বিএনএ ডেস্ক: মিয়ানমার থেকে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ভাসমান জীবনে শরণার্থী হিসেবে আজ রবিবার সপ্তম বছর পূর্ণ হচ্ছে। ২০১৭ সালের এই দিনে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য ছেড়ে রোহিঙ্গার স্রোত বাংলাদেশে পাড়ি জমায়। ওই সময় রাখাইন রাজ্যের সেনা চৌকিতে বিচ্ছিন্ন হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সে দেশের সশস্ত্র বাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর নির্মম নির্যাতন শুরু করে। রোহিঙ্গা নিধনের লক্ষ্যে মিয়ানমার বাহিনী গণহত্যা শুরু করে রাখাইন জুড়ে।
রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ ও বাড়িঘর পুড়িয়ে ফেলার কারণে পুরো রাজ্যে সৃষ্টি হয় আতঙ্ক। এতে প্রাণ বাঁচাতে ঝুঁকি নিয়ে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গারা। পালিয়ে আসা এসব রোহিঙ্গার ঠাঁই হয় কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের পাহাড়ের ৩১টি ক্যাম্পে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ কমিশনার সামসুদ্দৌজা নয়ন জানান, পরবর্তী সময়ে এসব ক্যাম্প থেকে এ যাবৎ প্রায় ৩৫ হাজার রোহিঙ্গার স্থান হয় নোয়াখালীর ভাসানচরে।
বাংলাদেশের ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা প্রতিবারের মতো আজ দিবসটিকে ‘জেনোসাইড ডে’ হিসেবে পালন করছে। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩১টি ক্যাম্পের মধ্যে চারটি ক্যাম্পে রোহিঙ্গারা সমবেত হয়ে জেনোসাইড দিবসটি উদযাপন করবে। তন্মধ্যে উখিয়ার কুতুপালং-৪, বালুখালীর ১১ ও ১৩ এবং টেকনাফের ২৬ নম্বর ক্যাম্পে রোহিঙ্গারা সমবেত হবে।
এসব কর্মসূচি আয়োজকদের পক্ষে কুতুপালং ৪ নম্বর ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা মৌলভী সৈয়দুল্লাহ জানান, তাঁদের এবারের দাবির পক্ষে স্লোগান হবে- ‘নো মোর রিফিউজি লাইফ, গো হোম এবং ইউএন সেভ জোন ইন মিয়ানমার।’রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে প্রতিনিয়ত আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। গুম, খুন, ডাকাতি, অপহরণ ক্যাম্পগুলোর নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ২০১৭ সালের শেষদিকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়ে ওই বছর সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করে মিয়ানমার। এরপর ২০১৯ সালে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে দুই দফা উদ্যোগ নিয়ে রোহিঙ্গাদের আপত্তির মুখে ব্যাহত হয় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ/ হাসনা