বিএনএ, চট্টগ্রাম : করোনার ছোবল দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে গ্রামে। মৃত্যুর মিছিলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় উপজেলায় মৃত্যুবরণ করেছে ৮ জন। আক্রান্ত হয়েছে ২৬৮ জন। রোববার উপজেলায় মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের এবং আক্রান্ত হয়েছে ৩৩২ জন। শনিবার ৩ জনের মৃত্যুর সঙ্গে আক্রান্ত হয়েছে ৪৩ জন।
অধিকাংশ গ্রামে সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত রোগী বেড়েছে। সঙ্গে অনেকের গলায় ব্যাথা রয়েছে। কিন্তু অতীতের মতো এসব রোগ এমনিতে ভাল হয়ে যাবে-এমন ধারণা রয়েছে গ্রামের মানুষের মধ্যে। এছাড়া সামাজিক বিড়ম্বনার ভয়সহ নানা কারণে উপসর্গ থাকার পরও অনেকে করোনা পরীক্ষা করতে চান না। শহরের তুলনায় গ্রামের মানুষের মধ্যে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও মাস্ক ব্যবহারে উদাসীনতার প্রবণতা দীর্ঘদিনের।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছে, সংক্রমণ শুরুর পর লকডাউন দেওয়ায় কয়েক দফায় মানুষ দলে দলে গ্রামে ফিরেছেন। মহামারির মধ্যে ঈদকে কেন্দ্র করে মানুষের বাড়ি যাওয়া উৎসবে পরিণত হয়েছে। তারা করোনাভাইরাস শরীরে বহন করে নিয়ে গেছেন গ্রামে। সেখানে স্বাস্থবিধি না মেনে হাট-বাজার, আত্মীয়ের বাড়িতে ঘুরেছেন অবাধে। এসব স্থানে হাঁচি-কাশি, কথা বলার মাধ্যমে সুপ্ত ভাইরাসটি রেখে এসেছেন।
ফলে প্রতিনিয়ত গ্রামে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। এ পর্যন্ত চট্টগ্রামের ১৪ উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ১৮ হাজার ৭৩৭ জন। এই ভাইরাসে মারা গেছেন ৩৫০ জন। যার মধ্যে সাতকানিয়ায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৫৯২ জন এবং মারা গেছেন ২০ জন। সীতাকুণ্ডে আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৯২১ জন এবং মারা গেছেন ৪৭ জন। বোয়ালখালীতে আক্রান্ত হয়েছে ১০৭৬ জন এবং মারা গেছেন ২৭ জন।
পটিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে ১৩৬৫ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ২৩ জন। আনোয়ারায় আক্রান্ত হয়েছে ৮৫৮ জন এবং মারা গেছেন ১০ জন। চন্দনাইশে আক্রান্ত হয়েছে ৬৯৫ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ১০ জন। ফটিকছড়িতে ১৯৫৪ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছেন ২৬ জন। মিরসরাইয়ে আক্রান্ত হয়েছে ১২২৮ জন এবং মারা গেছেন ৩০ জন।
হাটহাজারীতে আক্রান্ত হয়েছে ৩৭৭৭ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ৭৬ জন। লোহাগাড়ায় আক্রান্ত হয়েছে ৪৭৯ জন এবং মৃত্যুবরণ করেন ১০ জন। সন্দ্বীপে আক্রান্ত হয়েছে ৪০২ জন এবং মারা গেছেন ৮ জন। রাঙ্গুনিয়ায় ১১০৬ জন আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যুবরণ করেছে ১৮ জন। বাঁশখালীতে আক্রান্ত হয়েছে ৭৯১ জন। মারা গেছেন ১১ জন। রাউজানে ২২১০ আক্রান্তের সঙ্গে মারা গেছেন ২৬ জন।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, গ্রামের মানুষের মধ্যে সচেতনার অভাব রয়েছে। তারা স্বাস্থবিধি মানেন না। শারীরিক দুরত্ব না মেনে মাস্ক না পরে হাটে-বাজারে ঘুরে বেড়ান। সর্দি, কাশি ও জ্বর হলে তারা স্বাভাবিক ভাইরাস মনে করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ করেন না। তাদের উদাসীনতার ফলে গ্রামে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ।
বিএনএনিউজ২৪/আমিন