বিএনএ ক্রীড়া ডেস্ক: বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে ইকুয়েডরের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে পয়েন্ট হারিয়েছে ব্রাজিল।
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় দুই হাজার ৮৫০ মিটার উঁচুতে ইকুয়েডরের রাজধানী কিটোয় অনুষ্ঠিত ম্যাচে ফলাফল নির্ধারণে ভিএআরের ভূমিকা অনেক বড় হয়ে ওঠে।
এই প্রযুক্তির ব্যবহারেই এসেছে দুই লাল কার্ড। ব্রাজিল গোলরক্ষক অ্যালিসন দুইবার বহিষ্কার হলেও ভিএআরে সিদ্ধান্ত পাল্টে যায়। একইভাবে ইকুয়েডরের পক্ষে দুইটি পেনাল্টির সিদ্ধান্তও উল্টে গেছে। সব মিলিয়ে ম্যাচটি ঘিরে বিতর্ক তৈরি হওয়ার উপলক্ষ আছে ঢের।
কিটোয় ম্যাচের ৫ মিনিটেই অধিনায়ক ক্যাসেমিরোর কল্যাণে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। ফিলিপ কুতিনহোর কর্নার ইকুয়েডরের রক্ষণভাগ ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে পুনরায় বল পান কুতিনহো। সেখান থেকে দূরের পোস্ট উঁচু করে বল বাড়ান তিনি। মাথেউস কুইয়ার হেড গোলমুখে ডিফেন্ডার পিয়েরো ইনকাপিয়ের গায়ে লেগে বল গোললাইনের সামনে পড়লে এক টোকায় বল জালে প্রবেশ করার অধিনায়ক ক্যাসেমিরো।
এর দশ মিনিট পর বাজে ট্যাকেলের দায়ে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন স্বাগতিকদের গোলরক্ষক আলেক্সেন্ডার ডমিঙ্গুয়েজ। পোস্ট ছেড়ে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে তার নেয়া শট বলে না লেগে ব্রাজিলের খেলোয়াড়ের গলায় লাগে। পরে ভিএআরের সাহায্যে তাকে লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ ছাড়া করেন রেফারি। ৫ মিনিটের মধ্যে ডিফেন্ডার এমারসনের দ্বিতীয় হলুদ কার্ড লাল কার্ডে পরিণত হলে দশ জনের দলে পরিণত হয় ব্রাজিলও। ম্যাচের প্রথম মিনিটেই ইকুয়েডরের মোইজেজ কাইসেদোকে বাজে ফাউল করে প্রথম হলুদ কার্ড দেখেন তিনি।
২৬তম মিনিটে ৯ জনের দলে পরিণত হতে যাচ্ছিল ব্রাজিল। প্রতিপক্ষের পাল্টা আক্রমণ রুখতে ডি-বক্স থেকে বের হয়ে শট নেন অ্যালিসন। কিন্তু পর মুহূর্তে তার পা লাগে এনের ভ্যালেন্সিয়ার মাথায়। প্রথমে রেফারি লাল কার্ড দেখালেও দীর্ঘক্ষণ ভিএআরে দেখে সিদ্ধান্ত পাল্টে লিভারপুল গোলরক্ষককে হলুদ কার্ড দেন রেফারি।
দ্বিতীয়ার্ধের দশম মিনিটে আবারও ভিএআরের নাটকীয়তা। ব্রাজিলের ডি-বক্সে রাফিনিয়ার চ্যালেঞ্জে ইকুয়েডরের ডিফেন্ডার পেরভিস এস্তুপিনান পড়ে গেলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। তবে ভিএআরে দেখে সিদ্ধান্ত পাল্টান তিনি। কিন্তু ম্যাচের ৭৫তম মিনিটে সাফল্য পায় ইকুয়েডর। গনসালা প্লাতার কর্নারে হেডে গোলটি করেন ফেলিক্স তরেস। পুরো ম্যাচে ইকুয়েডরের ১০টি চেষ্টার এই একটিই লক্ষ্যে ছিল। আর ব্রাজিলের ১২ শটের ৬টি ছিল লক্ষ্যে।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটের বাকি সময়ে আর কোনও গোল না হলেও নাটকীয়তা কম হয়নি। অতিরিক্ত সময় পাঁচ মিনিট দিলেও তা গিয়ে ঠেকে ১২ মিনিটে। কারণ ব্রাজিল গোলরক্ষক অ্যালিসন পাঞ্চ করে বল ক্লিয়ার করতে গেলে মুখে আঘাত করেন স্বাগতিকদের মিডফিল্ডার প্রেসিয়াদোর। সঙ্গে সঙ্গেই রেফারি তাকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখিয়ে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন। তবে সফরকারীদের প্রতিবাদের মুখে দীর্ঘক্ষণ ভিএআরের সাহায্য নিয়ে দুইটি সিদ্ধান্তই পরিবর্তন করেন রেফারি।
এই ম্যাচে ড্রয়ের ফলে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে সর্বোচ্চ ৩১ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড স্পর্শ করলো ব্রাজিল। ১৯৫৪ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত সময়ে নিজেরাই রেকর্ডটি গড়েছিল পাঁচবারের বিশ্বকাপজয়ীরা।
লাতিন আমেরিকা থেকে সবার আগে কাতারের টিকিট নিশ্চিত করা ব্রাজিল ১৪ ম্যাচে ১১ জয় ও তিন ড্রয়ে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে। আর ১৫ ম্যাচে সাত জয় ও তিন ড্রয়ে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে ইকুয়েডর। এই অঞ্চল থেকে শীর্ষ চারটি দল কাতার বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার টিকিট পাবে। পঞ্চম স্থানে থাকা দলকে খেলতে হবে আন্তঃমহাদেশীয় প্লে অফ।
বিএনএনিউজ/আরকেসি