বিএনএ, কক্সবাজার:কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে পেকুয়ার মাগনামা বাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার(২৮ ডিসেম্বর) তাকে আদালতে পাঠিয়ে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার(২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ ইলিয়াছ।
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান,মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা আসামি ওয়াসিমের সম্পৃক্ততা পেলে গোয়েন্দা তথ্য, তথ্য প্রযুক্তি ও র্যাবের সাথে এক অভিযানে আবু সৈয়দ হত্যাকান্ডের প্রাথমিক ভাবে তদন্তে প্রাপ্ত আসামি ওয়াসিমকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি জানান, আবু সৈয়দ মৃত্যুর পূর্বে ফেইসবুক লাইভে এসে আসামী ওয়াসিম এর কথা বলে গিয়েছেন যে, ওয়াসিম তাকে মেরে ফেলবে। এছাড়াও তিন জন গ্রেফতারকৃত আসামি গ্রেফতারের পরে ওয়াসিমের সম্পৃক্ততার কথা বলে গিয়েছে। নিহত সৈয়দের পরিবার আদালতে ওয়াসিমের নাম তালিকা ভুক্ত করতে আবেদন করেছেন।
ধৃত ওয়াসিম প্রথমে শিবির হয়ে জামায়াত, বিএনপির সাথে জড়িয়ে অতীত অপকর্ম ঢাকতে চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে জাফর আলম এমপির হাত ধরে আওয়ামী লীগে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করলেও ত্যাগী আওয়ামী লীগের তীব্র প্রতিবাদের মুখ সেই চেষ্টা বিফল হয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মগনামার সাবেক চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম এক সময় দুধর্ষ শিবির ক্যাডার ও যুদ্ধাপরাধ মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত জামায়েত নেতা মীর কাশেম আলীর দেহরক্ষী ছিলেন। এলাকায় ফিরে বিএনপির রাজনীতিতে যোগ দিয়ে ধানের শীষের প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে চেয়ারম্যান র্নিবাচিত হন।
এরপরই জড়িয়ে পড়েন ইয়াবা ব্যবসা ও সাগরে ট্রলার ডাকাতির মতো ঘৃণ্য অপরাধে। এছাড়া এলাকায় নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে চাঁদাবাজী, দখলবাজীসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে যান। তার হাতে নির্যাতিত হয়েছেন প্রায় অর্ধশত পরিবার। বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলমের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ওয়াসিম পেকুয়ায় জাফর আলমের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে থাকেন। তার হেফাজতে এ. কে. ৪৭ রাইফেলের মতো অত্যাধুনিক বিদেশী অস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রের মজুদ রয়েছে বলে বলে জানান তারা।
মামলার এজাহার ও নথিপত্র মতে, গত ১০ অক্টোবর বিকাল ৩টার দিকে আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জেরে আবু সৈয়দকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। এমনকি নিহতের একটি পা কেটে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এই ঘটনায় আবু সৈয়দের স্ত্রী সহ ৪ জন গুরুতর আহত হন।
নিহতের ছেলে সৈয়দ মোহাম্মদ ইমন ১১ অক্টোবর ২৪ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করে পেকুয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গত ১৯ নভেম্বর মামলার বাদী সৈয়দ মো. ইমন মগনামার সাবেক চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিমকে মামলার আসামি করে আদালতে আবেদন করেন।
এর প্রেক্ষিতে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. জাহেদ হোসাইন ওয়াসিম চেয়ারম্যান জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
বিএনএ/ এইচএম ফরিদুল আলম শাহীন, ওজি