।।কাইমুল ইসলাম ছোটন।।
বিএনএ, রাঙামাটি : রাঙামাটি শহর থেকে ৭৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত লংগদু সদর ইউনিয়ন। সদর ইউনিয়নের ঝর্নাটিলা গ্রামের সাথে লংগদু উপজেলা সদরের যোগাযোগের জন্য ঝর্নাটিলা সেতু নির্মাণ করা হলেও ছয় বছরেও শেষ হয়নি নির্মাণ কাজ। ফলে ভোগান্তি কমেনি স্থানীয়দের।
স্থানীয়রা বলেন, ঝর্নাটিলা গ্রামে চার শতাধিক পরিবারের বসবাস। তাদের যোগাযোগ সহজ করার জন্য ৭ নং ওয়ার্ডের ঝর্ণাটিলা সেতু নির্মাণ করা হলেও ছয় বছরে নির্মাণ কাজের তেমন অগ্রগতি হয়নি।
স্থানীয়রা আরও বলেন, সরকার সারা দেশে অসংখ্য সেতু ও রাস্তার কাজ করেছে কিন্তু এই সেতুর কাজ করতে এতো সময় কেন লাগছে এটা রহস্যজনক। তাছাড়াও ঝর্নাটিলা গ্রামে উৎপাদিত ফসল ও শাক সবজি বাজারে নিতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় চাষীদের। দীর্ঘদিনে সেতু নির্মাণ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয়রা।
তথ্যমতে, ২০১৭ সালে কাপ্তাই হ্রদ বেষ্টিত ঝর্ণাটিলা গ্রামের সাথে লংগদু উপজেলা সদরের যোগাযোগের জন্য সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ। সে বছরের এপ্রিলে আনুষ্ঠানিকভাবে সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন রাঙামাটি আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার।
সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুটির ঝর্ণাটিলা অংশে পাঁচটি পিলারের কিছু অংশের কাজ করা হয়েছে। তবে লংগদু অংশে কাজ শুরু হয়নি। এখানে চলাচলের একমাত্র মাধ্যম নৌকা। তবে কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়তে শুরু করায় কচুরিপানা এসে নৌকা চলাচলেও বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগ বাড়ছে।
কয়েকজন খেয়াঘাটের মাঝি জানান, প্রতিদিন শতাধিক শিক্ষার্থী লংগদু’র বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য এই পথে যাতায়াত করে। লেকে পানি বেড়ে গেলে চলাচলের জন্য নৌকা একমাত্র ভরসা। কেউ অসুস্থ হলে রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক আহাম্মেদ বলেন, ছয় বছরেও গুরুত্বপূর্ণ একটি সেতুর কাজ শেষ না হওয়া খুব দুঃখজনক। সেতু নির্মাণে জেলা পরিষদ ঠিকই অর্থ বরাদ্দ দেন কিন্তু সেতুর কাজে কোনো অগ্রগতি নেই। শুনেছি চলতি বছরেও কিছু টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ একসাথে দেওয়া হলে ঠিকাদার কাজটিকে দ্রুত এগিয়ে নিতে পারতো।
লংগদু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিক্রম চাকমা বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর সেতুর বিষয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন চলতি অর্থ বছরে কিছু বরাদ্দ দেওয়া হবে। আশা করছি বরাদ্দ পেলে ঠিকাদার নির্মাণ কাজটি শুরু করতে পারবে। ঝর্নাটিলা এলাকাটি উপজেলা সদরের কাছে হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই নাজুক।
এ বিষয়ে জেলা পরিষদের সদস্য আছমা বেগম বলেন, সেতুটির বিষয়ে চেয়ারম্যান মহোদয়ের সাথে আমার কথা হয়েছে। সেতুটি নির্মাণের কাজ প্রক্রিয়াধীর আছে এবং চলতি অর্থবছরে কিছু বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি শীঘ্রই সেতুটির বাকি নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
এদিকে সেতু নির্মাণের অগ্রগতি বিষয়ে জানতে জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী বিরল বড়ুয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার কল ও ক্ষুদেবার্তা দিয়েও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। নানাভাবে চেষ্টা করেও খোঁজ মেলেনি ঠিকাদারেরও।
বিএনএনিউজ/ /এইচ.এম।