বিশ্ব ডেস্ক: ইসরায়েলি সরকার প্রভাবশালী পত্রিকা হারেৎস-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। রোববার(২৪ নভেম্বর) এক সিদ্ধান্তে, সব সরকারি তহবিলপুষ্ট সংস্থাকে পত্রিকাটির সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করা এবং তাদের কোনো বিজ্ঞাপন না দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হারেৎসে এমন কিছু বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে, যা ইসরায়েল রাষ্ট্রের বৈধতা এবং আত্মরক্ষার অধিকারের পরিপন্থী। বিশেষ করে পত্রিকার প্রকাশক অ্যামোস স্ককেনের সাম্প্রতিক মন্তব্য—যা লন্ডনে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে করা হয়েছিল—এরপরই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। স্ককেন ইসরায়েলি সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করার প্রস্তাব দেন বলে অভিযোগ।
নিষেধাজ্ঞার পটভূমি
রোববার ইসরায়েলি মন্ত্রিসভায় এ নিষেধাজ্ঞা চূড়ান্ত অনুমোদন পান। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরাসরি সমর্থনে প্রস্তাবটি পাস হয়। এর আগে, চলতি মাসের শুরুতে স্ককেনের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ইসরায়েল সরকার তাকে তীব্র সমালোচনা করে।
হারেৎসের প্রতিক্রিয়া
সরকারি এ সিদ্ধান্তের পর হারেৎস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘আইনগত পর্যালোচনা ছাড়াই অনুমোদিত এ সিদ্ধান্ত ইসরায়েলি গণতন্ত্রকে ধ্বংসের পথে এগিয়ে নিচ্ছে। নেতানিয়াহু সরকার ভ্লাদিমির পুতিন, রজব এরদোগান এবং ভিক্টর অরবানের মতো নেতাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে সমালোচনা এবং স্বাধীন গণমাধ্যমকে দমন করার চেষ্টা করছে।’
পত্রিকাটি আরও জানায়, ‘হারেৎস কখনো থামবে না এবং সরকারের অনুমোদিত বার্তা প্রচার করে সরকারি পত্রিকা হয়ে যাবে না।’
সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক
সরকারি আইন বিভাগের অ্যাটর্নি জেনারেল দপ্তর জানিয়েছে, তারা এ প্রস্তাব সম্পর্কে অবহিত ছিল না এবং এর বৈধতা নিয়ে কোনো মতামত দেয়নি।
বিতর্কিত বক্তব্য
১ নভেম্বর লন্ডনের এক সম্মেলনে স্ককেন অভিযোগ করেন, ‘নেতানিয়াহু সরকার ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর নিষ্ঠুর এবং বর্ণবাদী শাসন আরোপ করছে।’ তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলি সরকার বসতি স্থাপনের মাধ্যমে সংঘাত উসকে দিচ্ছে এবং ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে যুদ্ধ করে চলেছে।
পরে ব্যাখ্যায় স্ককেন জানান, তিনি হামাসকে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ মনে করেন না। তবে সন্ত্রাসবাদ ছাড়া যারা লড়াই করছেন, তাদের প্রতি তার সমর্থন রয়েছে।
সূত্র: হারেৎস পত্রিকা, মিডল ইস্ট আই