বিএনএ ডেস্ক:নারায়ণগঞ্জে হরতাল চলাকালে হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের হামলার শিকার হয়েছেন অন্তত ১০ সংবাদকর্মী। এ সময় তাদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
নারায়ণগঞ্জের শিমরাইল-সাইনবোর্ড এলাকায় রোববার (২৮ মার্চ) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সহিংতা চলাকালে হামলার শিকার হন সংবাদকর্মীরা।
হরতালে সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জ শহরসহ উপজেলা শহরে ব্যবসা-বাণিজ্য, যান চলাচল কার্যত স্বাভাবিক থাকলেও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত তাণ্ডব চালায় হরতাল সমর্থকরা। যান চলাচল বন্ধ রাখতে বাঁশ, কাঠ ও টায়ার জ্বালিয়ে সড়কে অবস্থান নেয়। হরতাল না মেনে গাড়ি চলাচল করায় বেশকিছু যানবাহন ভাঙচুর ও ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ পিকেটারদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ বাধে। দফায় দফায় সংঘর্ষে বিকেল ৩টা পর্যন্ত পুলিশ, পিকেটার ও পথচারীসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
এ সব ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে সকাল থেকে মাঠে ছিলেন ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের সংবাদকর্মীরা। সকালে শিমরাইল মোড়ে ছবি তুলতে গেলে পিকেটারদের মারধরের শিকার হন দৈনিক নয়াদিগন্তের নারায়ণগঞ্জে কর্মরত সংবাদকর্মী। নাম না প্রকাশের শর্তে তিনি বলেন, পিকেটাররা সড়ক অবরোধ করে আগুন ধরাচ্ছিল, সেই ছবি তুলতে গেলে তারা মোবাইল কেড়ে নিয়ে মারধর করে৷ সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর তারাও ক্ষিপ্ত হয়।
একই স্থানে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে দুপুরে মারধের শিকার হন দৈনিক সংবাদের নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি সৌরভ হোসেন সিয়াম। সিয়াম বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জের মাদানীনগর মাদ্রাসার সামনে কয়েকটি বাস ও ট্রাকে আগুন দেওয়া হয়। কয়েকটি গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। দুপুর ২টার দিকে পোড়ানো বাসের ছবি তুলতে গেলে ফুটওভার ব্রিজের নিচে সিয়ামকে মারধর করে হেফাজতের কর্মী-সমর্থকরা৷ দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাকে গাছ কাটা করাতকলের ভেতর অবরুদ্ধ করে। তার মোবাইল-পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নেয়৷ মোবাইলে ধারণ করা ছবি ও ভিডিও মুছে ফেলে৷ প্রায় ২০ মিনিট অবরুদ্ধ থাকার পর ছাড়া পান সিয়াম৷
এ ঘটনার পর দুপুরে সাইনবোর্ড মোড়ে পিকেটারদের রোষে পড়েন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের মৌ খন্দকার ও তার দুই সহকর্মী। এ সময় পিকেটাররা চ্যানেলের গাড়ি ভাঙচুর ও চালককে মারধর করে।
ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের রায়হান কবির মারধরের শিকার হন। তার ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয় পিকেটাররা।
দুপুর আড়াইটার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় প্রো-অ্যাক্টিভ হাসপাতালের সামনে নিউজ টোয়েন্টিফোর টেলিভিশনের গাড়ি আটকে ভাঙচুর চালানো হয়৷ গাড়িতে থাকা নারী সংবাদকর্মী ও চালক হেফাজতের নেতাকর্মীদের রোষানলে পড়েন৷ গাড়ি ফেরত আনতে সাংবাদিকরা এগিয়ে গেলে তাদের উদ্দেশে ঢিল ছুড়তে থাকে পিকেটাররা৷ কয়েকবার ব্যর্থ চেষ্টার পর পুলিশ ও বিজিবির সহায়তায় গাড়িটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়।