17 C
আবহাওয়া
১১:৩৩ পূর্বাহ্ণ - ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ৯ লাখ কর্মসংস্থানে বিশ্বব্যাংকের ৩২৮৫ কোটি টাকা ঋণ

৯ লাখ কর্মসংস্থানে বিশ্বব্যাংকের ৩২৮৫ কোটি টাকা ঋণ

বিশ্বব্যাংক

বাণিজ্য ডেস্ক: অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া দেশের প্রায় ৯ লাখ গ্রামীণ তরুণকে কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা হতে সহায়তা করতে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের (৩০ কোটি ডলার) একটি চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংক। এসব তরুণের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ নারী। বর্তমান বিনিময় হার (১০৯ টাকা ৫০ পয়সা) হিসাবে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ৩ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা।

রোববার (২৭ আগস্ট) বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে এ-সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরিফা খান এবং বিশ্বব্যাংকের পক্ষে সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক চুক্তিতে সই করেন। বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দ্য ইকোনমিক অ্যাকসিলারেশন অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স ফর এনইইটি (ইএআরএন) প্রকল্পের আওতায় এই ঋণ দেবে ওয়াশিংটনভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থাটি। প্রকল্পের আওতায় বেকার যুবকদের শিক্ষা এবং কর্মসংস্থান লাভে বাধা দেয় এমন বিষয়গুলো দূর করা হবে। এটি তাদের দক্ষতা প্রশিক্ষণ, বিকল্প শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা হতে সহায়তা করবে, যারা শিক্ষা, কর্মসংস্থান বা প্রশিক্ষণের (এনইইটি) আওতায় নেই। প্রকল্পটির আওতায় বিভিন্ন দক্ষতা বিকাশের সুযোগ দিতে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন এবং অনলাইন ও অফলাইন প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

এসব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গ্রামীণ তরুণদের, বিশেষ করে নারীদের জন্য সুবিধাজনক স্থানে স্থাপন করা হবে। প্রকল্পটি উদ্যোক্তা কার্যক্রমে প্রতিযোগিতামূলক অর্থায়ন ও মেন্টরশিপ সহায়তাও দেবে। এই প্রকল্পটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের, বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের বৃত্তিমূলক মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করতে সহায়তা করবে। তরুণদের দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টিতে প্রকল্পটি যোগাযোগ ও সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক প্রচার শুরু করবে। তরুণদের, বিশেষ করে নারীদের উদ্বুদ্ধ করতে উপবৃত্তি, পরীক্ষার ফি ও পাঠ্যপুস্তকের ক্ষেত্রেও প্রণোদনা দেয়া হবে।

বাংলাদেশ ও ভুটানের বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেন, ‘তরুণরাই যেকোনো দেশের ভবিষ্যৎ। এই প্রকল্পের লক্ষ্য প্রতিযোগিতামূলক কর্মশক্তি তৈরি করা, যেখানে কোনো তরুণ বাদ পড়বে না, এটি বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অগ্রাধিকার। প্রকল্পটি দক্ষতা উন্নয়ন, শিক্ষার ধারাবাহিকতা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগের মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক জনশক্তি গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।’

বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) থেকে এই ছাড়ের ঋণ দেয়া হবে এবং পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ এর মেয়াদ ৩০ বছর। বাংলাদেশে বর্তমানে সবচেয়ে বড় আইডিএ প্রোগ্রাম চলমান আছে, যার মোট পরিমাণ ১৫ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশে প্রায় ২৭ শতাংশ তরুণ, অর্থাৎ প্রায় ১ কোটি ২৬ লাখ মানুষকে এনইইটি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এদের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশই নারী, যাদের অধিকাংশ গ্রামীণ এলাকায় বসবাস করেন। তাদের কর্মসংস্থান বাড়াতে প্রকল্পটি দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ দেবে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যানুসারে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি-মার্চের হিসাবে বাংলাদেশে বেকার ছিল ২৫ লাখ ৯০ হাজার। এপ্রিল-জুনের হিসাবে বেকার ২৫ লাখ। দেশে গত তিন মাসে বেকারের সংখ্যা ৯০ হাজার কমেছে।

জরিপের তথ্যানুসারে, জানুয়ারি-মার্চ শেষে দেশে পুরুষ বেকার ছিল ৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং নারী ৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এ বছরের এপ্রিল-জুনের হিসাবে বেকার পুরুষের সংখ্যা ২ দশমিক ৩৪ শতাংশ কমে ১৬ লাখ ৭০ হাজারে দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে বেকার নারীর সংখ্যা ৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ কমে ৮ লাখ ৩০ হাজার হয়েছে।

বিবিএসের সংজ্ঞা অনুযায়ী, কেউ যদি সপ্তাহে ১ ঘণ্টা কাজ করেন তিনি আর বেকার নন। সপ্তাহে ১ ঘণ্টাও কাজের সুযোগ না পেলে সরকারি পরিসংখ্যানে তাদের বেকার হিসেবে ধরা হয়।

বিবিএস জরিপে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বেকারত্বের হার দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ বেকারত্বের হার নেপালে ১২ দশমিক ২ শতাংশ। আফগানিস্তানে এটি ১১ দশমিক ৭ শতাংশ, ভারতে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ এবং পাকিস্তানে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ।

বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ