বিএনএ,চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ডাকা কর্মবিরতি নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বৈঠকে বসলেও সমাধান ছাড়াই শেষ হয়েছে বৈঠক। তাই দোষীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত কর্মস্থলে যোগ দিবেন না বলে জানিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
বুধবার (২৮ এপ্রিল) বেলা ১২টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত তিনঘণ্টাব্যাপি চমেক হাসপাতালের পরিচালকের সভাকক্ষে বৈঠকে বসেন হাসপাতাল ও চমেক কর্তৃপক্ষ, পুলিশ প্রশাসন এবং দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা। কিন্তু প্রশাসন দাবি আদায়ের আশ্বাস দিলেও দোষীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি বলবৎ থাকবে বলে জানিয়ে দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
বৈঠক শেষে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের ব্রিফিং করে বলেন, চিকিৎসকদের সকল দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। তাদের সাথে প্রয়োজনে আবারও আলোচনা হবে। আশা করছি কর্মবিরতি তারা প্রত্যাহার করে নিবে।
চমেক হাসপাতাল ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব ডা. তাজওয়ার রহমান বলেন, কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠক হলেও কোনো সমাধান আসেনি। আমরা কোনো অপরাধীদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে রাজি নাই। আমাদের দাবি, মঙ্গলবার ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ওপর যারা হামলা চালিয়েছে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। দাবি মানা না হলে কর্মবিরতি চলমান থাকবে।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি সুজনের নেতৃত্বে বহিরাগতরা মেডিকেলে হামলা চালায়। এসময় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ছাত্রাবাসে আটকে রাখে এবং কাজে যোগ দিতে দেওয়া হয়নি। জীবনের নিরপত্তা না থাকলে আমরা কেন কাজে যোগ দেবো?
এ বিষয়ে চমেক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন ইসলাম শিমুল বলেন, গতকাল রাতে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলায় কয়েকজন ইন্টার্ন ডাক্তার আহত হন। এছাড়া লাঞ্চিতও করা হয়। এর জের ধরে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি চলছে। এর সুষ্টু বিচার ও মিমাংসা না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মবিরতি চলবে।
কর্মবিরতি প্রত্যাহারে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের তিন দাবি হলো—হামলাকারী চমেকের ছাত্রদের আইনের আওয়াতায় এনে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা। যেসকল বহিরাগতরা এসে হামলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। চমেকের ইনর্টান চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
উল্লেখ, মঙ্গলবার রাতে চমেক ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের জেরে দুজন ইন্টার্ন ডাক্তারসহ পাঁচ জন আহত হন। এর মধ্যে চমেকের ৫৭ ব্যাচের ইন্টার্ন ডাক্তার ও বর্তমান সভাপতি হাবিবুর রহমান এবং ডাক্তার ওসমান গনি। এছাড়া আরও কয়েকজন আহত হন। এর জের ধরে বুধবার সকাল থেকে কোনও ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই তারা এ কর্মবিরতি পালন করছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। ফলে করোনাকালীন এ সময়ে চিকিৎসা নিতে আসা হাসপাতালের রোগীদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
সমস্যা সমাধানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষে বৈঠকে বসেন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, সিএমপির উত্তর বিভাগের ডিসি এবং ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। কিন্তু সেই বৈঠক অমীমাংসিতভাবেই শেষ হয়েছে।
বিএনএনিউজ/মনির