বিএনএ, রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের এক শিক্ষার্থী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে মারধর ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন জানিয়ে প্রশাসনের নিকট একটি লিখিত অভিযোগ পাঠান। যা শুক্রবার (২৬ আগস্ট) বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
ওইদিন রাত সাড়ে ৮টায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সুরঞ্জিত প্রসাদ বৃত্ত ও মতিহার হল ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহা। লিখিত বক্তব্যে সুরঞ্জিত প্রসাদ বৃত্ত বলেন, ‘গণমাধ্যমে প্রকাশিত আমার এবং মতিহার হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট একটি অভিযোগ করেন হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. আল-আমিন।’
সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘ঘটনার দিন বিকেলে বঙ্গবন্ধু হলের সামনে আল-আমিন এবং তার বন্ধুদের সাথে তার সাবেক কর্মস্থলের মালিক মার্কেটিং বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী মোমিনুর রহমান এবং গণিত বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী শশীর সাথে তাদের ফ্রিলান্সিং কোম্পানির কোন একটা ঝামেলা নিয়ে কথা বলতে দেখি তখন আমি তাদের কাছে গিয়ে পুরো ঘটনা শুনি। সেখানে আল-আমিনের ১৫ থেকে ২০ জন বন্ধু উপস্থিত ছিল। মোমিনের বক্তব্য অনুযায়ী আল-আমিন তার কোম্পানির কর্মকর্তা ছিলেন এবং পরবর্তীতে আল-আমিন মিথ্যা বলে চাকুরি ছেড়ে দেন। মোমিনের কোম্পানির অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও ক্লায়েন্ট সে ছলছাতুরির মাধ্যমে নিয়ে যায় এবং মোটা অংকের টাকা আত্মসাত করেন। পরবর্তীতে আল-আমিন তার দোষ স্বীকার করে নেয় এবং মোমিনের কোম্পানির সকল ক্ষতি পুষিয়ে দিবে বলে সবার সামনে স্বীকারোক্তি দেয়। তার এ প্রতারণার বিষয়টি তার সম্মান রক্ষার্থে প্রচার না করার জন্য মোমিন এবং শশীকে অনুরোধ জানায়। এরপরে সন্ধ্যার সময় দুই পক্ষ টুকিটাকি আসেন। মোমিন, শশী, আল-আমিন এবং তার বন্ধুদের উপস্থিতে বিষয়টির সুরাহা হয়। সেখানেই সেই বিষয়টির সমাপ্তি ঘটে।’
অর্থ ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সুরঞ্জিত প্রসাদ বলেন, ‘আমার এবং ভাস্কর সাহার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যে, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। মারধর কিংবা অর্থ লেনদেনের সাথে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
প্রসঙ্গত, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. আল-আমিন গত বৃহস্পতিবার কুরিয়ারে একটি লিখিত অভিযোগ পাঠান। সেখানে তিনি বলেন, ১৭ আগস্ট বিকেল সাড়ে চারটায় পরীক্ষা শেষে বের হওয়ার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সুরঞ্জিত প্রসাদ বৃত্ত ও মতিহার হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহা তাঁকে রবীন্দ্রভবন থেকে বঙ্গবন্ধু হলের ৩৩১ নম্বর কক্ষে নিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর সেখানে মুমিনুর রহমান, ফয়সাল আহমেদ ওরফে শশী, তাকি আহমেদসহ অনেকে আসেন। কিছুক্ষণ পর মুমিনুর রহমানের সঙ্গে আসা লোকজন তাঁকে প্রচুর মারধর করেন। মুমিনুর তাঁর মাথায় দুই লিটার পানির বোতল ও লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। তিনি এক পর্যায়ে অচেতন হয়ে যান। এ সময় তাঁর মুঠোফোন থেকে ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেন তাঁরা।
বিএনএ/সাকিব, এমএফ