বিএনএ, ঢাকা: করোনা টিকার দাম দিয়ে সরকারের খরচের হিসাব কষলে তা সঠিক হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
টিকা সংরক্ষণ, পরিবহন, স্থান, সিরিঞ্জ, স্বাস্থ্যকর্মীর ভাতা, তাদের সুরক্ষার পেছনে ব্যয় যোগ করার পর সঠিক হিসাবটা পাওয়া যাবে।
মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে ৩২ হাজার ৯০৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে দুই শতক জমিসহ ঘর প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
করোনার টিকা কেনা ও তা প্রয়োগের ক্ষেত্রে সরকার যে হিসাব দিয়েছে, প্রকৃত খরচ তার চেয়ে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা কম বলে দাবি করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সরকার যে হিসাব দিয়েছে, তাতে ক্রয়, সংরক্ষণ, বিতরণ ও প্রয়োগ মিলিয়ে প্রতি টিকায় খরচ দাঁড়ায় ১ হাজার ৩৩৫ টাকার কিছু বেশি। অন্যদিকে টিআইবি যে দাবি করেছে, তাতে খরচ হয় ৬০০ টাকার কিছু বেশি।
সেই প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখানে টিকাদানের ক্ষেত্রে কেউ যদি শুধু ওই একটা ভ্যাকসিনের দাম কত, সেই হিসাব ধরে, সেই হিসাব ধরলে কিন্তু হবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা ভ্যাকসিন দিতে গেলে আমাদের যে লোকবল লেগেছে, স্থান লেগেছে, ভ্যাকসিনটা নিয়ে এসে, যেটা আমাদের ফ্রিজারে রাখতে হয়েছে, সেই ডিপ ফ্রিজ কোনোটা হয়তো মাইনাস ২৫, কোনোটা মাইনাস ৭০ পর্যন্ত, সেগুলোও আমাদের সংগ্রহ করতে হয়েছে।’
সরকার প্রধান বলেন, টিকা গুলো একেবারে গ্রাম পর্যায়ে দিচ্ছি, ইউনিয়ন পর্যায়েও। সেখানেও কিন্তু এয়ার কন্ডিশনার ঘর তৈরি করতে হয়েছে। তারও একটা খরচ আছে।
শেখ হাসিনা বলেন ‘আমাদের ভলান্টিয়ার যারা, স্বাস্থ্যকর্মী যারা, যারা ঘরে ঘরে গিয়ে টেস্ট করে যাচ্ছে, এই টেস্ট করতেও কিন্তু পয়সা খরচ হয়। যারা করছে, ডাক্তার এবং আমাদের হেলথ প্রোভাইডার, স্বাস্থ্যকর্মী, তাদের প্রতিদিনের থাকা-খাওয়া, ভাতা এমনকি তাদের সুরক্ষার জন্যও যে পোশাক, যেটাকে পিপিই বলে, সেগুলো যে দিতে হয়েছে, তার পেছনেও কিন্তু খরচ আছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইনজেকশন দিতে গেলে যে সিরিঞ্জ আছে, তার পেছনেও খরচ আছে। এসব খরচ যদি এক করে দেখেন, তাহলে হয়তো সঠিক তথ্যটা পাবেন, কত হাজার কোটি টাকা এর পেছনে খরচ হয়েছে। আমরা কিন্তু সব বিনা পয়সায় করে দিয়েছি এ দেশের মানুষের জন্য।’
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় অনেক উন্নত দেশ যা পারেনি, বাংলাদেশ তা করে দেখিয়েছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো একটা দেশে, যেখানে সম্পদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। তার পরও অনেক ধনী দেশ যেটা করতে পারেনি, আমরা সেই টিকাদান কর্মসূচি সম্পূর্ণ বিনা পয়সায় করেছি।
করোনাভাইরাস অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও আবারও প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে বলে দেশবাসীকে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সবাই সতর্ক থাকার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন তিনি।
বিএনএ/ এ আর