ঢাকা: সম্প্রতি ‘৩৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ের পর বাতিল হচ্ছে ডিজিটাল ভূমি জরিপ প্রকল্প’ কিংবা ‘Digital Land Survey Scrapped’ শীর্ষক ভুয়া খবর/গুজব বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে/ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ধরনের ভুয়া খবর/গুজব জনমনে বিরূপ প্রভাব ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে – যা মোটেই কাম্য নয়।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে বিভ্রান্ত না হবার জন্য বুধবার(২৭ ডিসেম্বর ২০২৩) ভূমি মন্ত্রণালয়ের এক গণবিজ্ঞপ্তিতে অনুরোধ জানিয়ে বলা হয়:
১। প্রকৃত তথ্য হচ্ছে বাংলাদেশ ডিজিটাল ভূমি জরিপ কার্যক্রম (বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে প্রোগ্রাম/বিডিএস প্রোগ্রাম) চলমান রয়েছে;
২। সমগ্র বাংলাদেশে দক্ষভাবে জরিপ পরিচালনা করার উদ্দেশ্যে ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে’ প্রোগ্রাম মূলত দু’টি প্রকল্পের মাধ্যমে সম্পাদন করা হচ্ছিল। যার একটি হচ্ছে ‘ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ করার জন্য ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ডিজিটাল জরিপ পরিচালনার সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প’ (সিডিপি প্রকল্প) এবং অপরটি হচ্ছে ‘ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপের মাধ্যমে ৩টি সিটি কর্পোরেশন, ১টি পৌরসভা এবং ২টি গ্রামীণ উপজেলার ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি স্থাপন প্রকল্প’ (ইডিএলএমএস প্রকল্প);
৩। সিডিপি প্রকল্পে ৩৩৬ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে বলে গুজবে দাবি করা হলেও প্রকৃতপক্ষে প্রকল্পে গাড়ি, অফিস সরঞ্জাম, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা এবং প্রশিক্ষণে এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। দেখা যায় প্রকল্পের মোট ১ হাজার ২১২ কোটি ৫৫ লাখ টাকার বিপরীতে ৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকা, অর্থাৎ শূণ্য দশমিক তিন শতাংশ আর্থিক ব্যয় করে প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে শূণ্য দশমিক আঠাশ শতাংশ। প্রসঙ্গত, সিডিপি প্রকল্পের আওতায় পটুয়াখালীর ইটবাড়িয়া মৌজায় ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলক জরিপ কাজও শেষ হয়েছে;
৪। উপরন্তু, উল্লিখিত প্রকল্প কার্যক্রমের শুরু থেকেই সামসময়িক সময়ে সারা দেশে বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে এর অগ্রগতি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। এছাড়া, প্রায় এক বছর প্রকল্পটি ‘গ’ ক্যাটেগরির প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত থাকার ফলে কোনো বাস্তব অগ্রগতি সম্ভব হয়নি। শুধুমাত্র চলমান অর্থবছরে এ প্রকল্পের বিপরীতে অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যায়। যেহেতু প্রকল্পটি সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়, বিধায় কোনো ভৌত ও আর্থিক অগ্রগতি প্রচেষ্টা চালানো হয়নি। সিডিপি প্রকল্প স্টাডি করে অধিকতর দক্ষ করে নতুনভাবে প্রস্তাব করা হবে;
৫। পক্ষান্তরে, ইডিএলএমএস প্রকল্পটি দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় ৫টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় ভূমি মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করছে। যার অগ্রগতি ২৪ শতাংশের উপরে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ডিজিটাল ভূমি জরিপ কার্যক্রম বর্তমানে পুরোদমে চলমান। নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও চট্টগ্রামে এই প্রকল্পের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে বিডিএস কার্যক্রম চলছে;
৬। অনলাইনে ভূমি বিষয়ক যেকোনো বিভ্রান্তিকর সংবাদ/তথ্য দেখলে তা যাচাই করতে ভূমিসেবা হটলাইন ১৬১২২ (বিদেশ থেকে +৮৮০-৯৬১২৩-১৬১২২) নম্বরে কল, অথবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভূমিসেবা পেজে (www.facebook.com/land.gov.bd) কমেন্ট কিংবা মেসেজ (বার্তা) প্রেরণ, কিংবা ভূমি মন্ত্রণালয়ের দাপ্তরিক পোর্টালে (minland.gov.bd) ভিজিট করা যেতে পারে। এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয়ের দাপ্তরিক পেজেও (www.facebook.com/ minland.gov.bd) নিয়মিত তথ্য আপডেট করা হয়;
৭. উল্লেখ্য, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভুয়া খবর/গুজব ইন্টারনেটে কিংবা অন্য কোনো মাধ্যমে প্রচার করা বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।