22 C
আবহাওয়া
১২:৩৬ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ১৮, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » দিনাজপুরে আবারও চাষ হচ্ছে শিটি মরিচ

দিনাজপুরে আবারও চাষ হচ্ছে শিটি মরিচ

দিনাজপুরের ঐতিহ্য ‘শিটি মরিচ’

বিএনএ,দিনাজপুর:  দিনাজপুরে আবারও ‘শিটি মরিচ’র চাষাবাদ হচ্ছে। প্রায় দেড়’শ বছরের এতিহ্যবাহী বিলুপ্তপ্রায় এ শিটি মরিচ নতুনভাবে চাষ করে এবার ঘুরছে অনেক কৃষকের ভাগ্যের চাকা।চলতি মৌসুমে এ মরিচের ভাল ফলন হয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে ক্ষেত থেকেই মরিচ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।এ বছর কৃষকরা মরিচের ভাল দামও পাচ্ছেন।

এ মরিচ চাষাবাদের জন্যে খ্যাত দিনাজপুরের বিরল উপজেলায় দিগন্ত বিস্তৃত ক্ষেতের পুরো প্রান্তরজুড়ে গাঢ় সবুজের মধ্যে টকটকে লাল রঙের সমারোহ। থোকা থোকা মরিচ।দৃষ্টিনন্দিত এ মরিচের স্থানীয় নাম ‘বিরলের শিটি মরিচ।’শুধু দেখতেই সুন্দর নয়, এর ঝালের খ্যাতিও রয়েছে। নাম শুনলেই বোঝা যায় এর গুরুত্ব। ঝালসমৃদ্ধ শিটি মরিচ দেখতে চিকন ও লম্বা ধরনের। স্বাদ, রঙ ও সৌন্দর্য্যে দেশের যেকোনো এলাকার মরিচের মধ্যে এটি অনন্য। প্রায় দেড়’শ বছর ধরে বিরলের সর্বত্র শিটি মরিচের আবাদ হলেও সময়ের বির্বতনে এটির চাষ বিলুপ্তপ্রায়। কিন্তু, এ মরিচ নতুনভাবে চাষ করে এবার অনেক কৃষকের ভাগ্যের চাকা ঘুরেছে ।

এ শিটি মরিচের চাষ ধরে রাখতে জগতপুর, বিষ্ণুপুর, রানীপুকুর, মির্জাপুর,কুকড়িবন ও কামদেবপুরসহ বিরল উপজেলার অসংখ্য কৃষক আবারও নতুন করে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। মরিচ ক্ষেতের পরিচর্যা, মরিচ তোলা ও বিক্রি নিয়ে এখন সময় কাটাচ্ছেন, এসব গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক কৃষক।

মরিচ চাষি মোকছেদ আলী জানালেন, তিনি ২২ শতক জমিতে শিটি মরিচ চাষ করেছেন। এ জন্য প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। দুই দফায় ১৭ মণ কাঁচা মরিচ তুলে ৪৮ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। এরপরও জমিতে প্রায় ৫ মণ কাঁচা-পাকা মরিচ আছে।

এলাকার রাষ্ট্রীয় পুরস্কার প্রাপ্ত আদর্শ কৃষক মতিয়ার রহমান মতে, বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে জমি থেকে বোরো ধান তোলার পর উঁচু ডাঙ্গা জমিতে শিটি মরিচের চাষ করা হয়। শ্রাবন মাসে বীজ তৈরির কাজ শুরু হয়। ভাদ্র-আশ্বিন মাসে চারা রোপণ করা হয়। চারা রোপণের দুই মাসের মধ্যে শুরু হয় মরিচ তোলা। নিবিড় পরিচর্যার পর পৌষ মাসের ১৫ দিনের মধ্যে মরিচ তুলতে পারে কৃষকরা।প্রতি মৌসুমে ফলন্ত মরিচের ক্ষেত থেকে তিনবার মরিচ সংগ্রহ করা যায়। শতক প্রতি এক মণেরও অধিক মরিচ পাওয়া যায়। মাঘ মাসে মরিচ পেকে লাল হয়ে যায়।

ডবরল ১০ নম্বর রানীপুকুর ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক আযম জানান,বাপ-দাদাদের আমল থেকে এলাকার কৃষকেরা মরিচের চাষ করেন। মরিচই এলাকার কৃষকদের প্রধান ফসল। এবছর ২ বিঘা জমিতে শিটি মরিচের চাষ করেছেন বলে জানান তিনি।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক তৌহিদুল ইকবাল জানান, শিটি মরিচের শুধু ঝালই বেশি নয়, এর বৈশিষ্ট্যও রয়েছে অনেক। এটি লম্বায় ৬-৭ ইঞ্চি হয়। একবার গাছ লাগালে ৩ থেকে ৪ বার ফসল সংগ্রহ করা যায়। প্রতি শতকে এক দশমিক ২৫ মণের অধিক ফলন হয়। হেক্টর প্রতি ১২ টনের অধিক ফলন পাওয়া যায় বলেও জানান তিনি।

শিটি মরিচের চাষ বিষয়ে উপ-পরিচালক তৌহিদুল ইকবাল জানান, বীজ সংরক্ষণের জন্য ক্ষেতের পাকা মরিচ (টোপা) সংরক্ষণ করা হয়। টোপা রোদে শুকিয়ে ড্রামের মধ্যে রেখে বীজ সংরক্ষণ করা হয়। বপনের মৌসুমে প্রতি কেজি বীজ চার থেকে পাঁচশ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।

বিএনএনিউজ/এস শাহী,আরকেসি

Loading


শিরোনাম বিএনএ