বিএনএ,ফেনী : ফেনী শহরের ট্রাংক রোডে জিমনেসিয়াম ব্যবসার আড়ালে আটক রেখে মুক্তিপন আদায় ও নারী দিয়ে আপত্তিকর ভিডিওচিত্র মোবাইল ফোনে ধারন করে সোস্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেওয়ার হুমকির ঘটনায় তোফায়েলসহ চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। শুক্রবার(২৬ আগস্ট) রাতে তাদেরকে মহিপাল থেকে গ্রেফতার করে শনিবার বিকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
র্যাব সুত্র জানায়, একটি বেসরকারী কোম্পানীর কুমিল্লা শাখায় কর্মরত ভুক্তভোগী গত বুধবার দুপুর ১২ ঘটিকায় ফেনীর ট্রাংক রোডে অফিসের কাজ শেষে মদিনা বাসস্ট্যান্ড থেকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের উদ্দেশ্যে দুপর ১২ টা ৪৫ মিনিটে রওয়ানা দেন। বাস ছেড়ে যাওয়ার ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর বিসিক রাস্তার মোড়ে দুই শিক্ষার্থীসহ তিনজন উক্ত বাস থামিয়ে ভুক্তভোগীকে গাড়ী থেকে নামতে বলেন।ওই ভুক্তভোগী গাড়ী থেকে নামার পর তারা তাকে একটি চায়ের দোকানের ভিতরে নিয়ে যায় এবং তার সাথে থাকা ২ হাজার ২ শ টাকা ও মোবাইল ফোন জোরপূর্বক কেড়ে নেয়। পরবর্তীতে তারা সিএনজির মাধ্যমে ফেনী শহরের একটি জিম সেন্টারের নিচ তলার রুমে নিয়ে ওই ভুক্তভোগীকে আটকে রাখে এবং অপহরণকারীরা তাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও চর-থাপ্পর দেয় এবং তার কাছে ১ লাখ টাকা দাবী করে। উক্ত টাকা না দিলে মেরে ফেলার হুমকি দেয় তারা। পরে ভুক্তভোগীর ব্যবহৃত মোবাইল হতে অপহরণকারীরা তার স্ত্রীর কাছে ফোন করে ১ লাখ টাকা দাবী করে এবং উক্ত টাকা না দিলে তার স্বামীকে মেরে ফেলা হবে বলে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে। তখন তার স্ত্রী কোন উপায় না পেয়ে ভয়ে তাৎক্ষনিভাবে বিকাশের মাধ্যমে ৩ হাজার টাকা প্রেরণ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এ কর্মকর্তার সাথে
এক নারীর আপত্তিকর ভিডিওচিত্র মোবাইলে ফোনের মাধ্যমে ধারন করে এবং এসএস পাইপ দিয়ে তাকে পিটিয়ে আঘাত করে।
একপর্যায়ে তার স্ত্রীকে চক্রের সদস্যরা স্বামীর এনআইডি কার্ড ও ব্যাংকের এটিএম কার্ড সাথে নিয়ে আসতে বললে কোন উপায় না পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ১ টার দিকে নগদ ২৫ হাজার টাকা এবং এনআইডি কার্ড, এটিএম কার্ড নিয়ে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে। তখন অপহরণকারী ইমতিয়াজ উদ্দিন তোফায়েল উক্ত টাকা এবং এনআইডি কার্ড, এটিএম কার্ড বুঝে নিয়ে পরবর্তীতে পঁঞ্চাশ হাজার টাকা দাবী করে সাদা কাগজে ভুক্তভোগীর স্বাক্ষর নেয়।পরবর্তীতে ৫০ হাজার টাকা না দিলে ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানালে ধারনকৃত সাজানো ভিডিও চিত্রগুলো সোস্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দিবে বলে হুমকী প্রদান করে তাকে ছেড়ে দেয়।
ছাড়া পাওয়ার পর ওইদিন বিকাল সাড়ে চারটার দিকে র্যাবকে অবহিত করলে অভিযান পরিচালনা করে শুক্রবার রাতে ফেনীর মহিপাল এলাকা হতে অপহরণের সাথে জড়িত আসামী সদর উপজেলার দেবীপুর গ্রামের শাহাবুদ্দিনের ছেলে ইমতিয়াজ উদ্দিন তোফায়েল (৩৪) ও একই গ্রামের আব্দুল হালিমের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন (২৬), মৃত হারুন বাবুর্চির ছেলে জাহিদ হোসেন (১৫), শর্শদী গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আনোয়ার হোসেন (২৫), দাগনভুইয়া ছিলোনিয়া গ্রামের মোঃ কবিরের ছেলে রফিকুল ইসলাম আরিফ (২১) কে গ্রেফতার করে।
ফেনীস্থ র্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক মোঃ নুরুল আবছার জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ মুক্তিপণের জন্য মানুষকে অপহরণ করে পরবর্তীতে তাদের জিম্মি করে পরিবার পরিজনের নিকট হতে মুক্তিপণ আদায় করে আসছে।
বিএনএ/ এবিএম নিজামউদ্দিন, ওজি