কিছুদিন পরই ইয়ার মোহাম্মদ খান রেণুকে নিয়ে জেলগেটে আমার সাথে দেখা করতে আসলে তাঁকেও জেলগেটে গ্রেফতার করে। ইয়ার মোহাম্মদ খান ঢাকা থেকে এমএলএ হয়েছিলেন।
আজ প্রকাশিত হলো পর্ব : ৩২৬
সেখান থেকে এসে পথে কয়েকজন কর্মীর সাথে দেখা করতে চেষ্টা করলাম, কাউকেও পাওয়া গেল না। আমি সরকারি গাড়ি ছেড়ে দিয়ে রিকশা ভাড়া করে বাড়ির দিকে রওয়ানা করলাম। দেখলাম, কিছু কিছু পুলিশ কর্মচারী আমার বাড়ি পাহারা দিচ্ছে। আমি রিকশায় পৌঁছালাম, তারা বুঝতে পারে নাই। রেণু আমাকে খেতে বলল, খাবার খেয়ে কাপড় বিছানা প্রস্তুত করে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব এহিয়া খান চৌধুরীকে ফোন করে বললাম, “আমার বাড়িতে পুলিশ এসেছিল, বোধহয় আমাকে গ্রেফতার করার জন্য। আমি এখন ঘরেই আছি গাড়ি পাঠিয়ে দেন।”
তিনি বললেন, “আমরা তো হুকুমের চাকর। গাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছি, আপনি প্রস্তুত হয়ে থাকুন। আপনাকে গ্রেফতার করার জন্য বারবার টেলিফোন আসছে।” আমি তাঁকে ধন্যবাদ দিয়ে ফোন ছেড়ে দিলাম। রেণু আমার সকল কিছু ঠিক করে দিল এবং কাঁদতে লাগল। ছোট্ট ছোট্ট ছেলেমেয়েরা ঘুমিয়ে পড়েছে। ওদের ওঠাতে নিষেধ করলাম। রেণুকে বললাম, “তোমাকে কি বলে যাব, যা ভাল বোঝ কর, তবে ঢাকায় থাকলে কষ্ট হবে, তার চেয়ে বাড়ি চলে যাও।”
বন্ধু ইয়ার মোহাম্মদ খানকে বলে গিয়েছিলাম, যদি রেণু বাড়ি না যায় তা হলে একটা বাড়ি ভাড়া করে দিতে। ইয়ার মোহাম্মদ খান ও আল হেলাল হোটেলের মালিক হাজী হেলাল উদ্দিন রেণুকে বাড়ি ভাড়া করে দিয়েছিল এবং তখন দেখাশোনাও করেছিল। কিছুদিন পরই ইয়ার মোহাম্মদ খান রেণুকে নিয়ে জেলগেটে আমার সাথে দেখা করতে আসলে তাঁকেও জেলগেটে গ্রেফতার করে। ইয়ার মোহাম্মদ খান ঢাকা থেকে এমএলএ হয়েছিলেন।
পরিকল্পনা : ইয়াসীন হীরা
গ্রন্থনা : সৈয়দ গোলাম নবী
সম্পাদনায় : মনির ফয়সাল
সূত্র: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী, প্রকাশনা- দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড, পৃষ্টা নম্বর:২৭১।
আগের পর্ব পড়ুন : বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পর্ব : ৩২৫