।। সৈয়দ শাকিব ।।
বিএনএ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক দুই সহসভাপতি মইনুল ইসলাম রাসেল ও মুজিবর রহমান সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারকে পায়ে ধরে ক্ষমা চাওয়ার একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি গত ২০ মার্চের হলেও তা দুইদিন আগে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসে।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য শিরীণ আখতার তার চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ি এলাকার বাসা থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠতে যাচ্ছেন। এমন সময চবির শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন সাবেক নেতা উপাচার্যের পথরোধ করেন। এ সময়ে ভিডিওতে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক দুই সহসভাপতি মইনুল ইসলাম রাসেল ও মুজিবর রহমান উপাচার্যের পায়ে ধরে অনুনয় বিনয় করছেন। এ সময় এ দুই নেতার পাশে ছিলেন আরেক সহসভাপতি রোমেল হোসেন।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ও উপগ্রুপ “একাকার’র” নেতা মইনুল ইসলাম বলেন, গত বছরের ৩০ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৪১তম সিন্ডিকেট সভায় মেরিন সায়েন্স বিভাগে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে আমার কিছু কর্মী উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুর ও শাটল ট্রেন অবরোধ করেন। এ ঘটনায় আমাকে প্রধান অভিযুক্ত করে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আমি এর আগে অনেকবার ম্যামকে অনুরোধ জানিয়েছি যে, ম্যাম ভুল করেছে। আমাকে ক্ষমা করে দেন। তদন্ত কমিটি থেকে নামটা বাদ দিয়ে দেন। কিন্তু ম্যাম আমার কথা শোনেননি। সর্বশেষ বুধবার (২০ মার্চ) ম্যামের পায়ে ধরে বলেছিলাম, আপনি মায়ের মতো আমাকে ক্ষমা করে দিন। কিন্তু ম্যাম শুনেনি।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি ভাঙচুরের দায় স্বীকার করে একাকারের নেতা ও চবি শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মঈনুল ইসলাম ওই সময় অনেকটা দাম্ভিকতার সঙ্গে বলেছিলেন, ‘মেরিন সায়েন্স বিভাগে ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য রাইয়ান আহমেদ শিক্ষক পদের জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সিন্ডিকেট সভায় তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। অথচ রাইয়ান আহমেদ ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদকের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন। তার চেয়ে কম যোগ্যতাসম্পন্নদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সিন্ডিকেট।’
মঈনুল আরও বলেন, ‘বিভিন্ন সময় যারা সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, তাদের শিক্ষক হিসেবে নেওয়া হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া মিঠু রঞ্জন সরকারকে শিক্ষক হিসেবে নেওয়া হয়েছে। আবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের আবাসিক হল দেশনেত্রী খালেদা জিয়া হলের নামফলক যখন ছাত্রলীগ মুছে দেয়, তখন এক শিক্ষার্থী নাবিলা নুসরাত এর প্রতিবাদ জানিয়েছিল। তাকেও মেরিন সায়েন্সে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি ও জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য ছাত্রলীগ করে আসা প্রার্থীদের বাদ দেওয়া হয়েছে। তাই সংগঠনের কর্মীরা সিন্ডিকেট সভা চলাকালে ভাঙচুর করেছে।
এক বছর তিন বছর পর সেই ‘বাঘ’ ছাত্রলীগ নেতা উপাচার্য বিদায়ের দুইদিন আগে বিড়াল হয়ে তার বাসভবনে গিয়ে পা ধরে ক্ষমা চেয়ে অপরাধ থেকে মুক্তি পাওয়ার ঘটনাটি ক্যাম্পাসে বেশ আলোচনা- সমালোচনা ঝড় তুলেছে।
বিএনএনিউজ/ বিএম