বিএনএ ব্রাহ্মণবাড়িয়া:শুষ্ক মৌসুমে হঠাৎ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার চরসোনারামপুরে তীব্র নদীভাঙন শুরু হয়েছে। চরের শ্মশানঘাট এলাকায় শুরু হওয়া এ ভাঙনে কমপক্ষে ৪শ বর্গফুট এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে জেলেদের প্রায় তিন থেকে চার লাখ টাকার মাছ ধরার জাল পানিতে ভেসে গেছে। চরম অতঙ্কের মধ্রে রয়েছেন চরবাসী।
চরের বাসিন্দারা জানান, মেঘনা নদীতে জেগে ওঠা আশুগঞ্জের চরসোনারামপুরের শ্মশান ঘাট এলাকায় হঠাৎ করে পানি কুণ্ডলী পাকিয়ে তীরে আঘাত হানে। এতে ওই এলাকার ৪শ বর্গফুট (দৈর্ঘ্য প্রায় ৪০ ফুট প্রস্থ ১০ ফুট) বেশি এলাকা নদীতে তলিয়ে যায়। ওই সময় সেখানে ৮ থেকে ৯জন জেলে মাছ শিকার করছিলেন। তাদের জাল পানিতে ভেসে গেলেও কোনো রকমে তীরে উঠতে সক্ষম হয়েছেন তারা।
এদিকে, শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) সকালে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। ভাঙন প্রতিরোধে চলতি সপ্তাহে জিও ব্যাগ ফেলা হবে বলে জানিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
চরের শ্মশান নির্মাণ কমিটির সভাপতি নিতাই চন্দ্র ভৌমিক, শিক্ষক সুমন চন্দ্র দাস জানান, প্রতি বছর তারা নদীভাঙনের আতঙ্কে থাকেন। ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী সমাধানের দাবি জানিয়েছে তারা।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস বলেন, ভাঙনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন তিনি। ভাঙন এলাকায় জিও ব্যাগ (বালুর বস্তা) ফেলার জন্য ৪০ লাখ টাকার জরুরি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। তবে ঠিকাদার না পাওয়ায় তা করা যাচ্ছে না। তবে চলতি সপ্তাহের মধ্যে ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত জিও ব্যাগ ফেলা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম পারভেজ বলেন, ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অনুরোধ করা হয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া না হলে চরটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ব্লক দিয়ে স্থায়ী ভাঙন প্রতিরোধের দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরবিন্দ বিশ্বাস জানান, ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড দুটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। আশা করি দ্রুত কাজ শুরু হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেঘনা নদীর বুকে জেগে ওঠা চরসোনারামপুরে ব্রিটিশ আমল থেকে জনবসতি। চরের পূর্ব সীমানায় রয়েছে আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের রিভারক্রসিং ৩ নম্বর টাওয়ার। প্রতি বছর বর্ষা শুরু এবং শেষের দিকে টাওয়ার এলাকায় ও চরের মধ্যবর্তী শ্মশান ঘাট এলাকায় বেশি ভাঙন দেখা দেয়।
বিএনএনিউজ/গোলাম সারোয়ার,আরকেসি