বিশ্ব ডেস্ক: অবশেষে গাজা উপত্যকায় জরুরিভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাশ হলো জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে (ইউএনএসসি)। সোমবার(২৫ মার্চ )পাশ হওয়া এ প্রস্তাবটিতে গাজায় যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের নিকট থাকা জিম্মিদের দ্রুত ও নিঃশর্ত মুক্তির ব্যাপারটিরও উল্লেখ রয়েছে। খবর আল-জাজিরা অনলাইন।
পরিষদের বৈঠকে ভোটের জন্য তোলার পর মোট ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৪ দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। যুক্তরাষ্ট্র ভোটদানে বিরত ছিল। এই প্রথম প্রস্তাবটির বিপক্ষে কোনো অবস্থান নেয়নি দেশটি।
ভোটের পর পরিষদের কক্ষে এক দফা করতালি হয়।
প্রস্তাবের রেজোলিউশনে মুসলমানদের পবিত্র রমজানের জন্য অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়েছে, যা দুই সপ্তাহের মধ্যে শেষ হবে এবং এছাড়াও দাবি করা হয়েছে যে হামাস জিন্মি ইসরায়েলীদের মুক্ত করে দেবে।
আরব ব্লকের বর্তমান নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য এবং রেজুলেশনের পৃষ্ঠপোষক আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত অমর বেন্দজামা বলেছেন, “রক্তস্নান অনেক দিন ধরে অব্যাহত রয়েছে।” “অবশেষে, নিরাপত্তা পরিষদ তার দায়িত্ব পালন করছে।”
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বারবার নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবগুলিকে অবরুদ্ধ করেছিল যা ইসরায়েলের উপর চাপ সৃষ্টি করে কিন্তু বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এবং জাতিসংঘ গাজায় আসন্ন দুর্ভিক্ষ সম্পর্কে সতর্ক করে বলে তার মিত্রদের প্রতি ক্রমবর্ধমান হতাশা দেখিয়েছে।
ভোটের পর মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব পাস করতে বিলম্বের জন্য হামাসকে দায়ী করেন। তিনি বলেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিরত থাকার কারণ ছিল “আমরা রেজোলিউশনের সবকিছুর সাথে একমত হইনি,” ।
থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেন, “হামাসের নিন্দা যোগ করার জন্য আমাদের অনুরোধ সহ কিছু মূল সম্পাদনা উপেক্ষা করা হয়েছে।” তিনি জোর দেন যে ইসরায়েলি বন্দীদের মুক্তির ফলে অবরুদ্ধ উপকূলীয় ছিটমহলে মানবিক সহায়তা সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে।
প্রস্তাব পাশের পর জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে গাজায় জরুরিভিত্তিতে যুদ্ধবিরতি এবং সব জিম্মির নিঃশর্ত মুক্তির প্রস্তাব পাস হলো। প্রস্তাবটি যত শিগগির সম্ভব বাস্তবায়ন করতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো প্রকার ব্যত্যয় হলে তা হবে ক্ষমার অযোগ্য।
নভেম্বরের যুদ্ধ বিরতি
গত নভেম্বরের শেষ দিকে অবশ্য তিন মধ্যস্থতাকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসরের তৎপরতায় ৭ দিনের অস্থায়ী যুদ্ধ বিরতিতে সম্মত হয়েছিল হামাস এবং ইসরাইল। সেই বিরতির সময় মোট ১০৮ জন জিম্মিকে ছেড়ে দিয়েছিল হামাস, বিপরীতে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ১৫০ জনকে ছেড়ে দিয়েছিল ইসরাইল।
গাজার প্রশাসক হামাসের নিকট এখনও জিম্মি অবস্থায় রয়েছে ১৩২ জন ইসরায়েলি। অন্যদিকে ত্রাণ ও খাদ্যের অভাবে মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়েছে গাজায়। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই নিরাপত্তা পরিষদে পাস হলো গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব।
এসজিএন