বিএনএ বিশ্ব ডেস্ক: ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিকে মৃত্যুনগরী বলেও কিছুই বোঝানো যাচ্ছে না আর। বুধবারের দিল্লি নরককুণ্ড বই কিছু নয়। কোভিডে দৈনিক মৃতের সংখ্যা ৭০০-তে পৌঁছে গিয়েছে। শহরের বিভিন্ন শ্মশানের বাইরে রাস্তায় টোকেন নিয়ে মরদেহের দীর্ঘ সারি। ২০ ঘণ্টা কেটে যাচ্ছে আগুন পেতে। লাশ ছিঁড়ছে কুকুর। শ্মশানের দরজায় দরজায় ঘুরে জায়গা না পেয়ে স্রেফ বরফ চাপা দিয়ে ৪৮ ঘণ্টাও বাড়িতে শব রেখে দিচ্ছেন স্বজনেরা। কুকুরের দেহ পোঁতার জায়গা ব্যবহার করা হচ্ছে মানুষকে দাহ করার জন্য। দিল্লির সুভাষনগর শ্মশানে টিনের চালের নীচে সারি সারি চিতা জ্বলছে। উড়ছে ছাই। এমনিতে নতুন নয় এই দৃশ্য।
কিন্তু সেই ছাই উড়ে পড়ছে পাশের যে চাতালে? সেই চাতাল ধরেই এখন মৃতদেহের সর্পিল রেখা। এক ঝলক তাকালেই মাচার সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা অন্তত ১৫-২০টি দেহ চোখে পড়ছে। পাশের উঁচু বাঁধানো জায়গায় ঘি এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে বসে রয়েছেন স্বজনেরা। এক-দুঘণ্টা নয়, ১৬ থেকে ২০ ঘণ্টাও বসে রয়েছেন কেউ কেউ।
যে প্লাস্টিকের ব্যাগে মৃতদেহ মোড়া রয়েছে, তার ওপর নাম, নম্বর লেখা। হাতছাড়া হওয়ার ভয় নেই। তাই একটানা বসে না থেকে পোড়া দেহের গন্ধ এবং ধোঁয়া থেকে বেরিয়ে মাঝেমধ্যে বাইরে ঘুরে আসছেন অনেকে। ভারতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো করোনায় তিন হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। খবর- আনন্দবাজার।
ভারতীয় গণমাধ্যমে বলা হয়, স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ভারতে এক দিনে ৩ হাজার ৫৩৫ জন করোনায় মারা গেছেন। আগের দিন মঙ্গলবার রাত ১১টা পর্যন্ত ভারতে এক দিনে ৩ হাজার ৩০৬ জন করোনায় মারা যান। ভারতে করোনা মহামারি শুরুর পর এই প্রথম দেশটিতে এক দিনে সাড়ে তিন হাজারের বেশি রোগীর মৃত্যু হলো। এক দিনে মৃত্যুর এই রেকর্ডসংখ্যা নিয়েই ভারতে করোনায় মোট প্রাণহানি দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৪ হাজার ৭০১ জন।
বিএনএনিউজ২৪/এমএইচ