বিএনএ, চট্টগ্রাম : তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি বিভিন্ন দূতাবাসে রাত বিরাতে ধর্ণা দেই। তারা যত না জনগণের কাছে যাচ্ছে, তার চেয়ে বেশিরভাগ রাতের বেলা দূতাবাসে গিয়ে ধর্ণা দেই। ধর্ণা দিয়ে তাদের হাতে পায়ে ধরে বিএনপি। হাতে পায়ে ধরে বলেন, আপনারা কিছু বলুন। সেই কারণে কেউ কেউ কোন কোন সময় বক্তব্য দেন। এই মন্তব্য করার জন্য বিএনপিই তাদের উৎসাহিত করেন।
শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আগামী ৪ঠা ডিসেম্বর চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এবং চট্টগ্রামের সংসদ সদস্যদের সমন্বয় সমন্বয় সভায় বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমন্বয় সভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন এমপি।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রথমত বিভিন্ন রাষ্ট্রদুতদের আমাদের আভ্যন্তরীন বিষয়ে বক্তব্য রাখার সময় অবশ্যই কুটনৈতিক শিষ্টাচার মেনে চলা উচিৎ। আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাষ্ট্রদুতকে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে। এরপরও যখন বিএনপিসহ তাদের দোসররা তাদের কাছে গিয়ে ধর্না দেয়, সেই কারণে কেউ কেউ কোন কোন সময় বক্তব্য দেন। এই মন্তব্য করার জন্য বিএনপিই তাদের উৎসাহিত করেন।
তিনি বলেন, কোন বিদেশি কি বলল, কে কি করল তা নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। যারা বিদেশী শক্তির পদলেহন করে তারা এরকম বক্তব্য রাখতে পারেন। আমির খসরু সাহেবরা বিদেশীদের পদলেহন করেতো, সেজন্য বিদেশীরা কি বলল, না বলল সেটা নিয়ে তাদের এত মাথাব্যথা।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, বিএনপি সারাদেশে নানাধরণের সমাবেশ করছে। এই সমাবেশ করতে গিয়ে তারা চাঁদাবাজি করছে। চট্টগ্রামের সমাবেশের জন্য তারা ব্যাপক চাঁদাবাজি করেছে। চট্টগ্রামের বহু ব্যবসায়ি আমাদের কাছে অভিযোগ করে বলেছে তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বিএনপি চাঁদা আদায় করেছে। আবার জনসভার নামে তারা বিভিন্ন জায়গায় পিকনিকের মত আয়োজন করছে।
তিনি বলেন, আগামীকাল শনিবার তাদের কুমিল্লায় জনসভা । সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা সাক্কু বলেছেন তার পরিবারের ৭৬টি ফ্ল্যাট নেতাকর্মীদের থাকার জন্য দিয়েছেন। প্রথমত ৭৬টি ফ্ল্যাট কিভাবে আসল সেটা একটা বড় প্রশ্ন। বিভিন্ন জায়গা থেকে নেতাকর্মীদের এনে সেখানে তারা পিকনিকের আয়োজন করছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন শুক্রবার যশোরে আওয়ামী লীগের জনসভা জনসমুদ্রে রূপান্তরিত হয়েছে। স্টেডিয়াম ছাড়িয়ে জনসভা বহুদূর পর্যন্ত জনস্রোত ছিল। চট্টগ্রামের জনসভাও পলোগ্রাউন্ড ছাড়িয়ে বহু বিস্তৃত হবে। পলোগ্রা্উন্ডে যত মানুষ হবে তারচে বহুগুণ বেশি মানুষ হবে পলোগ্রাউন্ডের বাইরে। লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাবেশ ঘটবে। সেই জনসভাকে সফল করার উদ্দেশ্যেই আজকে আমরা এখানে বসেছি।
সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী, সংসদ সদস্য এম এ লতিফ, মোস্তাফিজুর রহমান, মাহফুজুর রহমান মিতা, দিদারুল আলম, খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারন সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, দক্ষিণ জেলার সাধারন সম্পাদক মফিজুর রহমান প্রমুখ।
এর আগে শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শাহ আলম বীর উত্তম মিলনায়তনে চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। বহির্বিভাগে সেবাদানের মধ্যে দিয়ে চালু হচ্ছে হৃদরোগের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম।
চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশনের সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস এর সভাপতিত্বে ও হার্ট ফাউন্ডেশনের সদস্য এস এম আবু তৈয়বের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান নওফেল, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ও চমেক অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আকতার। চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশনের বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন ফাউন্ডেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. প্রবীর কুমার দাশ।
বিএনএ/ ওজি