17 C
আবহাওয়া
১:৫৬ পূর্বাহ্ণ - ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » আওয়ামী লীগের নারী আসনে কারা থাকছে?

আওয়ামী লীগের নারী আসনে কারা থাকছে?


বিএনএ, ডেস্ক :  দ্বাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে একাদশ সংসদের বেশির ভাগ সংসদ সদস্য বাদ পড়বেন। যুক্ত হবেন দলের জন্য কাজ করা ত্যাগী নতুন মুখ। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন, তাঁদের দলের হয়ে ৩৫-৪০ জন নারী নতুন করে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হতে পারেন। এর মধ্যে দু-একজনের মন্ত্রিসভায় জায়গা পাওয়ার বিষয়েও আলোচনা রয়েছে। মহিলা আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠন ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার নারীনেত্রীরা আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয় ও নেতাদের কাছে দৌড়ঝাঁপ করছেন।

জাতীয় সংসদে ৩০০ আসনের বাহিরে ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসন রয়েছে। বর্তমান সংসদে আওয়ামী লীগের আসন ২২৩টি। এরপরই স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন ৬২ জন। এর মধ্যে ৫৮ জনই আওয়ামী লীগের নেতা-সমর্থক। গত সংসদে যেসব জেলা থেকে সংরক্ষিত সংসদ সদস্য করা হয়নি, সেসব জেলা এবার অগ্রাধিকার পাবে। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের ভাগে পাওয়া সংরক্ষিত নারী আসনগুলোতেও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হবে।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের যোগ করলে এবার আওয়ামী লীগ ৪৭ জন সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন দিতে পারবে। একাদশ সংসদে আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন ৪৩ জন। এবার আওয়ামী লীগের ভাগ থেকে ১৪ দলের শরিকদের পছন্দের তিন-চারজন নারীকে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য করার সম্ভাবনা রয়েছে।

আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত নারী আসনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সংরক্ষিত নারী আসনে একটা বড় সংখ্যায় মনোনয়ন পান পিতা বা স্বামীর অবদানের কারণে। বিশেষ করে ১৯৭০ ও ১৯৭৩ সালে এমএনএ ছিলেন, এমন নেতাদের পরিবারের সদস্যরা গুরুত্ব পান। ১৯৭৫–পরবর্তী সময়ে দলে ভূমিকা রেখেছিল, এমন পরিবারের সদস্যদেরও সংসদ সদস্য করা হবে। এ ছাড়া ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা দেশে ফিরে দায়িত্ব নেওয়ার পর যাঁদের পাশে পেয়েছিলেন, এমন নারীনেত্রীদের কেউ কেউ জায়গা পাবেন।

গত সংসদে আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত নারী আসন ছিল ৪৩টি। এর মধ্যে খাদিজাতুল আনোয়ার, রুমানা আলী, সুলতানা নাদিরা ও তাহমিনা বেগম এবার সরাসরি আসনে জয়ী হয়েছেন। বাকি যে ৩৯ জন আছেন, এর মধ্যে অল্প কয়েকজনকে ফিরিয়ে আনা হতে পারে। বাকি সবাই নতুন হবেন।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানিয়েছে, সংরক্ষিত নারী আসনে দলের মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। যেমন যাঁরা জোট বা দলের অন্যদের সুযোগ করে দিতে সরাসরি নির্বাচনে মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছেন। এ বিবেচনায় রয়েছেন সাবেক শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান এবং দলের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী। তারা এবার জাতীয় পার্টির কারণে মনোনয়ন পেয়েও নির্বাচন করতে  পারেননি।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও ক্ষুদ্র জাতিসত্তা থেকেও দু-তিনজন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য করা হতে পারে। বিগত সংসদে আরমা দত্ত, বাসন্তী চাকমা ও গ্লোরিয়া ঝর্না ছিলেন। তাঁদের মধ্যে আরমা দত্ত আবারও থেকে যেতে পারেন বলে দলে আলোচনা চলছে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অনেক নারী নেত্রী সরাসরি আসনে দলীয় মনোনয়ন পাননি। মহিলা আওয়ামী লীগ ও যুব মহিলা লীগেও অনেকে মনোনয়ন চেয়ে পাননি। তাঁদের মধ্য থেকে বেশ কয়েকজনকে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য করা হতে পারে।

আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ মনোনয়ন পেয়েও নাগরিকত্ব জটিলতায় সরাসরি আসনে নির্বাচন করতে পারেননি। তাঁকে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য করার কথা আলোচনায় আছে। অর্থ ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান গত সংসদে সংরক্ষিত আসনের সদস্য ছিলেন। তাঁকে এবারও রেখে দেওয়া হতে পারে। শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার এবং স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানার নামও এবার আলোচনায় রয়েছে।

বিনোদনজগৎ, লেখক ও শিল্পীদের মধ্যে থেকে অন্তত দুজনকে স্থান দেওয়া হতে পারে। এ ক্ষেত্রে শমী কায়সার, তারিন জাহান, নুসরাত ইমরোজ তিশা ও লাকী ইনামসহ কয়েকজনের নাম আলোচনায় আছে আওয়ামী লীগে।

কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্যদের মধ্যে মারুফা আক্তার পপি মনোনয়ন চেয়ে পাননি। আরও আছেন আখতার জাহান, পারভীন জামান, তারানা হালিম, মেরিনা জাহান, সফুরা বেগম, সানজিদা খানম ও হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া। এর মধ্যে তিনজন গত সংসদে সদস্য ছিলেন। তাঁদের মধ্যে সানজিদা খানম দলের মনোনয়ন পেয়ে ঢাকা-৪ আসন থেকে হেরে গেছেন। তাঁকে আর সুযোগ দেওয়া না–ও হতে পারে। অধ্যাপক মেরিনা জাহান গত সংসদে সদস্য থাকলেও তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দলের প্রতিনিধি হয়ে সফর করেছেন। তিনি এবারও থাকতে পারেন বলে দলে আলোচনা রয়েছে। এ ছাড়া দলের নির্বাহী সদস্য থেকেও চার-পাঁচজনকে সংরক্ষিত সংসদ সদস্য করার সম্ভাবনা আছে বলে আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে।

১৪ দলের শরিকদের মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ও জাতীয় পার্টি (জেপি)—এই তিন দল সমঝোতার মাধ্যমে ছয়টি আসন ভাগে পেয়ে মাত্র দুজন জয়ী হয়েছেন। শরিকেরা নিজেদের দুই আসন দিয়ে সংরক্ষিত আসন ভাগে পাবে না। শরিকদের মধ্য থেকে তিন-চারজনকে আওয়ামী লীগের কোটায় সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য করা হতে পারে।

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া একবার টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রী হলেও তিনি কখনো সংসদ সদস্য হতে পারেননি। এমনকি তাঁকে আসন সমঝোতার মাধ্যমে ছাড়ও দেয়নি আওয়ামী লীগ। এবার তাঁর স্ত্রীকে সংরক্ষিত সংসদ সদস্য করার সম্ভাবনা রয়েছে।

জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুর স্ত্রী আফরোজা হক গত সংসদের শেষ দিকে সদস্য হয়েছিলেন। এবার হাসানুল হক ইনু নিজে ভোটে হেরে গেছেন। আবার দলের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এবার সমঝোতার আসন ভাগে পাননি। তাঁকেও আওয়ামী লীগ থেকে সংরক্ষিত আসনে সদস্য করার আশ্বাস ছিল। আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র বলছে, এই দুজন বা তাঁদের মধ্য থেকে একজনকে সদস্য করা হতে পারে।

জেপির আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ভোটে হেরে গেছেন। তাঁর স্ত্রী বা পরিবারের কাউকে সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য করার বিষয়টিও আলোচনায় রয়েছে। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন জয়ী হয়েছেন। তাঁর স্ত্রী লুৎফুন নেসা খান গত সংসদে সংরক্ষিত সদস্য ছিলেন। এবার তাঁকে করা হবে নাকি অন্য কাউকে সুযোগ দেওয়া হবে—এটি এখনো স্পষ্ট নয়।

বিএনএ/ ওজি/এইচমুন্নী

Loading


শিরোনাম বিএনএ