20 C
আবহাওয়া
১০:১৫ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ২৪, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ১ কোটি টাকার গাড়িতে পরিশোধ করতে হবে ৯ কোটি !

১ কোটি টাকার গাড়িতে পরিশোধ করতে হবে ৯ কোটি !


ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন গণঅভ্যুত্থানের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার একদিন পর, ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন সংসদ ভেঙে দিলে, সংসদ সদস্যরা সংসদে তাদের সদস্যপদ এবং করমুক্ত গাড়ির সুযোগ-সুবিধাও হারান।

এই অবস্থায় সংসদ সদস্য কোটায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা তিনটি বিলাসবহুল প্রাডো গাড়ি আটকে দিয়েছে মংলা কাস্টমসের শুল্ক বিভাগ। যারা গাড়িগুলো আমদানি করেছিলেন তারা আর সংসদ সদস্য না থাকায় এগুলো আটকে দেওয়া হয়েছে। তবে ‘বিল অব এন্ট্রি’ দাখিল না হলে এই তিনটি গাড়ি শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে না। স্বাভাবিক হারে শুল্ককর পরিশোধ করেই এসব গাড়ি খালাস করতে হবে।

একেকটি প্রাডো গাড়ি আমদানি করা হয়েছিল ৯৯ লাখ টাকায়। শুল্ক দিতে গেলে একটি গাড়িরই দাম পড়বে ৯ কোটি টাকা।’ ফলে এই গাড়ি নিয়ে মহা বিপাকে পড়েছে তিন সাবেক সংসদ সদস্য। তারা গাড়ি ছাড় না করলে তা নির্ধারিত সময়ের পর নিলামে উঠবে। তা ছাড়া ৫ আগষ্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে গাড়ি আমদানি কারক সাবেক সংসদ সদস্যরাও পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ‘কারুজেন্ট অটো’ মংলা বন্দর দিয়ে সংসদ সদস্য কোটায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি তিনটি আমদানি করে। আমদানি হওয়া ২০২৩ মডেলের পার্ল হোয়াইট বিলাসবহুল প্রাডো ব্রান্ডের এ তিনটি গাড়ি আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্যদের। এরা হচ্ছেন দিনাজপুর-১ আসনের মুহাম্মদ জাকারিয়া, টাঙ্গাইল-৮ আসনের অনুপম শাহজাহান জয় এবং সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নাসিমা জামান ববি। তবে রবিবার পর্যন্ত এই তিনটি গাড়ি ছাড়িয়ে নিতে কেউ ‘বিল অব এন্ট্রি’ করতে আসেনি। তাই গাড়ি তিনটি ‘বি এল লক’ বা আটকে দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে নির্বাচিত ৩০০ জন এবং পরবর্তীতে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনীত ৫০ জনসহ জাতীয় সংসদের সদস্য সংখ্যা ৩৫০ জন। এর মধ্যে সংসদ সদস্য কোটায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় গত ৬ মাসে ৪৪টি গাড়ি আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে মংলা বন্দর দিয়ে আমদানি হয় তিনটি। বাকি গাড়িগুলো চট্টগ্রাম ও কমলাপুর আইসিডি দিয়ে আমদানি করা হয়েছে। আমদানি করা এসব গাড়ির বেশির ভাগই জাপান ও সিঙ্গাপুর থেকে আনা হয়েছে।’ টয়োটা ল্যান্ডক্রুজার, টয়োটা জিপ, প্রাডো, টয়োটা এলসি স্টেশন ওয়াগনের এসব গাড়িগুলোর ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি ৩০০০-৪০০০ সিসির ।

সংসদ সদস্যরা প্রতি পাঁচ বছরে একবার শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি করতে পারেন। এ ধরনের গাড়ির ওপর কর ৮১০ শতাংশ পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে সংসদ সদস্যদের তা দিতে হয় না।

এরই মধ্যে চট্টগ্রাম, মংলা বন্দর ও কমলাপুর আইসিডি থেকে সাতটি গাড়ি ছাড়া হয়েছে। কিন্তু গাড়ি গুলো এখনও বাংলাদেশ সড়ক ও পরিবহন কর্তৃপক্ষের কাছে নিবন্ধন করা হয়নি। এই ৭ সংসদ সদস্যের মধ্যে ৬ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হচ্ছে ক্রিকেটার ও মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের ফয়জুর রহমান, লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের গোলাম ফারুক পিংকু, নাটোর-১ আসনের আবুল কালাম, কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের মুজিবুর রহমান মঞ্জু এবং সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি জান্নাত আরা হেনরি।

মংলা কাস্টমস হাউসের কমিশনার মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘যেসব গাড়ি ৬ আগস্টের পরে আমদানি হয়েছে তা খালাসের সুযোগ নেই। এ ধরনের গাড়ি খালাস করতে হলে শুল্ককর পরিশোধ সাপেক্ষে খালাস করতে হবে। এ ছাড়া সংসদীয় আসনে এমপিদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এ সুবিধা দেওয়া হয়। বর্তমানে সংসদ ভেঙে দেওয়ায় তা শুল্কমুক্ত সুবিধায় খালাসের সুযোগ নেই। আইন অনুযায়ী, স্বাভাবিক হারে শুল্ককর পরিশোধ করেই খালাসের অপেক্ষায় থাকা গাড়ি ছাড়িয়ে নিতে হবে।

বিএনএনিউজ শামীমা চৌধুরী শাম্মী/এইচমুন্নী

Loading


শিরোনাম বিএনএ