বিএনএ: আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টিতেও শুভসূচনা বাংলাদেশের, প্রথম ম্যাচের জয়ে এগিয়ে গেল টাইগাররা। বৃষ্টির কারণে ডিএলএস মেথডে আইরিশদের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় আট ওভারে ১০৪ রানের। সেই লক্ষ্য তাড়ায় ৫ উইকেটে ৮১ রানে থামে সফরকারীদের ইনিংস।
তবে খেলতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল আইরিশরা। ওপেনারদের ঝোড়ো শুরুতে দুই ওভারে ৩২ রান আসে সফরকারীদের। তবে এরপরই রানের লাগাম টেনে ধরেন বাংলাদেশি বোলাররা। শেষ পর্যন্ত আর প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়তে পারেনি আয়ারল্যান্ড। ফলে জয় দিয়েই টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করল সাকিব আল হাসানের দল।
সোমবার (২৭ মার্চ) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বৃষ্টি আইনে আয়ারল্যান্ডকে ২২ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদার শুরুতেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকেন। প্রথম দুই ওভারে ২৫ রানে উড়ন্ত সূচনা পায় বাংলাদেশ। এই রেশ থাকে পুরো পাওয়ার প্লে জুড়ে। আইরিশ বোলারদের তুলোধুনো করে ৬ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৮১ রান সংগ্রহ তোলে লাল-সবুজের দল।
ষষ্ঠ ওভারে এক ছক্কা ও তিন চারে রনি তালুকদার নেন ১৯ রান। আর এতেই টি-টোয়েন্টির পাওয়ার প্লেতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ছিল ৭৬ রান। তা ছাড়িয়ে নতুন রেকর্ড গড়লেন লিটন ও রনি।
দলীয় ৯১ রানে আউট হন লিটন দাস। ২৩ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কা মেরে ৪৭ রান করেন তিনি। অর্ধশতক মিস হলেও বাংলাদেশের পক্ষে টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম দেড় হাজার রানের রেকর্ড গড়েন লিটন। ৬৮ ইনিংসেই দেড় হাজার রান করে ছাড়িয়ে গেছেন তামিম ইকবালকে। সমান সংখ্যক রান করতে তামিম ইকবালের লেগেছিল ৭১ ইনিংস।
লিটনের অর্ধশতক না পাওয়ার দিনে বাংলাদেশের হয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন রনি তালুকদার। লিটনের ওপেনিং পার্টনার ২৩ বলে পূরণ করেছেন অর্ধশতক। বলের হিসেবে এটি বাংলাদেশের পক্ষে তৃতীয় দ্রুততম অর্ধশতক। শেষ পর্যন্ত ৩৮ বলে ৬৭ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে থামেন রনি। তার ইনিংসে ছিল ৭টি চার ও ৩টি ছয়ের মার।
ব্যাট হাতে এদিন ব্যর্থ নাজমুল হোসেন শান্ত। ট্যাকটরের বলে স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হওয়ার আগে করেন মাত্র ১৪ রান। তবে সেকেন্ড ডাউনে সুযোগ পেয়ে তা কাজে লাগিয়েছেন শামিম হোসেন। অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপজয়ী এই মারকুটে ব্যাটার ২০ বলে খেলেছেন ৩০ রানের দারুণ এক ইনিংস। আদায়ারের বলে স্টার্লিংয়ের হাতে ধরা পড়ার আগে ২টি চার ও ১টি ছয় হাঁকান তিনি।
রনি-শামিমের বিদায়ের পর সাকিব-তাওহিদ হৃদয় মিলে বাংলাদেশকে ২০০ পার করেন। ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে ৬ মেরে ২০০ পূর্ণ করেন তাওহিদ। তবে ক্রেইগ ইয়ংয়ের পরের বলেই ক্যাচে পরিণত হন তিনি। ৮ বলে ১৩ রান করেন হৃদয়। ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকানো সাকিব এদিন ১৩ বলে ২০ রান করে অপরাজিত থাকেন। এরপরই নামে বৃষ্টি।
বৃষ্টির কারণে বাংলাদেশ আর ব্যাটিংয়ে নামার সুযোগ পায়নি। দেড় ঘণ্টার বৃষ্টিতে আয়ারল্যান্ডও হারায় ১২ ওভার। আট ওভারে তাদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১০৪ রান।
লক্ষ্যতাড়ায় শুরুতেই চমকে দেন দুই আইরিশ ব্যাটার। মারকুটে ব্যাটিংয়ে প্রথম দুই ওভারে দলকে প্রয়োজনের থেকেও এগিয়ে রাখেন আইরিশ ওপেনাররা। তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে আসেন হাসান মাহমুদ। মাত্র ৫ রান দিয়ে তিনি তুলে নেন প্রথম উইকেট।
পরের ওভারে তাসকিনও জাদু দেখান। একই ওভারে তুলে নেন তিন আইরিশ ব্যাটারের উইকেট। সাকিব আল হাসান ষষ্ঠ ওভারে এসে দেন পাঁচ রান। তাতেই ম্যাচের লাগাম টেনে ধরে বাংলাদেশ। নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে তাসকিন আরও একটি উইকেট নেন। তাতে শেষ পর্যন্ত ৮১ রানে থামে আইরিশদের ইনিংস।
বিএনএনিউজ/এ আর
