বান্দরবান : পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় জনপ্রতিনিধিদের বলেন, গরীব ও অসচ্ছল মানুষদের পাশে থাকতে। মন্ত্রী বলেন, দেশের গরীব ও অসচ্ছল মানুষদের স্বাবলম্বি করতে সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদান করার জন্য প্রধানমন্ত্রী জনপ্রতিনিধিদের সবসময়ই পরামর্শ দিয়ে আসছেন। এরই প্রেক্ষিতে দেশব্যাপী বয়স্কভাতা, বিধবা ভাতা, ভিজিডি, ভিজিএফ, হরিজন, বেদে, হিজড়া ভাতা, বিনামূল্যে ছাত্রছাত্রীদের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, গরীব ছাত্রীদের উপবৃত্তি প্রদান, অবৈতনিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালুসহ নানান আর্থিক অনুদান প্রদান করে আসছে আওয়ামী লীগ সরকার।
শুক্রবার(২৮ জুলাই, ২০২৩ খ্রি.) বান্দরবান সদরে রাজার মাঠ প্রাঙ্গণে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের যৌথ উদ্যোগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে অসহায় মানুষের মাঝে রিক্সা বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি এমন মন্তব্য করেন।
সরকার দেশের গরীব ও অসচ্ছল মানুষদের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করছে
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বীর বাহাদুর আরো বলেন, বর্তমান গরীব বান্ধব সরকার দেশের গরীব ও অসচ্ছল মানুষদের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ অব্যাহত রেখেছে। তিনি বলেন, সরকার গৃহহীনদের জন্য জায়গাসহ গৃহ তৈরি করে দিচ্ছে। একটি বাড়ি, একটি খামার, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে মিশ্র ফলের বাগান সৃজন করা। নারীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে গাভী বিতরণ, কৃষিক্ষেত্রে ও গৃহস্থালী কাজে নারীদের স্বাবলম্বি করতে বিভিন্ন কৃষি সরঞ্জাম উপকরণ বিতরণ অব্যাহত রেখেছে সরকার।
পাহাড়ে অনেক উন্নয়ন সরকার
মন্ত্রী বীর বাহাদুর আরও বলেন, যেসব দুর্গম জায়গায় বিদ্যুৎ নাই, সেসব জায়গায় বিদ্যুতের আলো ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে সোলার প্যানেল বিতরণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, পাহাড়ি মানুষের দুর্গম পথে চলাচলের পথ সহজ করতে রাস্তাঘাট, ব্রীজ, কালভার্টসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার অনেক উন্নয়ন করেছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার।
বান্দরবানে ১৪ বছরে ১৪টি কলেজ প্রতিষ্ঠা
মন্ত্রী আরও বলেন, শিক্ষার প্রসারে পার্বত্য অঞ্চলে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে সরকার। বান্দরবান জেলার শিক্ষার ব্যবস্থার উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে মন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, যেখানে বান্দরবানে একটি-দুইটি কলেজ ছিল, বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৪ বছরে ১৪টি কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তিনি বলেন, বান্দরবানের প্রতিটি উপজেলায় হাইস্কুল হয়েছে, কলেজ হয়েছে, রাস্তাঘাট হয়েছে, হাসপাতাল হয়েছে, এ্যাম্বুলেন্স হয়েছে, ফায়ার ব্রিগ্রেড স্টেশন হয়েছে। তিনি বলেন, এখানকার অস্বচ্ছল ভাইয়েরা যারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেলেন, আপনাদের আয়ের সংস্থান এ রিক্সা শুধুমাত্র জীবিকা নির্বাহে ব্যবহার করবেন। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য কামনা করে সকলকে দোয়া করার আহ্বান জানান।
কাউকে পেছনে ফেলে দেশের উন্নয়ন নয়
মন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের সকল শ্রেণীকে একসাথে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। কাউকে পেছনে ফেলে দেশের উন্নয়ন তরান্বিত হবে না। সকলের সমঅধিকার নিশ্চিত এবং সুজলা সুফলা একটি বাংলাদেশ তৈরি করতে সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে অগ্রণী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান পার্বত্য মন্ত্রী।
বান্দরবান সবুজ বিপ্লবের নগরী
মন্ত্রী বান্দরবানকে কৃষি ফলনে সবুজ বিপ্লবের নগরী আখ্যা দিয়ে বলেন, বান্দরবানের উৎপাদিত আম, কাঁঠাল, আনারস, কলা, ড্রাগন ফল বান্দরবানকে সবুজ বিপ্লবের নগরীতে পরিণত করেছে। তিনি বলেন, বান্দরবান খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ জেলায় পরিণত হওয়ার দিকে এগুচ্ছে। আর এসব কিছুর প্রেরণা প্রদানকারী হলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা।
রিক্সা বিতরণ
বান্দরবান জেলা সদরের ২০ জন গরীব ও অসচ্ছল ব্যক্তিকে শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে প্রত্যেককে ১টি করে রিক্সা বিতরণ করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং।
পার্বত্য জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিং ইয়ং ম্রো এর সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এটি এম কাউছার হোসেন, বান্দরবান পৌরসভার মেয়র সৌরভ দাশ শেখর, বান্দরবান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর, সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা নার্গিস আক্তার, সহকারী পুলিশ সুপার মো. মোজাফফর, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জিয়াউর রহমান, সদস্য লক্ষীপদ দাশ, পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সামশুল ইসলাম, বান্দরবান প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক মিনারুল হকসহ বিভিন্ন দপ্তরের সরকারী কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনএ,এসজিএন/ হাসনাহেনা