26 C
আবহাওয়া
২:৫২ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২৩, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-১৬ (লালমনির হাট-১)

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-১৬ (লালমনির হাট-১)


বিএনএ, ঢাকা: বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ধারাবাহিক নির্বাচনী হালচাল প্রকাশ করছে। আজ থাকছে লালমনির হাট-১ আসনের হালচাল।

লালমনির হাট-১ আসন 

লালমনির হাট-১ সংসদীয় আসনটি পাটগ্রাম এবং হাতীবান্ধা উপজেলা নিয়ে গঠিত। এটি জাতীয় সংসদের ১৬ নাম্বার আসন।

প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাদাকাত হোসেন বিজয়ী হন
১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনটি রংপুর-১৬ নামে পরিচিত ছিল।
নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ২২ হাজার ২ শত ২৯ জন। ভোট প্রদান করেন ৫৩ হাজার ৫ শত ১২ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাদাকাত হোসেন বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৪২ হাজার ৮ শত ৯৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল গাফফার। তিনি পান ৬ হাজার শত ১ শত ৮ ভোট।

দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন বিএনপির কাজী নুরুজ্জামান 
১৯৭৯ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনটি পরিচিতি হয় রংপুর-৫ নামে। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৩শত ৫৩ জন। ভোট প্রদান করেন ৫৬ হাজার ৬ শত ৬৫ জন। বিএনপির কাজী নুরুজ্জামান বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ২৩ হাজার ৭২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের আবেদ আলী। নৌকা প্রতীকে তিনি পান২০ হাজার ২ শত ৮৬ ভোট।

তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়নাল আবেদন সরকার বিজয়ী

১৯৮৬ সালের ৭মে অনুষ্ঠিত তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৪ আসনের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়, লালমনির হাট-১। নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৩ শত ৫ জন। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়নাল আবেদন সরকার বিজয়ী হন। তিনি পান ৫৪ হাজার ২ শত ৬৮ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির কাজী নুরুজ্জামান। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ৪২ হাজার ৪ শত ২৩ ভোট। এই নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি।

চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির জয়নুল আবেদীন সরকার বিজয়ী 
১৯৮৮ সালের ৩রা মার্চ অনুষ্ঠিত চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ, বিএনপিসহ পরিচিত রাজনৈতিক দল গুলো অংশগ্রহণ করেনি। প্রতিদ্বন্দ্বীতা বিহীন এ নির্বাচনের আগে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য জয়নুল আবেদীন সরকার জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন এবং নির্বাচনে জাতীয় পার্টির টিকেটে বিজয়ী হন।

পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির জয়নুল আবেদীন সরকার বিজয়ী হন

১৯৯১ সালের ২৭ই ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে এই আসনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৮৪ হাজার ৪ শত ৯৬ জন। ভোট প্রদান করেন ১লাখ ১১ হাজার ৬৬ জন। নির্বাচনে জাতীয় পার্টির জয়নুল আবেদীন সরকার বিজয়ী হন। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ৩৭ হাজার ২ শত ৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের মোতাহার হোসেন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৩৪ হাজার ৩ ৮৪ ভোট।

৬ষ্ট জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির হাসানুজ্জামান বিজয়ী

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ৬ষ্ট জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বিএনপি ফ্রিডম পার্টি ও কিছু অখ্যাত দল ও ব্যক্তি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগসহ সব বিরোধী দল নির্বাচন বর্জন করে ক্ষান্ত হয়নি, প্রতিরোধও করে। ভোটার বিহীন এই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির হাসানুজ্জামান বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। সংসদের মেয়াদ ছিল মাত্র ১১ দিন।

সপ্তম সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির জয়নুল আবেদীন সরকার নির্বাচিত 

১৯৯৬ সালের ১২ই জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৮৩ হাজার ১ শত ৯০ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭ শত ৮২ জন। নির্বাচনে জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টির জয়নুল আবেদীন সরকার বিজয়ী হন। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ৫৮ হাজার ৪ শত ৭৮ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের মোতাহার হোসেন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৫৩ হাজার ১ শত ৮৯ ভোট।

অষ্টম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মোতাহার হোসেন বিজয়ী

২০০১ সালের ১ অক্টোবর  অনুষ্ঠিত অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ২৫ হাজার ২ শত ৭১ জন । ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৭৪ হাজার ২ শত ৯৬ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মোতাহার হোসেন বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৭৮ হাজার ১ শত ১৬ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জামায়াত ইসলামীর আবু হেনা এরশাদ হোসেন। দাড়িপাল্লা প্রতীকে তিনি পান ৪৮ হাজার ৯ শত ৭ ভোট।

YouTube player

নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মোতাহার হোসেন পুনরায় নির্বাচিত হন
২০০৮ সালের ২৯শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৪৩ হাজার ৬৯ জন । ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ২০ হাজার ৩ শত ৯৫ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মোতাহার হোসেন বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ১৭ হাজার ৭ শত ৭৩ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জামায়াত ইসলামীর হাবিবুর রহমান। দাড়িপাল্লা প্রতীকে তিনি পান ৭২ হাজার ৫ শত ৬২ ভোট।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মোতাহার হোসেন তৃতীয়বারের মত বিজয়ী

২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৭৬ হাজার ৫ শত ৭৭ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৯৪ হাজার ৯শত ২৭ জন। আওয়ামী লীগের মোতাহার হোসেন বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ৭৯ হাজার ৮ শত ১৪ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাসদের সাদেকুল ইসলাম। মশাল প্রতীকে তিনি পান ৬ হাজার ৫ শত ৫১ ভোট। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এই নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেনি।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মোতাহার হোসেন চতুর্থবারের মতো বিজয়ী 

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে লালমনির হাট-১ আসনে ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ১৮ হাজার ১ শত ১১ জন । ভোট প্রদান করেন ৩ লাখ ১০ হাজার ৬ শত জন। নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ৭ জন।
নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের মোতাহার হোসেন, ধানের শীষ প্রতীকে হাসান রাজীব প্রধান, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির খালেদ আকতার, মশাল প্রতীকে জাসদের সাদেকুল ইসলাম, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলনে বাংলাদেশের হাবিবুর রহমান, আম প্রতীকে পিপলস পার্টির আবদুস সাত্তার টেলিভিশন প্রতীকে বিএনএফ এর আলমগীর হোসেন মুরাদ প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।
আওয়ামী লীগের মোতাহার হোসেন বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ২ লাখ ৬৩ হাজার ৬২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ১২ হাজার ১ শত ৫৭ ভোট। কারচুপির অভিযোগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, লালমনির হাট-১ আসনে প্রথম, অষ্টম, নবম, দশম একাদশ সংসদে আওয়ামী লীগ, দ্বিতীয় এবং ১১ দিন মেয়াদের ৬ষ্ট সংসদে বিএনপি, তৃতীয় সংসদে স্বতন্ত্র, চতুর্থ, পঞ্চম ও সপ্তম সংসদে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা বিজয়ী হন। এই আসনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক অবস্থা মজবুত। সেই ক্ষেত্রে ভোটের লড়াই হবে জাতীয় পার্টির মধ্যে ।

বিএনএ/ শিরীন, ওজি, ওয়াইএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ