বিএনএ ঢাকা: রোহিঙ্গারা পর্যায়ক্রমে জঙ্গিবাদী তৎপরতার সঙ্গে জড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। সরকারে সবরকম তৎপরতার পরেও রোহিঙ্গারা ক্রমশ নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে বলেও জানান তিনি।
শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) জাতীয় শিল্পকলা একাডেমিতে মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলার ১৩ বছর উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
সে সময় তিনি আরও বলেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা নিজেদের মধ্যে সংঘাতে জড়িতে পড়ছে। দ্রুত তাদের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। এ বিষয়ে ভারতসহ বিশ্ব নেতাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
আসাদুজ্জামাস খান কামাল বলেন, রোহিঙ্গারা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বেড়াজালের মধ্যেই আছে। এরপরও তারা নিজেরা ক্যাম্পের ভেতরেই বিশৃঙ্খলা করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্ষমতা আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে যেকোনো ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা প্রতিরোধ করা সম্ভব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গোয়েন্দা জালকে ফাঁকি দিয়ে জঙ্গিরা কোনো রকম তৎপরতা চালানোর ক্ষমতা রাখে না বলে আশ্বস্ত করেন মন্ত্রী।
দেশের বাইরে থেকে কেউ জঙ্গি তৎপরতা উসকে দেয়ার চেষ্টা করছে কিনা সে বিষয়ে সরকার সর্তক দৃষ্টি রাখছে বলে জানান তিনি।
দেশে সন্ত্রাস, জঙ্গি ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি গ্রহণ করার কথা তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নিরাপত্তা বাহিনী যে কোনো ধরনের সহিংসতা মোকাবেলার জন্য তৈরি আছে। সেজন্য তারা বড় রকমের আক্রমণ আগে থেকে ডিটেক্ট করতে পারে। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে দেশের জনগণও ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতার পেছনে পাকিস্তানের ভূমিকার প্রসঙ্গ তুলে ধরে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, দেশটি সবসময় তাদের ইন্টেলিজেন্সির মাধ্যমে বাংলাদেশকে নানানভাবে বিব্রত করার চেষ্টা করছে। সরকার সবসময় তাদের গতিবিধির ওপর খেয়াল রাখছে।
জঙ্গিবাদ দমনে ভারতের কাছ থেকে সহযোগিতা পাওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বন্ধুপ্রতীম দেশ ভারতের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার করে থাকে বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, মুম্বাই হামলার ঘটনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ থেকে তারা অনুপ্রেরণা পেয়েছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে এই হামলার অনেক মিল রয়েছে। এ ধরনের সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় বাংলাদেশ-ভারত একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন- মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী দক্ষিণ এশীয় গণসম্মিলনের সভাপতি বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহ-সভাপতি শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও ভাষাসৈনিক ধীরন্দ্রনাথ দত্তের পৌত্রী সমাজকর্মী আরমা দত্ত, নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মো. আবদুর রশীদসহ অনেকে।
২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বরে মুম্বাইয়ের একাধিক স্থানে হামলা চালিয়েছিল লস্কর-ই-তৈয়বার জঙ্গিরা। সেই হামলায় ১৬৬ জন নিহত এবং ৩শ মানুষ আহত হন।
বিএনএনিউজ/আরকেসি