দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সর্বদা প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) সকালে শরিয়তপুরের জাজিরায় শেখ রাসেল সেনানিবাসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ আহ্বান জানান তিনি। গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি।
এসময় শেখ হাসিনা বলেন, সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ আমরা এই নীতিতে বিশ্বাসী। আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে চাই না। কিন্তু যদি কোন বহিঃশত্রু হামলা করে তাহলে আমরা যথাযথভাবে মোকাবেলা করবো।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার দেশের সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন, শিক্ষিত ও সমৃদ্ধশালী করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। আশা প্রকাশ করেন, সশস্ত্র বাহিনীর প্রত্যেকটি সদস্য তাদের নিজ নিজ বুদ্ধি, পেশাগত দক্ষতা ও কর্তব্যনিষ্ঠার মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে তাদের সুনাম বৃদ্ধি করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে হত্যার পর সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়। পরে প্রায় ১৯ থেকে ২০ বার ক্যূ সংঘটিত হয়। এতে সশস্ত্র বাহিনীর অনেক কর্মকর্তা ও সৈন্য নিহত হয়। সরকার প্রধান বলেন, দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করে।
মাওয়া ও জাজিরা সেনানিবাসের নামকরণ তাঁর ছোট ভাই শেখ রাসেলের নামে করার জন্য সেনা প্রধান এবং সেনা সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা। বলেন, বড় হওয়ার পর শেখ রাসেলের ইচ্ছা ছিল বড় হলে আর্মি অফিসার হওয়ার।
পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ২০০১ সালে সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করলেও পরে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে এটা বন্ধ করে দেয়। তারা সেতুটি অন্যত্র সরিয়ে নিতে চেয়েছিল। ক্ষমতায় এসে তাঁর সরকার সেতু নির্মাণে এগিয়ে যায়, কিন্তু মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগে সেতুর কাজে অর্থায়ন থেকে সরে দাঁড়ায় বিশ্ব ব্যাংক। তবে তিনি চ্যালেঞ্জ জানালে বিশ্বব্যাংক অভিযোগ তদন্তে ব্যর্থ হয় এবং কানাডার আদালতেও কোন দুর্নীতি খুঁজে পায়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেড ও সেনানিবাস প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেডের চৌকস কন্টিনজেন্টের রাষ্ট্রীয় অভিবাদন গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদও বক্তব্য রাখেন।
নবম পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং এবং সাভার এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল শাহীনুল হক শেখ রাসেল ক্যান্টনমেন্টের সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে শেখ রাসেল সেনানিবাসের ওপর একটি অডিও-ভিজুয়াল ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
বিএনএ/ জিএন/ এ আর