28 C
আবহাওয়া
৬:২৭ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২২, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ভারতের মেডিকেল শিক্ষার্থীরা ইউক্রেনে কেন যায়

ভারতের মেডিকেল শিক্ষার্থীরা ইউক্রেনে কেন যায়

ইউক্রেন থেকে দলে দলে ফিরছে ভারতীয় মেডিকেল শিক্ষার্থীরা

ফেব্রুয়ারির ২৪তারিখ থেকে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে লাখ লাখ বিদেশি ছাত্র ছাত্রী ডিগ্রী অর্জন করার আগেই দেশটি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। এখনও প্রতিদিন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির বিভিন্ন ছোট বড় শহর থেকে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে দেশি বিদেশিরা।খবর সৌদি গেজেট। 

ভারতীয় মেডিকেল শিক্ষার্থীদের একটি দল ২৭মার্চ নতুন দিল্লী ফিরেছে।দলের একজন সদস্য স্বরাজ কুমার। ভারতের উত্তর প্রদেশের এই নাগরিকও স্বপরিবারে দেশে ফিরেন।

ভারতে প্রতি ১৯জনের মধ্যে একজন মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়

২৬বছর বয়সী স্বরাজ কুমার জানান, ১৮হাজার ভারতীয় শিক্ষার্থী ইউক্রেনের মেডিকেল স্কুলে ডাক্তারি পড়ছেন। আর তিনমাস পরেই তিনি ডাক্তারি পাশ করে বেরিয়ে যাবার কথা। ৬বছর সেখানে লেখাপড়া করেছেন। এ অবস্থায় যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়।
দেশে ফিরে স্বরাজ কুমার চোখেমুখে অন্ধকার দেখছেন। ভারতের কোথাও তাকে ভর্তি করাবে না। ভবিষ্যত অন্ধকার।

ভারতের অনেক ছোট ছোট শহর ও গ্রামের ছেলে মেয়েরা ডাক্তার হবার স্বপ্ন দেখেন। সবার ভাগ্যে সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ জোটে না। বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে লেখাপড়ার খরচ অনেক বেশি। সাধারণ পরিবারের পক্ষে তা বহন করা সম্ভব না।

ভারতের মেডিকেল শিক্ষার্থীরা ইউক্রেনে কেন যায়

২০২১সালে ভারতে সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তির জন্য লড়াই করে ১৫লাখ শিক্ষার্থী। কিন্ত তাদের মাত্র শতকরা ৬জন ভর্তির সুযোগ পায়।

পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশনের সূত্র মতে, ২০১৪সালে প্রতি ১১ জনের মধ্যে ১জন ভর্তির সুযোগ পেত। গত বছর সেটা বেড়ে প্রতি ১৯জনের মধ্যে একজনে দাঁড়িয়েছে।

ভারতে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ না পেয়ে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী ইউক্রেনে চলে যায়। তাদের মধ্যে কৃষক পুত্র স্বরাজ কুমার একজন। সে শুধু পরিবারের একমাত্র ডাক্তার পড়ুয়া শিক্ষার্থী নন, গোটা গ্রামেরই একজন প্রতিনিধি।

স্বরাজ কুমার বলেন, ভারতে প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে ৬বছর লেখা পড়া করতে খরচ পড়ে প্রায় দেড়লাখ মার্কিন ডলার।সেখানে ইউক্রেনে খরচ হয় মাত্র ৩০হাজার ডলার। আমাকে ইউক্রেন পাঠাতে বাবাকে জমি বিক্রি করতে হয়। প্রচুর নগদ টাকা কর্জ করতে হয়েছে।

“আমি উদ্বিগ্ন, ডিগ্রী ছাড়া, আমি ভারতে রেজিস্ট্রেশনের যোগ্যতা পরীক্ষা দিতে পারব না। আমার কাছে ডিগ্রি না থাকলে আমি কীভাবে আমার আবেদন পূরণ করব?” স্বরাজ কুমার মন্তব্য করেন।

ড.রেড্ডি বলেন, বিদেশ থেকে পাশ করলেও ভারতে ডাক্তারি করার জন্য রেজিস্ট্রেশন নিতে পরীক্ষার সম্মুখিন হতে হয়। এই পরীক্ষায় ২০১৫-২০১৮সালের মধ্যে শতকরা ১৯জনের বেশি পাশ করেন নি। ২০১৯সালে ২৫% পাশ করলেও ২০২০সালে তা আবার ১৬% এ নেমে আসে।

ড,রেড্ডি আরও বলেন, বিদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ভারতীয় চিকিৎসা অনুশীলনের জন্য শিক্ষার্থীদের “পর্যাপ্তভাবে প্রস্তুত করে না”।

এখন ছাত্ররা ইউক্রেন থেকে ফিরে আসায়, পড়াশোনা মাঝপথে ছেড়ে দেয়ায় অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য উড়িষ্যার কেন্দ্রপাড়া শহরের বাড়িতে ফিরেছেন ইউক্রেনের আর এক মেডিকেল ছাত্রী স্বাতী সাগরিকা সাবত। সে জানায়, সে নিয়মিত অনলাইনে মেডিকেল ক্লাশ চালিয়ে যাচ্ছেন।

ইউক্রেনে তার বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত জুম ক্লাসে শিখছেন অনেক কিছু । সে প্রশ্ন তোলেন, কিন্ত রোগী না দেখে কিভাবে অস্ত্রোপচার করতে হয় তা শিখবো। বাস্তব অভিজ্ঞতা ছাড়া সার্জন হওয়া যায় না। যদিও তার মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ চুক্তি মোতাবেক তার লেখাপড়া শেষ হলে ডিগ্রী দিয়ে দেবার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বিএনএনিউজ২৪,জিএন

 

Loading


শিরোনাম বিএনএ