিক্রয় করিয়া থাকে। থানার রেকর্ডপত্র ও সিডিএমএস পর্যালোচনায় গ্রেপ্তার আসামি মেহেদী হাসান মুন্নার (২২) বিরুদ্ধে নোয়াখালীর সেনবাগ থানায় ১টি, সিএমপি’র বন্দর থানায় ১টি, হালিশহর থানায় ৫টি এবং সিএমপি’র আকবর শাহ্ থানায় ২টি মামলার রেকর্ড পাওয়া যায়।
বিএনএনিউজ/ বিএম/এইচ মুন্নী