27 C
আবহাওয়া
৩:১৮ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২২, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তরাই পাচারের শিকার: গবেষণা

প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তরাই পাচারের শিকার: গবেষণা

পাচার

বিএনএ ডেস্ক: জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাংলাদেশসহ বিশ্বের নানা দেশের মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে চরম দরিদ্র হয়ে পড়ছে। পাচারকারীরা সহজেই তাদের প্রলুব্ধ করার সুযোগ পেয়ে বাস্তুচ্যুত এসব মানুষকে ফাঁদে ফেলছে। জাতিসংঘের মাদক এবং অপরাধবিষয়ক সংস্থার (ইউএনওডিসি) ২০২২ সালের মানব পাচারবিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে এই মন্তব্য উঠে এসেছে।

বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি হোটেলে এ প্রতিবেদনের বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার আয়োজন করে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)। এর আগে গত মঙ্গলবার বৈশ্বিক ওই প্রতিবেদনটি ভিয়েনা থেকে প্রকাশ করা হয়।

বার্ষিক প্রতিবেদনে জলবায়ু পরিবর্তনকে মানব পাচারের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনে মানব পাচার বেড়ে যাওয়ার পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগকে অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন ছাড়াও কোভিড-১৯-এর পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট মন্দায় হতদরিদ্ররা মানব পাচারের ঝুঁকিতে আছেন বলে এতে বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে এবং দেশের বাইরে নারী ও মেয়েশিশুরা পাচার ও যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। পাচার ও নিপীড়নের শিকার এসব নারী ও শিশুদের মধ্যে ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁদে পড়ার সংখ্যা বাড়ছে। এসব মানব পাচারকারীরা শুধু যৌনকর্মী নয়, মানব দেহের অঙ্গ পাচারেও যুক্ত।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আগের বছরের তুলনায় ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী মানব পাচার অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্তের সংখ্যা ২৭ শতাংশ কমেছে। যেটি দক্ষিণ এশিয়ায় কমেছে ৫৬ শতাংশ। এ ছাড়া, নিম্ন ও মাঝারি আয়ের দেশগুলোতে কম শনাক্তকরণের কারণে আগের বছরের তুলনায় ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী মানব পাচার অপরাধ শনাক্তের হার ১১ শতাংশ কমেছে।

প্রতিবেদনটিতে ১৪১টি দেশের মানব পাচারবিষয়ক তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে শনাক্ত করা পাচার মামলার ওপর ভিত্তি করে বিশ্বব্যাপী আঞ্চলিক ও জাতীয় স্তরে মানব পাচারের নিদর্শন এবং প্রবাহের একটি প্রতিবেদন প্রদান করা হয়েছে। প্রতিবেদনে মানব পাচার বিষয়ক ৮০০ মামলার সারাংশ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তবে এ প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা পাচারের বিষয়ে কোনো উল্লেখ নেই।

প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘মানব পাচার একটি আন্তসীমান্ত সমস্যা। তাই এ ধরনের জটিল সংকট সমাধানের জন্য সমন্বিত উদ্যোগের বিকল্প নেই। বিশেষ করে সংঘবদ্ধ অপরাধীরা তাদের অপরাধের ধারায় পরিবর্তন এনেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে মানব পাচারকারীরা লোকজনকে প্রলোভনে ফেলে ফাঁদে জড়িয়ে ফেলছে। তাই মানব পাচার প্রতিহত করতে হলে আইন, বিধিসহ নানা ধরনের প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে কৌশলগত পরিবর্তন আনার কোনো বিকল্প নেই।’

ইউএনওডিসির দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক প্রতিনিধি মার্কো টেক্সেরিয়া বলেন, ‘অনলাইনে মানব পাচারের নিয়োগ এবং সাইবার ক্রাইমের মাধ্যমে মানব পাচারের মতো বিষয়গুলো উঠে এসেছে প্রতিবেদনটিতে। তবে সফলভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা মানব পাচারকারীদের শনাক্ত, তদন্ত এবং বিচার করতে পারি।’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খায়রুল আলম শেখের সভাপতিত্বে আলোচনায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস, বাংলাদেশে আইওএমের প্রধান আবদুস সাত্তার ইসভ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মিজানুর রহমান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (জাতিসংঘ অনু বিভাগ) তৌফিক ইসলাম শাতিল, ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন দূতাবাসের উন্নয়ন সহযোগিতা বিভাগের প্রধান মরিজিও সিয়ান, কানাডা হাইকমিশনের রাজনৈতিক কাউন্সেলর ব্র্যাডলি কোটস, ইউএনওডিসি সদর দপ্তরের কর্মকর্তা এইমি কোমরিয়ে এবং এডুরিস মারকুয়েজ ও ইউএনওডিসি বাংলাদেশের জাতীয় কর্মসূচি সমন্বয়কারী মেহেদি হাসান।

বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ