ঢাকা: জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। মামলার অপর তিন আসামি হলেন খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মরহুম সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে, এই মামলায় খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন বিচারিক আদালত। তবে তার সেই সাজা বাতিল চেয়ে করা আপিল মঞ্জুর করে বুধবার তাকে খালাস দেন হাইকোর্ট।
রায়ের পর আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মামলার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। তিনি বলেন, “আদালত আমাদের বক্তব্য শুনেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আপিলটি তিনি লাইন বাই লাইন পড়ে দেখেছেন এবং এভিডেন্সগুলো পর্যালোচনা করেছেন। আদালত বলেছেন, আপিলটি আইনগত ভিত্তি পেয়েছে। তাই এটি মঞ্জুর করা হলো।”
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর বিচারিক আদালত রায় দিয়েছিলেন। সেই রায়ে খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এরপর একই বছরের ১৮ নভেম্বর খালেদা জিয়া হাইকোর্টে আপিল করেন।
শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ আপিল গ্রহণ করেন এবং বিচারিক আদালতের অর্থদণ্ডের আদেশ স্থগিত করেন।
এরপর ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ফলে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। পরদিন ৬ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্তির পর তিনি হাইকোর্টে করা আপিল শুনানির জন্য প্রয়োজনীয় পেপারবুক তৈরির আবেদন করেন।
এ রায়ের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা এই মামলার অবসান ঘটল।
২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের সাত নম্বর কক্ষে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক মো: আখতারুজ্জামান (বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি) জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। একইসাথে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। একই সাজা দেয়া হয় মামলার অপর তিন আসামিকেও।
দণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মরহুম সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। ওই সময় হারিছ চৌধুরী পলাতক হন। বাকি আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করেন।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করা হয়। ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তদন্ত শেষে ২০১২ সালে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক।
বিএনএনিউজ২৪, এসজিএন